বাঘায় ছয় মাসে ৮ চুুরির ঘটনা

প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৩; সময়: ৮:৪০ অপরাহ্ণ |
বাঘায় ছয় মাসে ৮ চুুরির ঘটনা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাঘা : রাজশাহীর বাঘায় শোরুমের তালা ভেঙে নগদ টাকাসহ মোবাইল চুরির দুইদিন পর বাঘা বাজার এলাকা থেকে মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে ৬মাসে ৮টি চুরির ঘটনা ঘটলো। এসব ঘটনায় জিডি হলেও মামলা হয়নি।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার (০১ জুন) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে উপজেলা সদরে বাঘা বাজার এলাকা থেকে ডিসকভার-১০০ সিসির ১টি মোটর সাইকেল (রাজশাহী হ-১২-২৭২২) চুরি হয়ে যায়। মোটর সাইকেল মালিক চারঘাটের মুনহারপুর গ্রামের মেরাজুল ইসলাম বাজার সংলগ্ন হায়াত আলী মার্কেটের আব্দুল আজিজ রেডিমেন্ট গার্মেন্টেসের প্রবেশ পথের গলিতে রেখে মাংস কিনতে যান। আধা ঘণ্টা পর এসে তার মোটরসাইকেলটি সেখানে পাননি। তিনি জানান, মোটরসাইকেলের তালা লক করে রেখে গিয়েছিলেন। পরে মোটরসাইকেলের খোঁজ না পেয়ে বাঘা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

এর দুইদিন আগে গত সোমবার (২৯ মে) দিবাগত রাতে উপজেলার পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার হামিদা প্লাজার মোল্লা এন্টারপ্রাইজের শো-রুমের তালা ভেঙ্গে চারটি কোম্পানির ৩৫ লক্ষ টাকা মূল্যের মোবাইল ফোন ও ক্যাশ বাক্সে রাখা ৩ লক্ষ ৮ হাজার ৯৯০ টাকা চুরি হয়ে গেছে। পরের দিন সকাল ৮টায় শো-রুমে এসে গেটে নতুন তালা লাগানো দেখেন শো রুমের মালিক রোসনাল আহম্মেদ সুজন ।

পরে তালা ভেঙ্গে শো-রুমে প্রবেশ করে মোবাইল ফোন ও টাকা চুরির বিষয়ে জানেন। তিনি জানান, মাকের্টে মোবাইল বিক্রির সমস্ত টাকা ক্যাশ বাক্সে রাখা ছিল। শোরুমে মোবাইল রাখা ছিল। সিসি ক্যামেরা ফুটেসে চোরদের চুরি করে বের হয়ে যেতে দেখা গেছে। মঙ্গলবার এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডাইরি করেছেন।

২১ এপ্রিল দিবাগত রাতে উপজেলার পদ্মার চরে, দাদপুর গ্রামের জায়েদ আলীর ঘরের সিঁধ কেটে ৫ লক্ষ টাকা চুরি হয়েছে। জায়েদ আলী জানান, আগের দিন মোকামে ভূট্টা বিক্রি করা টাকাগুলো এনে ঘরের মধ্যে রাখা ড্রামের ভেতরে রেখেছিলেন।  গত ১৮ মার্চ দুপুরে উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের বাউসা বাজারের বিকাশের দুটি দোকানের তালা ভেঙে ১লক্ষ টাকা চুরির ঘটনা ঘটে।

বাউসা দাঁড়পাড়া গ্রামের বিকাশ ব্যবসায়ী সামসুল ইসলাম জানান,দোকান বন্ধ করে দুপুর ২টার দিকে বাড়ি যান। বিকাল ৪টায় দোকান খুলতে গিয়ে তালা ভাঙ্গা দেখতে পান। দোকানের ভেতরে গিয়ে দেখেন ড্রয়ারে রাখা ৮০ হাজার টাকা নেই। দোকানে লাগানো সিসি ক্যামেরাও খুজে পাননি।

একই দিন ওই বাজারের বিকাশ ব্যবসায়ী রাকিব হোসেনের ২০ হাজার টাকা চুরি হয়ে যায়। বাউসা পূর্বপাড়া গ্রামের বিকাশ ব্যবসায়ী রাকিব হোসেন জানান, দোকান বন্ধ করে দুপুরে খেতে যান। বিকেলে দোকান খুলে দেখেন দোকানের তালা ভাঙ্গা। ভেতরে গিয়ে দেখেন ড্রয়ারে রাখা তার ২০ হাজার টাকা নেই। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেন তারা।

১৫ মার্চ রাতে উপজেলার বাঘা পৌরসভার মুশিদপুর গ্রামের আব্দুল মজিদ মন্ডলের গোয়াল ঘর থেকে ১ লক্ষ ৫০ টাকা মুল্যের ১টি বলদ গরু চুরি হয়েছে। আব্দুল মজিদ মন্ডল জানান, রাতে ঘুুম থেকে উঠে গোয়াল ঘরে গিয়ে দেখেন দুইটি গরু মধ্যে ১টি গরু নেই।

গত ৯ মার্চ দিবাগত রাতে উপজেলার বাঘা পৌরসভার চক-আহমোদপুর গ্রামের আছান উদ্দিনের আনুমানিক ২ লক্ষ ৫০ টাকা মুল্যের দু’টি গরু চুরি হয়েছে। আছান উদ্দিন জানান, গোয়াল ঘরের দরজার তালা কেটে গরু দুটি চুরি করে নিয়ে যায়।

৭ জানুয়ারি দিবাগত রাতে মীরগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ্য’র কার্যালয়ের লোহার আলমারি ও লোকার ভেঙ্গে একটি ল্যাপটপ ও কলেজের উপ- বৃত্তির নগদ ৫০,০০০ হাজার টাকা এবং অফিস সহকারী আবুল হাসেমের নগদ ৩০০০ টাকা সহ তার সোনালী ব্যাংকের একটি চেক বই চুরি হয়ে যায়। কলেজটির অধ্যক্ষ রেদুয়ান রহমান মাসুম জানান, কলেজটির নিয়োগপ্রাপ্ত জামাল উদ্দিনসহ কামাল হোসেন নামের আরেকজন নৈশ প্রহরী প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বে ছিলেন। চুরির ঘটনার পর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

জামাল উদ্দিন বলেন, দায়ভার এড়াতে না পেরে অর্থদন্ড দিয়ে স্থানীয়ভাবে সমাঝোতা করে নিয়েছি। চক আমোদপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা বলেন, বাজার ও প্রতিষ্ঠানে নৈশ প্রহরি থাকলেও চুরি ঠেকানো যাচ্ছেনা। মাঝে মধ্যেই চুরির ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানান তিনি । বাউসা বাজার কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ করেও কোন ফলাফল পাওয়া যাচ্ছেনা।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ডিএম বাবুল মনোয়ার জানান,পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েও চোরদের সনাক্ত করতে না পারায় ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছেনা।

অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খাইরুল ইসলাম বলেন, আমার যোগদানের পরে চুরির দু’টি ঘটনা ঘটেছে। নাম দিয়ে কেউ এজাহার করতে চাননা। যার ফলে চোরদের সনাক্ত করা সম্ভব হয়না। তবে গুরুত্বের সাথে তদন্ত পূর্বক চুরির সাথে জড়িতদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় নেওয়ার জন্য চেষ্টা চলছে।

 

 

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে