কে এই চাঁদ?

প্রকাশিত: মে ২৩, ২০২৩; সময়: ১২:২১ পূর্বাহ্ণ |
কে এই চাঁদ?

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করে কবরে পাঠানোর হুমকি দাতা রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদের উত্থান ছিলো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়েই। রাজশাহীর চারঘাটের শলুয়া ইউনিয়ন থেকে উঠে আসা এই আবু সাইদ চাঁদের নানা অপকর্ম আছে মানুষের মুুখে মুখে। এক সময় এলাকায় ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করেছিলেন চাঁদ।

১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৬ ও ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত তার কথার বাইরে কোনো কাজ হতো না চারঘাটে। তার কথা মতো কাজ না করায় সরকারি কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগও আছে চাঁদের বিরুদ্ধে।

আবু সাঈদ চাঁদের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ার পর। পরপর কয়েক দফা চারঘাট উপজেলার শলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। এরপর দুই দফা চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যানও হন।

২০০২ সালের পর থেকে নানা অকপকর্ম আর সন্ত্রাসী আচরণ, অগ্নিসংযোগের কারণে তার বিরুদ্ধে অন্তত শতাধিক মামলা হয়েছে বিভিন্ন থানায়। বেশিরভাগ সময় জেলে থাকেন। জেল থেকে বেরিয়ে আবারও জড়িয়ে পড়েন নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে।

আবু সাঈদ চাঁদ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হওয়ার পর উচ্ছৃঙ্খল বক্তব্য দিতে শুরু করেন। প্রায় উত্তেজনার সৃষ্টি করে। এর আগেও বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদ প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তির অভিযোগে গত বছরের ২৬ জুলাই আবু সাঈদ চাঁদের নামে মানহানির মামলা হয়। তার ওই বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে আরও সাতজনকে মামলায় আসামি করা হয়েছিল। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার আদালতে মামলাটি করেছিলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন আবু সাঈদ চাঁদ। রাজশাহী-৫ (তৎকালীণ চারঘাট-বাঘা) আসনে মনোনয়ন না দেওয়ায় রাজশাহীর জনসভা শেষে ঢাকায় ফেরার পথে বানেশ্বরে খালেদা জিয়ার গাড়িও আটকে বিক্ষোভ করেছিলেন চাঁদ। তারপর থেকে দলে কোনঠাসা ছিলেন চাঁদ। ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে গাভী মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন এই চাঁদ। যদিও বিপুল ভোটে ধানের শীষের কাছে পরাজিত হন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নেয়নি।

২০১৪ সালের বিএনপি নির্বাচনে যায়নি। ২০১৪ সালে ওই আসনের নির্বাচিত এমপি বর্তমান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকেও হত্যার চেষ্টা করেছিলেন চাঁদ। ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় চারঘাট-বাঘায় ব্যাপক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগে একাধিক মামলা আছে তার বিরুদ্ধে।

ওই সময় চাঁদ বাহিনীর হামলায় চারঘাট-বাঘা এলাকায় আওয়ামী লীগের দুই শতাধিক নেতাকর্মীর ওপর হামলা, বাড়ি ঘর ভাংচুর ও লুটতরাজ চালিয়েছিলেন আবু সাঈদ চাঁদ। ২০১৮ সালে মনোনয়ন পেলেও মামলার তথ্য গোপন করায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়।

চারগাট উপজেলারডাকবাংলো মোড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় যখন পৌরসভার অস্থায়ী কার্যালয় ছিল, তখন চারঘাটের পৌর মেয়র ছিলেন বিএনপির জাকিরুল ইসলাম বিকুল। স্থানীয় এমপি ছিলেন কবীর হোসেন।

পৌর মেয়রের দফতরে বসে কথা বলার সময় সেখানে দেখা করতে আসেন তৎকালীণ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। কিন্তু এমপির সঙ্গে দেখা হওয়ার আগেই প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে রাস্তার উপর পিটিয়ে আহত করেন আবু সাইদ চাঁদ।

অভিযোগ, চাঁদের কথা মতো চাল ও গম বরাদ্দ দেননি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে চাঁদের কথায় ছিল আইন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে