বান্দরবানে নিহত সেনাসদস্য রাজশাহীর বাগমারার তৌহিদুলের মায়ের কান্না থামছেনা

প্রকাশিত: মে ২০, ২০২৩; সময়: ৬:৪৬ অপরাহ্ণ |
বান্দরবানে নিহত সেনাসদস্য রাজশাহীর বাগমারার তৌহিদুলের মায়ের কান্না থামছেনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : সন্তানের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে মা নাসিমা বেগমের কান্না এখনো থামেনি। বারবার মূর্চ্ছা যাচ্ছেন তিনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে বাগমারার নরদাশ গ্রামে বান্দরবানের রুমায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) হামলায় নিহত সেনাসদস্য তৌহিদুল ইসলামের লাশ দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সেনাবাহিনীর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তাঁর লাশ রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নরদাশ গ্রামে আনা হয়।

বিকেল পাঁচটায় নরদাশ কলেজ মাঠে জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। জানাজায় পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন ছাড়াও এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন। গত মঙ্গলবার বান্দরবানের রুমায় কেএনএর সন্ত্রাসীদের বোমা (ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস—আইইডি) ও অতর্কিত গুলিতে তৌহিদুলসহ দুই সেনাসদস্য নিহত হন।

তৌহিদুলকে দাফনের জন্য সকালে বাড়ির পাশে কবর খোঁড়া হয়। বিকেলে তাঁর লাশ বাড়িতে পৌঁছালে কান্নার রোল পড়ে যায়। মা নাসিমা বেগম ছেলের লাশের পাশে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তবে ব্যতিক্রম বাবা মহসিন আলী। ছেলের মৃত্যুর খবরে তিনি বাক্‌রুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।

মঙ্গলবার রাতে তৌহিদুলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর মা নাসিমা বেগমের কান্না এখনো থামেনি। মাঝেমধ্যে মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। তৌহিদুলদের প্রতিবেশী স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, তৌহিদুলের বাবা গরিব কৃষক। ছেলের চাকরি পাওয়ার পর পরিবারের কষ্ট কমে গেছে। প্রতি মাসেই ছেলে টাকা পাঠাতেন।

তৌহিদুলের কলেজশিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, তাঁদের প্রতিষ্ঠানের অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী ভালো অবস্থানে আছেন। তবে তৌহিদুল ছিলেন ব্যতিক্রম। চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর প্রশিক্ষণ শেষে বাড়িতে এসে কলেজের শিক্ষকদের মিষ্টিমুখ করে দোয়া নিয়েছিলেন। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজের জীবন দিয়েছেন। তিনিও স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

গতকাল বুধবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বান্দরবানের রুমা উপজেলার জারুলছড়িপাড়ায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আস্তানা রয়েছে বলে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর সুংসুংপাড়া সেনা ক্যাম্পের মেজর মনোয়ারের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল মঙ্গলবার ওই স্থানে অভিযানে যাচ্ছিল। টহল দলটি জারুলছড়িপাড়ার ছড়ার কাছে পৌঁছালে বেলা ১টা ৫৫ মিনিটের দিকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কেএনএ সদস্যরা বোমা (আইইডি) বিস্ফোরণ ও অতর্কিত গুলি ছোড়ে। এতে দুজন কর্মকর্তা ও দুজন সৈনিক আহত হন। তাঁদের দ্রুত হেলিকপ্টারের মাধ্যমে চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত দুই সৈনিক মারা যান। তবে তাঁদের নাম-পরিচয় জানায়নি আইএসপিআর।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে