তানোর পৌর সভা দাখিল মাদ্রাসা সুপার মুনসুর রহমানের কান্ড

প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২৩; সময়: ৮:৪৪ অপরাহ্ণ |
তানোর পৌর সভা দাখিল মাদ্রাসা সুপার মুনসুর রহমানের কান্ড

সাইদ সাজু, তানোর : রাজশাহীর তানোর পৌর সভা দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য প্রার্থীদের ডেকে মাদ্রাসায় উপস্থিত হননি সুপার মুনসুর রহমান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইকবাল মোল্লা।

ফলে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাদ্রাসা চত্বরে অপেক্ষা করে কাঁদতে কাঁদতে ফিরে গেছেন চাকরী প্রার্থীরা। এসময় এলাকাবাসীসহ চাকরী প্রত্যাশীদের মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

এঘটনায় চাকরী প্রত্যাশী ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনার বিরাজ বিরাজ করছে। এ নিয়ে এলাকাবাসী
সুপার ও সভাপতির অপসারনসহ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী ও চাকরী প্রত্যাশী প্রার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তানোর পৌর সভা দাখিল মাদ্রাসায় ১জন আয়া ও ১ জননৈশপ্রহরী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয।

শুক্রবার ১৯শে মে /২০২৩ ইং সকাল ৯ টায় লিখিত ও ভাইবা পরীক্ষার জন্য প্রার্থীদেরকে স্বাক্ষাৎকার/প্রবেশ পত্র দেয়া হলেও আবেদন করা আরো কয়েকজন প্রার্থীরা প্রবেশপত্র দেয়া হয়নি।

শুক্রবার সকাল ৯টার আগেই চাকরী প্রার্থীরা মাদ্রাসা চত্বরে উপস্থিত হন। এসময় মাদ্রাসার অফিস ক্ষক খুলেন পিওন। ১২ টা পর্যন্ত সুপার ও সভাপতিসহ পরীক্ষা সংশ্লিষ্টরা কেউ মিলেনি।

এসময় প্রার্থীরা সুপারের মোবাইলে ফোন করলে রাস্তায় আছি, আসছি জানিয়ে অপেক্ষা করতে বলেন। পরে সাড়ে ১০টায় সুপার সবাইকে ফোন করে পরীক্ষা স্থগিত করার কথা জানিয়ে সকলকে ফিরে যেতে বলেন।

এসময় চাকরী প্রত্যাশী পরীক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি ভোক্ষ প্রকাশ করে সুপার ও সভাপতির অপসারন ও শাস্তির দাবি করেন।

শুক্রবার সরেজমিনে মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা গেছে, মাদ্রাসার মাঠে নিয়োগ পরীক্ষার্থীরা বসে কান্নাকাটি করছেন। মাদ্রাসার অফিস খোলা রয়েছে। ভিতরে কয়েকজন শিক্ষক কর্মচারী বসে আছেন।

পরিক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, গত বৃহস্পতিবার সুপার জানায় নিয়োগ পরিক্ষা হবে এজন্য শুক্রবার সকালে আসতে বলেন। সে অনুযায়ী আমরা সকাল থেকে বসে আছি। সুপার ও সভাপতি কেউ আসেনি।

নিয়োগ পরিক্ষা বন্ধের বিষয়ে এক শিক্ষক বলেন, আয়া ও নিরাপত্তা পদে দুটি নিয়োগ হওয়ার কথা। কিন্তু সুপার একাধিক ব্যাক্তির কাছ থেকে টাকা আদায় করেছেন।

এজন্য সে বেশ কিছুদিন ধরে মাদ্রাসায় আসছেন না। আসলেই পাওনাদারেরা ধরবে। মুলত এসব কারনেই সুপারের ইচ্ছায় নিয়োগ পরিক্ষা বন্ধ হয়েছে।

শুধু চাকুরী দেওয়ার নামে টাকা নেয় না, একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে সুদের উপরে লাখলাখ টাকা নিয়েছেন।

গত ৩০ মার্চ চাকুরীর ৪ লাখ টাকা আদায়ের জন্য সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে চাকুরী প্রার্থীর স্বজনরা ধরে সুপারকে থানায় দিতে চান।

কিন্তু স্থানীয়দের অনুরোধে তালন্দ ইউপি চেয়ারম্যান বসে মিমাংসা করে দেন এবং দু মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দিবে মর্মে লিখাপড়া হয়।

এঘটনায় সুপার মুনসুর সেই সময় বলেছিলেন, চাকুরীর টাকা না সুদের উপর টাকা নেওয়া হয়েছিল।

নিরাপত্তা কর্মী পদের আবেদন কারী সাফিউল ইসলাম, আশিক হাসান ও আয়া পদে নাসিমা, শিমানা ও জুথিসহ আরো কয়েকজন বলেন, গত ১৪ মে প্রবেশ পত্র দিয়ে বলা হয়েছে শুক্রবার সকাল ৯ টার সময় লিখিত ও মৌখিক পরিক্ষা হবে।

সে মোতাবেক আমরা মাদ্রাসায় উপস্থিত হয়েছি। তিন ঘন্টা ধরে উপেক্ষা করার পর জানতে পারলাম পরিক্ষা স্থগিত। কিন্তু আমাদেরকে কিছুই বলা হয়নি।

মাদ্রাসা সুপার মুনসুরের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমি রাজশাহীতে আছি, সমস্যার জন্য পরিক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

স্থগিতের বিষয়ে আবেদন কারীরা নাকি কিছুই জানেন না প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন হঠাৎ কর্মকর্তা অসুস্থ এজন্য স্থগিত জানানোর সময় পাওয়া যায়নি।

আপনি নাকি একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাবেক পৌর যুবলীগের সভাপতি ইকবাল মোল্লা বলেন, রাজশাহীতে নিয়োগ পরিক্ষা শুরু হয়েছে।

সুপার বলেছে স্থগিত আপনি কিভাবে বলেন শহরে পরিক্ষা হচ্ছে প্রশ্ন করা হলো উত্তরে বলেন আমি ব্যস্ত আছি পরে কথা বলছি।

একথা শোনার পর পুনরায় সুপার মুনসুরেকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে