মান্দায় প্রাথমিকের আরেক শিক্ষককে বরখাস্ত আতঙ্কে শিক্ষকেরা

প্রকাশিত: মে ১৬, ২০২৩; সময়: ৯:৪৮ অপরাহ্ণ |
মান্দায় প্রাথমিকের আরেক শিক্ষককে বরখাস্ত আতঙ্কে শিক্ষকেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, মান্দা : নওগাঁর মান্দায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আরও একজন সহকারী শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সময়মত বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হওয়া ও ছুটির পূবেই বিদ্যালয় ত্যাগ করা, বিদ্যালয়ের টিন ও আম বিক্রি করে টাকা আত্মসাত, অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত দিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।

আজ মঙ্গলবার ওই শিক্ষককে বরখাস্তের আদেশ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ফজলে খোদা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দীক মোহাম্মদ ইউসুফ রেজা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তকালিন বিধিমোতাবেক তিনি খোরপোষ ভাতা পাবেন।

বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকের নাম সেলিম মোরতুজা প্রামাণিক। তিনি কালিনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত ছিলেন। এনিয়ে এক সপ্তাহে দুইজন শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

এর আগে ‘শিষ্টাচারবহির্ভূত’ আচরণের অভিযোগে গত ১০মে বরখাস্ত করা হয় উপজেলা নহলা কালুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মকলেছুর রহমানকে। বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়েছে পারসিমলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আরেক সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে।

বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক সেলিম মোরতুজা তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত টিন ও আম বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষে সঙ্গে আমি কখনও অসদাচরণ করিনি।

শিক্ষক সেলিম মোরতুজা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত। এরপরও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ফজলে খোদা ও একজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে দিয়ে যোগসাজসী প্রতিবেদন তৈরিসহ আমার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার শামসুজ্জামান। সঠিকভাবে তদন্ত করা হলে প্রকৃত সত্য পাওয়া যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেন, ‘শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার শামসুজ্জামান কারণে অকারণে শিক্ষকদের হেনস্তা করেন। তাঁর অধীনস্থ শিক্ষকদের সবসময় ‘তুমি’ সম্বোধন করে থাকেন। তাঁর নির্ধারিত ইউনিফর্স না পরায় অনেক শিক্ষককে অপমানিত হতে হয়েছে। বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে অসৌজন্যমুলক আচরণ করেন। তিনি স্বেচ্ছাচারিভাবে একের পর এক শিক্ষককে বিভাগীয় মামলা দিয়ে বরখাস্ত করছেন। এতে শিক্ষকের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

কালিনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ফজলে খোদা বলেন, সহকারী শিক্ষক সেলিম মোরতুজার আচার আচরণ ভাল নয়। তিনি বিদ্যালয়ের অনেক টাকা আত্মসাত করেন। বিদ্যালয়ে সঠিক সময়ে আসা-যাওয়া করেন না। এসব বিষয়ে তদন্ত হয়েছে। এর পর বিধিগত প্রক্রিয়ায় তাঁকে বরখাস্ত করেছে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার শামসুজ্জামান বলেন, ‘শিক্ষক সেলিম মোরতুজার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তে সত্যতা মিলেছে। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার পর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো সঠিক নয়।’

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে