তানোরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা

প্রকাশিত: মে ১৬, ২০২৩; সময়: ১১:১১ পূর্বাহ্ণ |
তানোরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর : রাজশাহীর তানোর পৌরসভা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম মন্টুর বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গত সোমবার (৮ মে) রাজশাহী বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত -১ এ বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদ।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তানোর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দিয়েছেন।

চাঁদাবাজির মামলার এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষক মহলসহ এলাকা বামীর মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যরর সৃষ্টি হয়েছে। এলাকায় শুরু হয়েছে আলোচনা ও সমালোচনা।

মামলার বিবরণ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, বিগত ২০০৩ সাল থেকে তানোর পৌর সভা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে আমশো মথুরাপুর গ্রামের মৃত চাঁন প্রামানিকের পুত্র হারুন অর রশিদ নিয়োগ নিয়ে বিনা বেতনে চাকরি করে আসছেন।

ওই বিদ্যালয়টি প্রথমে নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত এমপিও ছিল। সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদ ৯ম ও ১০ শ্রেনী শিক্ষক হওয়ায় ২০ বছর ধরে বিনা বেতনে চাকরী করে আসছেন। গত ২০২২ সালের জুলাই মাসে উচ্চ মাধ্যমিকের অনুমোদন বা এমপিও’র অনুমোদন পাওয়া হয়।

প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম মামলার বাদি হারুর অর রশিদের কাগজ পত্র বাদ রেখে গোপনে অপর শিক্ষক আসিরুদ্দিনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেন।

মামলার বাদি তানোর পৌর সভা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদ বলেন, দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর বিনা বেতনে পাঠদান করে আসছি, সম্প্রতি সরকার উচ্চ মাধ্যমিকের অনুমোদন দিয়েছেন। এ জন্য বেতনের জন্য যাবতীয় কাগজপত্র মাধ্যমিক অফিসে জমা দিতে হয়।

প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম গোপনে আমার কাগজ পত্র বাদ রেখে অপর সহকারী শিক্ষক আসিরুদ্দিনের কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। গত মাসের ১৩ এপ্রিল স্কুলের অফিস কক্ষে প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি আমার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।

এর কারন জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম সাব জানিয়ে দেয় ১০ লাখ টাকা না দিলে বেতনের জন্য তোমার কাগজপত্র জমা দেয়া হবে না। বিভিন্ন ভাবে একাধীকবার অনুরোধ করেও ব্যর্থ হয়ে তিনি আদালতে মামলা দাযের করেছেন।

এডভোকেট রায়হানের মাধ্যমে আদালতে এজহার দাখিল করলে বিজ্ঞ আদালত আমলে নিয়ে মামলাটি রেকর্ড করেছেন। টাকা চাওয়ার রেকর্ড সংযুক্ত আছে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।

একাধিক শিক্ষক ও স্থানীয়রা বলছেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা মানে পুরো প্রতিষ্ঠানের বদনাম। হারুন দীর্ঘ ২০ বছর ধরে বিনা বেতনে পাঠদান দিয়ে আসছেন। আর এমপিও হল বেতনের জন্য ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে এটা অমানুবিক।

হারুনের স্ত্রী দীর্ঘ দিন ধরে প্যারালাইসিসে ভুগছেন। তিনি মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এমনকি রান্নাবাড়াও করতে হয় হারুনকে। শিক্ষক সমাজ যদি এমন হয় তাহলে জাতি সমাজ কোথাই যাবে।

এসব দূর্নীতি চাঁদাবাজ শিক্ষক দের কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার। তাহলে অন্য শিক্ষক রা এমন কর্মকান্ডে জড়িত হতে সাহস পাবে না।

মামলার আসামী প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, আমি ঢাকায় আছি, পরে বিস্তারিত কথা বলবো জানিয়ে তিনি বলেন, বেতনের অনুমোদন করতে টাকা লাগে এটা সবাই জানে। সে ভাবেই তাকে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

রেকর্ড আছে আপনি ১০ লাখ টাকা চেয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকা চেয়েছি, তাই বলে আদালতে মামলা করতে হবে এটা কোন ধরনের কথা। এটাতো প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট ছাড়া কিছুই না। মামলা করেছে আদালতে জবাব দেওয়া হবে।

ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা আবুল বাসার সুজন বলেন, মামলার বিষয়ে শুনেছি। আগামী বৃহস্পতিবার এসব বিষয় নিয়ে স্কুলে বসা হবে এবং সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে