রাজশাহীতে ছিনতাইকারী চক্রের ৮ সদস্য গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: মে ৯, ২০২৩; সময়: ৯:৩৯ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে ছিনতাইকারী চক্রের ৮ সদস্য গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী মহানগরীতে অটোরিক্সা ছিনতাইয়ের অভিযোগে ছিনতাইকারী চক্রের ৮ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে আরএমপি’র কাটাখালী থানা পুলিশ । মঙ্গলবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান আরএমপি।

গ্রেফতারকৃতরা হলো ১। মুকুল হোসেন (৩৫), ২। মো: রাব্বী আলী (২৮), ৩। মো: শিহাব আলী (২১), ৪। মো: নাজমুল ইসলাম (২৪), ৫। মো: নাজিউর রহমান মৃদুল (২২), ৬। মো: রকি (২৮), ৭। মোসা: সুমাইয়া আক্তার রিমা (২৪) ও ৮। মো: আশরাফ আলী (৫৪)। মো: মুকুল হোসেন রাজশাহী মহানগরীর পবা থানার মারিয়া এলাকার আসলাম আলীর ছেলে, বর্তমানে সে কাটাখালী থানার শ্যামপুর থান্দারপাড়ার বাসিন্দা। মো: রাব্বী আলী কাটাখালী থানার শ্যামপুর থান্দারপাড়ার মৃত নাসের আলীর ছেলে এবং একই এলাকার মৃত পালানের ছেলে শিহাব আলী। নাজমুল ইসলাম মতিহার থানার চরশ্যামপুর এলাকার শুকচাঁদের ছেলে এবং ডাসমারী পূর্বপাড়ার মুনছুর রহমানের ছেলে নাজিউর রহমান মৃদুল। রকি কাটাখালী থানার শ্যামপুর থান্দারপাড়ার আশরাফ আলীর ছেলে এবং রকির স্ত্রী মোছা: সুমাইয়া আক্তার রিমা ও সমসাদীপুর এলাকার মৃত মোতালেব আলীর ছেলে মো: আশরাফ আলী।

জানা যায়, রাজশাহীর মহানগরীর মতিহার থানাধীন পশ্চিম বুধপাড়া এলাকার অটোরিক্সা চালক শাহাজ উদ্দিন (৪৫) গত ৬ মে রাত ৮ টার দিকে রাজশাহী শহরের সাহেব বাজার রহমানিয়া হোটেলের সামনে ভাড়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এসময় তিন ছিনতাইকারী যাত্রীবেশে তাকে কাটাখালী থানার মাহেন্দ্রা পুলিশ ফাঁড়ী এলাকায় ভাড়ায় যাওয়ার কথা বললে তিনি ওই তিনজনকে নিয়ে রওনা হন। রাত ৯ টায় মাহেন্দ্রা বাইপাস মহাসড়ক এলাকায় পৌঁছালে ছিনতাইকারীরা তাকে থামতে বলে। সেখানে তারা অটোরিক্সা থেকে নেমে একটি দোকান হতে সিগারেট নিয়ে আবার ফিরে আসে। হঠাৎ যাত্রীবেশে অটোরিক্সার পিছনে বসে থাকা দুইজন ছিনতাইকারী চালক শাহাজ উদ্দিনকে গামছা দিয়ে দুই হাত বেধে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কিল ঘুষি মারতে থাকে। তারা তাকে খুন করার ভয় দেখিয়ে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন জোর করে কেড়ে নিয়ে দৌঁড়ে হরিয়ানের দিকে চলে যায়। অটোরিক্সার সামনে যাত্রীবেশে বসে থাকা তাদের অপর সহযোগী অটোরিক্সা নিয়ে বেলপুকুরে দিকে চলে যায়। এ সংক্রান্তে তিনি কাটাখালী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপ-পুলিশ কমিশনার (মতিহার) মধুসুদন রায়ের নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার একরামুল হক, পিপিএম-এর তত্বাবধানে কাটাখালী থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে এসআই আকতার আলী ও তার টিম আসামিদের গ্রেফতার ও অটোরিক্স উদ্ধার অভিযানে নামে। কাটাখালী থানার ঐ টিম আরএমপি সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তায় আসামিদের সনাক্ত করে। এরপর গত ৮ মে বিকাল ৩:৪৫ টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মহানগরীর কাটাখালী থানার শ্যমপুর থান্দারপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি শিহাব আলীকে গ্রেফতার করে। এসময় শিহাবের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনটি উদ্ধার হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি শিহাব জানায় তার অপর দুইজন সহযোগী মুকুল ও রাব্বী। তারা তিনজন একত্রে এই ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটায়। শিহাবের দেওয়া তথ্য মতে কাটাখালী থানার ওই টিম বিকাল ৫:১৫ টায় শ্যমপুর থান্দারপাড়া এলাকা হতে আসামি মুকুল ও রাব্বীকে গ্রেফতার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা তিনজন ছিনতাইয়ের ঘটনা স্বীকার করে। তারা আরও জানায় ছিনতাইকৃত অটোরিক্সাটি বিক্রয়ের জন্য তাদের সংঘবদ্ধ চক্রের সহযোগী আসামি মো: নাজমুল হোসেন (২০), মো: নাজিউর রহমান মৃদুল (২২), আসামি মো: রকি (২৮) ও মোসা: সুমাইয়া আক্তার রিমা (২৪)-কে দিয়েছে। আসামিরা ছিনতাইকৃত অটোরিক্সাটি খুলে ছোট ছোট অংশে বিভক্ত করার জন্য আসামি সুমাইয়া আক্তার রিমার বাড়িতে রেখেছে বলেও জানায়।

তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাটাখালী থানা পুলিশ শ্যামপুর থান্দারপাড়ায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি মোসা: সুমাইয়া আক্তার রিমা ও তার স্বামী রকি এবং ভাই নাজমুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। এসময় সেখান থেকে অটোরিক্সাটির ব্যাটারী ব্যতীত বিভিন্ন অংশ উদ্ধার হয়। এরপর সন্ধ্যা ৬:৩০টায় অপর সহযোগী নাজিউর রহমান মৃদুলকে গ্রেফতার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি সুমাইয়া আক্তার রিমা জানায়, ছিনতাই করা অটোরিক্সার ব্যাটারীটি তাদের সহযোগী আসামি মো: আশরাফ আলীর মটর পার্টসের দোকানে বিক্রয়ের জন্য আশরাফ আলীকে দিয়েছে। এরপর কাটাখালী থানা পুলিশের ওই টিম অভিযান পরিচালনা করে আসামি আশরাফ আলীকে গ্রেফতার করে এবং ছিনতাই হওয়া অটোরিক্সার চারটি ব্যাটারী উদ্ধার করে।

গ্রেফতারকৃত আসামিরা সকলে সংঘবদ্ধ ছিনতাই চক্রের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে কাটাখালী থানায় একটি ছিনতাই মামলা রুজু করা হয়েছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে