রাবিপ্রবির আবাসিক হলে শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগকর্মীর নির্যাতন

প্রকাশিত: মে ৭, ২০২৩; সময়: ১২:৪৯ অপরাহ্ণ |
রাবিপ্রবির আবাসিক হলে শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগকর্মীর নির্যাতন

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে মারধর করে নির্যাতন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই কর্মী। শনিবার (৬ মে) দিনগত রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় ‘অজ্ঞান’ হয়ে পড়া আবাসিক শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নিতেও বাধা দেয় হামলাকারী দুই ছাত্রলীগ কর্মী। পরে নির্যাতনের শিকার নাসির উদ্দীন অর্ণবকে রাত আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং পুলিশের সহায়তায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

হামলা ঘটনায় অভিযুক্ত আকিব মাহমুদ হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশন এবংন হাসু দেওয়ান কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত দুজনই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছে।

নির্যাতনের শিকার নাসির উদ্দীন অর্ণব ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। এরমধ্যে হামলাকারী হাসু দেওয়ান ও হামলার শিকার অর্ণব আবাসিক হলের থাকে।

রাঙামাটির ঝগড়াবিল এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস হলেও জেলা শহরের মাঝেরবস্তি এলাকায় দুইটি ভাড়া ভবনে আবাসিক হল গড়েছে রাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ। হামলায় অভিযুক্ত আকিব মাহমুদ মাঝেরবস্তি এলাকার স্থানীয় ছেলে হওয়ায় আবাসিক হলে তার আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ শিক্ষার্থীদের পুরনো।

হামলায় আহত নাসির উদ্দীন অর্ণবের বন্ধু জসিম উদ্দীন জানান, শনিবার রাত ১১টার দিকে হলের বাহিরে ডেকে ইউনুছ ইয়ামিন নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে মারধর করে আকিব আর হাসু। পরে ইউনুছ বিষয়টি অর্ণবসহ অন্যান্যদেরকে জানায়। এরপর অর্ণব বিষয়টি বিভিন্নজনকে জানানোর পর হামলাকারী আকিব ও হাসু অর্ণবকে ফোন করে হলের বাহিরে যেতে বলে। কিন্তু অর্ণব তাদেরকে হলে আসতে বলে। পরবর্তীতে রাত আনুমানিক ১২টা সাড়ে ১২টার দিকে আবাসিক হলের ২০৮ নম্বর হলে অর্ণবকে অমানবিক নির্যাতন করে আহত করে আকিব ও হাসু এবং একপর্যায়ে অর্ণব অজ্ঞান হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানতে পেরে আমি রাত ১টার দিকে হলে গিয়ে অর্ণবকে হাসপাতালে আনার চেষ্টা করলে আকিব ও হাসু আমাকে বাধা হয়।

জসিম বলেন, এরপর আমরা সহকারী প্রভোস্ট ইমতিয়াজ স্যার ও পুলিশকে বিষয়টি জানাই। রাতে পুলিশ আসার পর আড়াইটার দিকে অর্ণব উদ্ধার করে থানায় আনি। হামলায় আহত অর্ণব আজ ভোর ৬টা পর্যন্ত অজ্ঞান ছিল। জ্ঞান ফেরার পর এখন মোটামুটি কথা বলতে পারে।

জসিম আরও জানান, ‘হামলার সময় আকিব ও হাসু দুজন নেশাগ্রস্ত ছিল। তারা এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের র্যাগিং ও মারধরের করেছে। যে এলাকায় (মাঝের বস্তি) আবাসিক হল; আকিব সেই এলাকার স্থানীয় হওয়ায় হলে আধিপত্য দেখান। হলের আবাসিক ছাত্র না হয়েও নিয়মিত আসা-যাওয়া করে।

এদিকে, হামলার ঘটনা রাজনৈতিক জেরেই ঘটেছে বলছে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা।

অন্যদিকে, বিষয়টি জানতে আবাসিক হলের সহকারী প্রভোস্ট আহমেদ ইমতিয়াজের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং পরে কথা বলবেন জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জুয়েল শিকদার জানান, হামলার ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি আছে এবং সে মোটামুটি সুস্থ আছে।

রাঙামাটির কোতোয়ালি ওসি (তদন্ত) আক্তার হোসেন বলেন, রাতে ঘটনার পর আমাদের দুইটি মোবাইল টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছে। থানার এসআই (উপপরিদর্শক) তানভীর সেখানে ছিলেন এবং তিনি বিষয়টি তদন্ত করছেন। তবে এখনো পর্যন্ত কেউ বিষয়টি নিয়ে আমাদের অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে