নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাল সার্টিফিকেট তৈরির কারখানার সন্ধান

প্রকাশিত: মে ৫, ২০২৩; সময়: ৬:৩২ অপরাহ্ণ |
খবর > জাতীয়
নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাল সার্টিফিকেট তৈরির কারখানার সন্ধান

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন চলমান ও বন্ধ হয়ে যাওয়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট বিক্রি করার অভিযোগে চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বৃহস্পতিবার (৪ মে) সন্ধ্যায় ও শুক্রবার সকালে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি লালবাগ বিভাগ।

ডিবি জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী নুরুন্নাহার মিতুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বিভিন্ন পর্যায়ের একাডেমিক অনেক সার্টিফিকেট, মার্কশিট, ইনভেলপ ও নগদ টাকা। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার সকালে লালবাগ থানার অন্তর্গত বড়ঘাট মসজিদ এলাকার কাশ্মীরি গলির একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইয়াসিন আলী ও দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটির ডিরেক্টর বুলবুল আহমেদ বিপুকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিএমপি ডিবির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. মশিউর রহমান জানান, অনেকদিন ধরে চক্রটি বিপুল টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন চলমান ও বন্ধ হয়ে যাওয়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েশন এবং পোস্ট গ্রাজুয়েশন; বিভিন্ন বোর্ডের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মার্কশিট ও সার্টিফিকেট ক্রয় বিক্রয় করে আসছিল। এই সার্টিফিকেট ও মার্কশিটগুলো বোর্ড অথবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরবরাহ করা মূল কাগজ দিয়েই তৈরি করা হয় এবং সেগুলোকে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অনলাইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয় যাতে অনলাইন ভেরিফিকেশনে সত্য পাওয়া যায়। এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রযুক্তি সচেতন এই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি জানান, লালবাগের দুই রুম বিশিষ্ট এই বাসা থেকে দামি ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, প্রিন্টার, স্ক্যানার, এমব্রোস মেশিন স্থাপন করে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি থেকে সংগ্রহ করা ব্ল্যাংক মার্কশিট, সার্টিফিকেট এনে ভুঁইফোড় ব্যক্তিদের নামে সার্টিফিকেট, মার্কশিট ও টেস্টিমোনিয়াল ছাপানো হত।

এ ছাড়া ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইয়াসিন আলী বিভিন্ন ছাপাখানা থেকে সব রকমের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সম্বলিত অতিসূক্ষ জাল সনদ সমূহের কাগজ ছাপিয়ে এনে নিজেও বিভিন্ন গ্রাহকদেরকে জাল সার্টিফিকেট, মার্কশিট, টেস্টিমোনিয়াল ও ট্রান্সক্রিপ্ট সরবরাহ করত জানান।

তারা দুই ধরনের জালিয়াতি করত জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো রকমের ভেরিফিকেশন হবে না এরকম সার্টিফিকেট, মার্কশিট, টেস্টিমোনিয়াল সরবরাহ করা এবং দেশে-বিদেশে অনলাইনে ভেরিফিকেশন হবে এরকম মার্কশিট, সার্টিফিকেট ইত্যাদি সরবরাহ করা।

তিনি আরো জানান, কতিপয় বিশ্ববিদ্যালয় ও বোর্ডের বেশ কিছু দায়িত্বশীল ব্যক্তির নাম পরিচয় পাওয়া গেছে যারা অনলাইন ভেরিফিকেশন করে সার্টিফিকেট বিক্রির সাথে সরাসরি জড়িত। লাখ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া এ সকল প্রতারকদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

নুরুন্নাহার মিতু ব্যতীত গ্রেপ্তারকৃত অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলার রেকর্ড রয়েছে বলে নিশ্চিত করেন ডিসি মো. মশিউর রহমান।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে