লাকড়ি তৈরিতে ঝুঁকছে গ্রামীণ গৃহবধূরা

প্রকাশিত: মে ২, ২০২৩; সময়: ১২:৫৪ pm |
লাকড়ি তৈরিতে ঝুঁকছে গ্রামীণ গৃহবধূরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, কচুয়া : চাঁদপুরের কচুয়ায় এক সময়ে গ্রামবাংলার আড়া-জঙ্গলের লতা-পাতা কুড়িয়ে জ্বালানি হিসেবে রান্নার কাজে ব্যবহৃত হতো।

এখন জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে গ্রামীণ আড়া-জঙ্গল নিধন করে ভূমি তৈরি করা হচ্ছে। আর ওই ভূমিতে ফসল উৎপাদনসহ বসবাস শুরু করেছে ভূমি-জঙ্গল মালিকরা। এ কারণে বিলুপ্তির পথে বনাঞ্চল বা আড়া-জঙ্গল।

এর ফলে নিম্ন আয়ের মানুষদের রান্না কাজে দেখা দেয় জ্বালানি খড়ির সংকট। উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহবধুরা নিজের গাছের খড়ি বা গ্যাস দিয়ে রান্না করতে পারলেও চরম বেকায়দায় পড়েছেন নিম্ন আয়ের বধূরা।

তারা গ্যাস বা গাছের কাঠ-খড়ি ক্রয় করতে না পেরে শুরু করেছেন গৃহপালিত গরুর গোবর সংগ্রহে। সেই গোবর দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে লাকড়ি-খড়ি। সাশ্রয়ী জ্বালানী ব্যবহারের জন্য গরুর গোবরের তৈরি লাকড়ি চাঁদপুরের কচুয়ার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের গরিব গৃহবধূদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে ঘুরে দেখা যায়, বিশেষ করে নিম্নবিত্ত পরিবারের বধূরা গৃহপালিত গরুর গোবরের লাকড়ি তৈরিতে মেতে উঠেছেন। গ্রামীণ এই বধূরা সকালে ঘুম জেগে গোয়াল ঘরে প্রবেশ করেন। ডালি ভর্তি বের করেন গোবর। গোবরের সাথে মিশ্রিত করা হয় আংশিক পরিমাণের ধানের তুষ।

এরপর ২-৩ ফুট লম্বা বাঁশের চিকন লাঠি আকারের বা পাটের শলা দিয়ে বধূরা তৈরি করেছেন লাকড়ি। এসব তৈরিকৃত কাঁচা লাকড়িগুলো শুকানোর জন্য বাড়ির উঠানে রোদে দাঁড় করে রাখা হয়। ২-৩দিন পরই শুকিয়ে যায় লাকড়িগুলো। এভাবে নিত্যদিনের তৈরি শুকনো লাকড়ি মজুদ রাখা হয় নিজ ঘরে।

বিতারা গ্রামের এলাকার গৃহবধূ মমিনা বেগম ও সাবিত্রী রানী জানান, প্রতি বছরের শুষ্ক মৌসুমে আমরা গোবরের খড়ি তৈরি করি। নিত্যদিনে চুলায় জ্বালিয়ে অতিরিক্ত খড়ি মজুদ রাখি। যা বর্ষা মৌসুমে ব্যবহার করা হয়।

দোয়াটি ও বুধুন্ডা এলাকার গৃহবধূ দুর্গারানী ও শিপ্রা রানী বলেন, আমারা গরিব মানুষ। প্রতিদিন খড়ি ক্রয় সম্ভব হয় না। এমনকি অন্যের লতা-পাতা খুঁটে নিতে দেয় না।

তাই আমাদের গৃহপালিত গরুর গোবর দিয়ে খড়ি তৈরি করে জ্বালানী হিসেবে রান্না কাজে ব্যবহার করি। যা আর্থিক ভাবে অনেক সাশ্রয় হয়। মাটির চুলাতে রান্না করতে মজাও লাগে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
topউপরে