লড়াই করে নিজেদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে: এমপি বাদশা

প্রকাশিত: মে ১, ২০২৩; সময়: ১:৫৮ অপরাহ্ণ |
লড়াই করে নিজেদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে: এমপি বাদশা

নিজস্ব প্রতিবেদক : শ্রমিক সমাবেশে রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, রাজশাহীর কলকারখানা গুলো বন্ধ করে শ্রমিকদের বেকার করে দেয়া হয়েছে। যেদিন পাটকল বন্ধের ষড়যন্ত্র হয়, সেদিন শ্রমিকদের পাশে গিয়ে কেউ দাঁড়ায়নি। আমরা সেদিন তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছি‌। তাদের আন্দোলনে শামিল হয়ে রাজনৈতিক একাত্মতাও প্রকাশ করেছি।

রাজশাহীতে উন্নয়ন হয়েছে অনেক, কিন্তু যখন পাটকল-চিনিকল বন্ধ হয়ে যায়, শ্রমজীবী মানুষ কর্ম হারিয়ে বেকার হয়ে পড়ে; তখন কাউকে এসব নিয়ে কথা বলতে দেখি না। এসব নিয়ে আর নিন্দা জানাবো কাকে? নিন্দা জানাতে-জানাতে হাঁপিয়ে গেছি! পথ এখন একটাই- মহান মে দিবসে সবাইকে সংগ্রামের শপথ নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে হবে। রাজপথে লড়াই করেই নিজেদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে।

সোমবার সকালে রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে মহান মে দিবস উপলক্ষে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের রাজশাহী জেলার উদ্যোগে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশ শেষে লাল পতাকাসহ একটি রেলি বের করা হয়। এতে এমপি বাদশা সহ শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।

কৃষক শ্রমিক ও শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে প্রতারণামূলক রাজনীতি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বলেছেন, কৃষক শ্রমিকদের জোর দিয়ে বলা হয়; আপনারা উৎপাদন করুন ফসল ফলান। কিন্তু কৃষক যখন উৎপাদিত ফসলের নায্য মজুরি পায় না, তখন আমরা কেউই তাদের পাশে এসে দাঁড়াই না। শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে এ ধরনের প্রতারণা রাজনীতি চলতে পারে না। অবিলম্বে এটি বন্ধ করতে হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক এই ভিপি আরো বলেন, অনেকে কৃষকদের বেশি বেশি উৎপাদন করার জন্য উৎসাহিত করেন। কৃষক উৎপাদন করে যখন তার ন্যায্য মূল্য পায়না, তখন আমরা তাদের পাশে দাঁড়াই না। এর মানে হলো উৎপাদন করেন আপনারা; খাবো আমরা। আমরা গরীব মানুষকে শোষণ করতে চাই, লুণ্ঠন করতে চাই। যাদের রক্তে বাংলাদেশ, যাদের জন্য বাংলাদেশ, যে শ্রমজীবী মানুষ এ দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ; তাদের কোন রক্ষাকবচ নেই।

দেশ একশ্রেণীর লুটেরা গোষ্ঠীর হাতে পুঞ্জিভূত মন্তব্য করে ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম প্রধান এ নেতা বলেন, এখন দেখা যায় তেল আলা মাথায় বেশি তেল দেয়া হয়। কিছু মানুষ রাতারাতি হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে যায়। আর আমাদের যারা উৎপাদনকারী শ্রমিক কৃষক তারা গরিব হয়ে থাকে। তারা তাদের ফসলের নাট্য মূল্য পায়না। কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। চালু থাকলেও ঠিকমতো মজুরি পায় না। তাহলে আমরা কোথায় যাব? মুক্তিযুদ্ধ করেছি তবে কিসের জন্য? বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন বাংলাদেশ হবে কৃষক শ্রমিকের বাংলাদেশ। তিনি বলেছিলেন, এ রাষ্ট্রের মালিক হবে জনগণ। কিন্তু রাষ্ট্রের মালিক কি আসলেই জনগণ? বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে বাংলাদেশ বিশেষ একটি লুটেরা শ্রেণীর হাতে পুঞ্জিভূত হয়েছে।

মহান মে দিবসে শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে সংগ্রামের আহ্বান জানিয়ে জাতীয় এই রাজনীতিক বলেন, আমরা কি আজকে বড়লোক আরো বড়লোক হবে এই শপথ নেব নাকি নিজেদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হব সেটি ঠিক করতে হবে। কৃষক শ্রমিক শ্রমজীবী মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের সবাইকে শপথ নিতে হবে। আমরা স্লোগান দেই দুনিয়ার মজদুর এক হও। কিন্তু বাস্তবে আমরা এক হই না। আজকে সারাবিশ্বে আমাদের মত দলগুলো মহান মে দিবস পালন করছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষ নিজেদের অধিকারের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। আসুন সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে একটি সমতাভিত্তিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে একাত্ম হই।

জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের রাজশাহী জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সিরাজুল রহমান খানের সভাপতিত্বে শ্রমিক সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন রাজশাহী জেলা, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামাণিক দেবু, জেলার সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক তোতা, মহানগর সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য সাদ্রুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। জেলা শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম অপু সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে