চারঘাটে নলকূপে মিলছে না পানি

প্রকাশিত: এপ্রিল ১১, ২০২৩; সময়: ৪:২১ অপরাহ্ণ |
চারঘাটে নলকূপে মিলছে না পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চারঘাট : রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। গত দুই মাসে এক ফোঁটাও বৃষ্টি না হওয়ায় ভূ-উপরিস্থ পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে গেছে। তীব্র খরা, বৃষ্টিহীনতার কারণে উপজেলার জনজীবনে হাঁসফাঁস উঠেছে।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় গভীর ও অগভীর নলকূপ রয়েছে প্রায় ১৭ হাজার ৫০০টি। জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত তিন বছরে ইউনিয়ন পর্যায়ে গভীর নলকূপ স্থাপন করেছে ৪৬২টি। এসব নলকূপের জন্য দুটি লেয়ার রয়েছে।

প্রথম লেয়ারে পানি উত্তোলনের ক্ষমতা রয়েছে ৮০০ থেকে ৯০০ ফুটের মধ্যে এবং দ্বিতীয় লেয়ারে ১ হাজার থেকে ১১০০ ফুটের মধ্যে।

পদ্মা-বড়াল বিধৌত এই উপজেলার অধিকাংশ অধিবাসী সুপেয় পানির জন্য নলকুপের উপর নির্ভরশীল। সাধারণত বর্ষা মৌসুমে বেশ কিছুদিন পানি থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে নদীগুলোতে পর্যাপ্ত পানির অভাবে শুকিয়ে থাকে।

এর ফলে নদীর পানির লেয়ার দিন দিন স্বাভাবিক অবস্থানের চেয়ে নিচে নেমে যাচ্ছে। নদী নির্ভরশীল ৮০০-৯০০ ফুটে স্থাপনকৃত নলকুপগুলোতে পানি উঠছে না।

এছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি মাছ উৎপাদনসহ নানা কাজে খেয়াল-খুশিমতো গভীর নলকূপ স্থাপন করায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে গেছে।

সরেজমিনে উপজেলার চারঘাট সদর,মিয়াপুর,থানাপাড়া, ইউসুফপুর, পিরোজপুর, শলুয়া,নিমপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ টিউবওয়েলে স্বাভাবিকের চেয়ে পানি কম উঠছে। দুই একটি টিউবয়েলে পানি উঠলেও একিবারেই নগন্য। যে পানি দিয়ে কোন খাওয়া দাওয়া তো দূরের কথা কাজই করা সম্ভব হচ্ছে না।

উপজেলার থানাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বেলী বেগম জানান, বাসায় পৌরসভার সাপ্লাই থাকলেও খাবার পানি, রান্না ও গোসলের জন্য নলকুপের পানির উপর নির্ভরশীল। এ বছর শুস্ক মৌসুমের এ সময় নলকুপে পানি উঠছে না।

এমনকি মটর বসালেও ঠিকমতো পানি না উঠায় চরম পানি সংকটের মধ্যে দিন পার করতে হয়। এমনি প্রচন্ড খড়া, তার উপর রোজায় পানি না থাকায় চরম দুর্বিসহ হয়ে উঠছে জনজীবন। একই কথা বলেন উপজেলা সদরের বাসিন্দা আফরোজা বেগম।

পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পানিবাহিত রোগ আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়েছে মিয়াপুর গ্রামের খোরশেদ আলম, রাজ্জাক আলীসহ মিয়াপুর গ্রামের বেশ কয়েকজন অধিবাসী।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, সারা বিশ্বেই আজ পানির সংকট। অতিরিক্ত তাপদাহ বৃদ্ধি হওয়ায় পানির এমন সংকট সৃষ্টি হয়ে আসছে। এখন এটা প্রকট আকার ধারন করেছে। এই খরা মৌসুমে পানির স্থিতি তল অনেক নিচে নেমে যায়।

নদী, খাল-বিলে পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। পানির স্তর প্রতিনিয়ত নিচে নেমে যায়। অপরিকল্পিত গভীর নলকূপ স্থাপন এবং একসঙ্গে অতিরিক্ত পানি উত্তোলন করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে