যেসব হাসপাতালে চালু হয়েছে ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস

প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৩; সময়: ১১:২৫ অপরাহ্ণ |
যেসব হাসপাতালে চালু হয়েছে ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস

পদ্মাটাইমস ডেস্ক: রোগীদের আরও বেশি স্বাস্থ্যসেবা দিতে বৃহস্পতিবার দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে চিকিৎসকদের ‘ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস’। প্রাথমিকভাবে ১২টি জেলা সদর হাসপাতাল এবং ৩৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি চিকিৎসকরা বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রোগী দেখবেন। এ ব্যবস্থা পর্যায়ক্রমে দেশের সব জেলা ও উপজেলার সরকারি হাসপাতালে চালু করা হবে।

বুধবার রাতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পাঠানো বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকা বিভাগের ১০ জেলা, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮ জেলা, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ জেলা, খুলনা বিভাগে ৪ জেলা, রাজশাহী বিভাগে ৩ জেলা, রংপুর বিভাগে ৫ জেলা, বরিশাল বিভাগে ৩ জেলা এবং সিলেট বিভাগের ৫ জেলায় বৃহস্পতিবার থেকে সরকারি চিকিৎসকদের ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

এ বিষয়ে বুধবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে দেশের প্রায় ৫০টি সরকারি হাসপাতালে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যমান সরকারি স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সরকারি চিকিৎসকরা রোগী দেখবেন। এ সময় রোগীরা তাদের বিভিন্ন রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করাতে পারবেন।

মন্ত্রী বলেন, আগে যেখানে বিকেলে বা সন্ধ্যায় চিকিৎসা নিতে মানুষকে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিকে সিরিয়াল দিয়ে বসে থাকতে হতো, এখন নির্দিষ্ট করা হাসপাতালগুলোতে দুপুরের পরও নামমাত্র ফি দিয়ে সরকারি চিকিৎসকদের রোগী দেখাতে পারবেন। এ অবস্থায় চিকিৎসাসেবা নিতে পারবেন লাখ লাখ সাধারণ মানুষ।

জাহিদ মালেক বলেন, বৃহস্পতিবার একযোগে এসব হাসপাতালে ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে। দেশের মানুষ এই সেবায় সন্তুষ্ট হলে, খুব দ্রুতই পর্যায়ক্রমে দেশের সব জেলা ও উপজেলার সরকারি হাসপাতালে এ ব্যবস্থা চালু করা হবে।

প্রাথমিকভাবে যেসব হাসপাতালে ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস চালু হবে তার মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১০ জেলা হচ্ছে- মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল, রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতাল, সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং শরিয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

রাজশাহী বিভাগে নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতাল, সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং রাজশাহীর পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

চট্টগ্রাম বিভাগের ৮ জেলায় প্রথম ধাপে এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এসবের মধ্যে আছে- চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বান্দরবানের লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ফেনী জেলায় সদর হাসপাতাল, ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল, পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতাল, নোয়াখালী সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর জেলা সদর হাসপাতাল, সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, শেরপুরের নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

খুলনা বিভাগে ঝিনাইদহ জেলা সদর হাসপাতাল, যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

রংপুর বিভাগে ঠাকুরগাঁও জেলা সদর হাসপাতাল, কুড়িগ্রাম জেলা সদর হাসপাতাল, দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রংপুরের বদরগঞ্জ, গঙ্গাচরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং নীলফামারীর ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

বরিশাল বিভাগে আগৈলঝড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ভোলা জেলা সদর হাসপাতাল, চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

সিলেট বিভাগে গোপালগঞ্জ ও বিশ্বনাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল, ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

চিকিৎসকের ফি’র ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিসে অধ্যাপকের ভিজিট হবে ৫০০ টাকা। এই টাকার মধ্যে অধ্যাপক পাবেন ৪০০ টাকা। চিকিৎসাসেবায় সহযোগিতাকারী ৫০ টাকা এবং সার্ভিস চার্জ ৫০ টাকা। সহযোগী অধ্যাপক বা সিনিয়র কলসালট্যান্টের ফি হবে ৪০০ টাকা। এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট সহযোগী অধ্যাপক বা সিনিয়র কলসালট্যান্ট পাবেন ৩০০ টাকা, চিকিৎসা সেবায় সহযোগিতাকারী পাবেন ৫০ টাকা আর সার্ভিস চার্জ ৫০ টাকা।

সহকারী অধ্যাপক বা জুনিয়র কনসালট্যান্ট অথবা পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রিধারী চিকিৎসকের ফি হবে ৩০০ টাকা। এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক পাবেন ২০০ টাকা, চিকিৎসা সেবায় সহযোগিতাকারী পাবেন ৫০ টাকা আর সার্ভিস চার্জ ৫০ টাকা।

এছাড়া, এমবিবিএস বা বিডিএস ও সমমানের চিকিৎসকদের ফি হবে ২০০ টাকা। এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার পাবেন ১৫০ টাকা। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসা সেবায় সহযোগিতাকারীর জন্য ২৫ টাকা এবং সার্ভিস চার্জ ২৫ টাকা ধার্য করা হয়েছে।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে