তানোরে মদ উদ্ধারের স্বাক্ষী না হওয়ায় ছাত্রকে পেটাল পুলিশ

প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৩; সময়: ১১:৫৭ অপরাহ্ণ |
তানোরে মদ উদ্ধারের স্বাক্ষী না হওয়ায় ছাত্রকে পেটাল পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরেন্দ্র অঞ্চল : রাজশাহীর মুন্ডুমালা পৌর এলাকার চোলায় মদ উদ্ধারের স্বাক্ষী হতে অপরগতা প্রকাশ করায় এক এইসএসসি পরীক্ষার্থীকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে মুন্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে এসআই রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে।

এঘটনায় ঐ শিক্ষার্থীর পিতা বিনা দোষে ছেলে মার-ধরের ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে এসআই রবিউলের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার বিকালে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এ পরীক্ষার্থীর নাম মেহেদি হাসান (১৭) তিনি পৌর এলাকার মাহালিপাড়া জিয়াউর রহমানের পুত্র। তিনি চলতি বছর মুন্ডুমালা ফজর আলী মোল্লা ডিগ্রি কলেজ হতে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিবেন।

লিখিত অভিযোগ ও মেহেদির পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোমবার সাড়ে তিনটার সময় নিজ বাড়ি হতে রাস্তা দিয়ে হেটে মুন্ডুমালা বাজারে আসছিলেন মেহেদি হাসান (১৭)। এমন সময় মাহালিপাড়া নামক স্থানে মুন্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে এসআই রবিউল ইসলাম ও এএসআই সুলতান এইচএসসি পরীক্ষার্থী মেহেদি হাসানের পথ আটকিয়ে তাকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেন।

তিনি সাদা কাগজে কেন স্বাকর করবেন তা জানতে চান। এ সময় এসআই রবিউল বলেন এখানে চোলায় মদ উদ্ধার করা হয়েছে। তোকে স্বাক্ষী হতে হবে। এমন সময় মেহেদি বলেন, তিনি একজন ছাত্র তা ছাড়া তিনি কোন মদ উদ্ধার করতেও দেখেনি তাই তিনি স্বাক্ষী হতে অপরগতা জানান।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই রবিউল তার কলার ধরে প্রথমে দুই তিন গালে থাপ্পর লাগান। এতে না হয়ে পাশে দোকানের কাছে পড়ে থাকা একটি মোটা পাইপ এনে তাকে বেদম পিটাতে থাকেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থী রোজা অবস্থায় থাকায় তিনি সেখানে গ্যান শূণ হতে পড়েন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তার পরিবারের সদস্যগণ তাকে উদ্ধার করে মুন্ডুমালা স্থানীয় চিকিৎস কাছে চিকিৎসা করান।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, সোমবার দুপুরে এসআই রবিউল সহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য মাহালিপাড়ায় অভিযান চালাই। এ অভিযানে এক আদিবাসি বৃদ্ধ মহিলা ঘর হতে কয়েক লিটার চোলায় মদ উদ্ধার করেন। পরে অন্য একবাড়িতে অভিযান চালায় সেখানে কোন মদ উদ্ধার করতে পারেনি। তবুও সে বাড়ি অন্য মহিলাকে আটক করে চালান দেয়ার ভয় দেখায় এবং ২০ হাজার টাকা দাবি করেন এসআই রবিউল। বিষয় গুলো সচোখে দিখেছেন স্থানীয়রা। তাই মিথ্যে স্বাক্ষী হতে চাইন কেউ।

মেহেদির পিতা জিয়াউর রহমান বলেন, আমার ছেলে একজন শিক্ষার্থী তাকে বিনা দোষে এসআই রবিউল যে ভাবে জখম করেছে তা এভাবে গরুকে মারেনা কেউ। তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে লাল হয়ে দাগ পরে গেছে। আমি ঘটনার পর তার ছেলের চিকিৎসা সেরে স্থানীয় গণ্যমান্য ও পৌরসভার মেয়রকে তার শরীরের বিভিন্ন স্থান দেখায়ছি। মঙ্গলবার বিকালে ছেলে মারের প্রতিকার চেয়ে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দিয়েছি।

মুন্ডুমালা পৌর মেয়র সাইদুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান কে অন্যায় ভাবে পিটিয়েছে এসআই রবিউল শুধু তাই নয়। পৌর এলাকা সহ আসপাশে এমন আরো ঘটনা রয়েছে এসআই রবিউল এর বিরুদ্ধে। তিনি সাধারণ মানুষের সাথে খারাচ আচারণ করেন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আসামি ছেড়ে দেওয়া সহ এমন অনেক অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। তিনি এলাকায় অনেকটা বেপরোয়া হয়ে চলাফেরা করেন।

এসব বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই রবিউল ইসলাম বলেন,মেহেদি হাসানকে প্রথমে ভাল ভাবে বোঝানো হয়েছে। সে চোলায় মদ উদ্ধার করতে দেখে ও কেন স্বাক্ষী দিবেনা। তাই বড় ভাই হিসাবে শাষন করে দুইটি থাপ্পর মেরেছেন মাত্র।

এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার রাত ৮ টার সময় তানোর থানা ওসি কামরুজ্জামান মিয়া একাধিবার মোবাইল করতে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে