নওগাঁর সুলতানার পোস্টমর্টেম রিপোর্ট হাইকোর্টে তলব

প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৩; সময়: ১১:২৫ অপরাহ্ণ |
নওগাঁর সুলতানার পোস্টমর্টেম রিপোর্ট হাইকোর্টে তলব

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : নওগাঁ শহর থেকে আটকের পর র‌্যাবের হেফাজতে সুলতানা জেসমিন (৪৫) নামের এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় পোস্টমর্টেম রিপোর্ট তলব করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সুলতানা জেসমিন র‌্যাবের কোন কর্মকর্তার অধীনে ছিলেন তাদের নামের তালিকা আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে এ রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন অ্যাডভোকেট মনোজ কুমার ভৌমিক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নওগাঁয় র‌্যাবের হেফাজতে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা সুলতানা জেসমিন (৪৫) নামে ওই নারীকে হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন করায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার স্বজনেরা।

গত শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারীর মৃত্যু হয়। এর আগে গত বুধবার (২২ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের নওযোয়ান মাঠের সামনে থেকে ওই নারীকে আটক করে র‌্যাব।

সুলতানা জেসমিন সদর উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সহকারী পদে কর্মরত ছিলেন। শহরের জনকল্যাণ মহল্লায় ভাড়া থাকতেন তিনি। স্থানীয় ও মৃতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার সকালে প্রতিদিনের মতো অফিসে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে রওনা হন সুলতানা জেসমিন। পথে সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের নওযোয়ান মাঠের সামনে পৌঁছালে সাদা রঙের মাইক্রোবাসযোগে এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায় র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা।

আটকের প্রায় ২ ঘণ্টা পর দুপুরে সুলতানাকে অসুস্থ অবস্থায় নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে র‌্যাব। সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন থাকার পর তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। রামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়।

সুলতানা জেসমিনের মামা নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক মন্টু বলেন, বুধবার আমার ভাগ্নি অফিসে যাওয়ার জন্য বের হলে রাস্তা থেকে র‌্যাব তাকে আটক করে নিয়ে যায়। তবে তাকে কোথায় নেওয়া হয়েছিল তা তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।

দুপুরে ভাগ্নির মোবাইল ফোন থেকে আমাদের নাতি সৈকতকে কল করে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে আসতে বলে র‌্যাব। বিষয়টি জানার পর দুপুর ২টার দিকে সেখানে গিয়ে দেখি ভাগ্নিকে স্যালাইন দেওয়া অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে। পাশেই র‌্যাবের সদস্যরা ছিল। সুলতানা কথা বলতে পারছিল না। পরে তার অবস্থা গুরুতর হলে সন্ধ্যায় তাকে রামেকে নেওয়া হয়। রামেকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে সুলতানার মৃত্যু হয়।

তিনি আরও বলেন, সুলতানা শুক্রবার মারা গেলেও ওইদিন রামেকে তার পোস্টমর্টেম হয়নি। এজন্য পরের দিন র‌্যাব তার পোস্টমর্টেম করে আমাদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে। আমার ভাগ্নির মরদেহ দাফন হওয়া পর্যন্ত র‌্যাব প্রকাশ্যে এবং গোপনে আমাদের চারিদিকে অবস্থান করেছে। সুলতানাকে সকালে তুলে নেয় আর দুপুরেই হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাই ভেতরে একটা সন্দেহ থেকেই যায়। এ সময়ের মধ্যে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়ে থাকতে পারে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে