আরএমপি পুলিশ সার্জেন্ট এসে রুমাল দিয়ে বেঁধে দিলেন আহত নারীর ক্ষতস্থান

প্রকাশিত: মার্চ ২২, ২০২৩; সময়: ১১:০৯ অপরাহ্ণ |
আরএমপি পুলিশ সার্জেন্ট এসে রুমাল দিয়ে বেঁধে দিলেন আহত নারীর ক্ষতস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশ সার্জেন্ট গিয়ে বেঁধে দিলেন আহত নারীর পায়ের ক্ষতস্থান। গত রোববার দুপুরে রাজশাহী নগরের সিঅ্যান্ডবি মোড়ে পুলিশ সার্জেন্ট গিয়ে বেঁধে দিলেন আহত নারীর পায়ের ক্ষতস্থান। দুর্ঘটনার শিকার হয়ে পড়ে গিয়ে কাতরাচ্ছিলেন এক নারী। উৎসুক মানুষেরা জড়োও হয়েছিলেন। তবে সবাই ব্যস্ত ছিলেন ছবি ও ভিডিও করাতে। দূর থেকে বিষয়টি চোখে পড়ে ট্রাফিক সার্জেন্ট রজন কুমার ঘোষের। তিনি এসে তাৎক্ষণিক রুমাল দিয়ে পায়ের ক্ষতস্থান বেঁধে দেন। ঘটনাটি ঘটেছে গত রোববার দুপুরে রাজশাহী নগরের সিঅ্যান্ডবি মোড়ে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, রাজশাহী নগরের সিঅ্যান্ডবি মোড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে বসে আছেন এক নারী। তিনি ফোনে তাঁর বাবার সঙ্গে কথা বলছিলেন। ফোনে তিনি বারবার বলছিলেন, তাঁর কিছু হয়নি। ভিড় ঠেলে গিয়ে পুলিশ সার্জেন্ট রুমাল বের করে ডান পায়ের ক্ষতস্থান বেঁধে দিচ্ছেন। এ সময় পাশ থেকে একজন এসে ওই নারীর একটি পা ধরেন। আরেকজন ফোন নিয়ে ওই নারীর বাবাকে জানান, তাঁর গুরুতর কিছু হয়নি।

ট্রাফিক সার্জেন্ট রজন কুমার ঘোষ বলেন, তিনি ওই জায়গা থেকে একটু দূরে দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ সেখান থেকে চোখে পড়ে কিছু মানুষ এক জায়গায় জড়ো হয়ে আছেন। পরে সেখানে এগিয়ে গিয়ে বুঝতে পারেন, ওই নারী দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। তিনি সেখানে ভিড় ঠেলে গিয়ে ওই নারীর পা প্রথমে পানি দিয়ে ধুয়ে রুমাল দিয়ে বেঁধে দেন। পরে তাঁর এক আত্মীয়ের মাধ্যমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

রজন কুমার আরও বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটলেই মানুষ এগিয়ে না এসে ভিডিও করেন, ছবি তোলেন। সেদিন সিঅ্যান্ডবি মোড়েও তা-ই হয়েছিল। কেউ সেভাবে এগিয়ে আসছিলেন না।

ওই ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্টের কাছে আহত নারীর ফোন নম্বর ছিল। সেই নম্বরে কল করে জানা যায়, ওই দিনের দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন নগরের কোর্ট স্টেশন এলাকার মো. আব্বাস আলীর মেয়ে মোছা. পাপিয়া খাতুন (২১)। তিনি ওই এলাকা থেকে নগরের বালিয়াপুকুর ছোট বটতলা এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছিলেন। সিঅ্যান্ডবি মোড়ে তাঁর রিকশাকে একটি মোটরসাইকেল ধাক্কা দিলে তিনিসহ চালক পড়ে যান। রিকশার একটি অংশ পাপিয়ার ওপর পড়ে যায়। এতে ডান পায়ে আঘাত পান। ব্যাটারিচালিত রিকশার ব্যাটারি থেকে তরল পড়ে পায়ের একটি অংশ পুড়েও যায়।

পাপিয়া বলেন, তখন আশপাশে মানুষ ছিলেন, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেননি। অনেকে ভিডিও করছিলেন। এতে তিনি ঘাবড়ে যান। পরে দূর থেকে পুলিশের সার্জেন্ট এগিয়ে আসেন। তিনি এসে পানি দিয়ে পা ধুয়ে ক্ষতস্থান বেঁধে দেন। পরে তিনিই হাসপাতালে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। তবে ওই সময় তাঁর চাচা ঘটনাস্থলে আসেন। তিনিই হাসপাতালে নিয়ে যান।

পাপিয়া আরও বলেন, তিনি চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। দুর্ঘটনায় তাঁর ডান পায়ে আটটি সেলাই পড়েছে। এ ছাড়া শরীরে কিছু জায়গায় আঘাত পেয়েছেন। তবে পেটের বাচ্চার কোনো ক্ষতি হয়নি। সেদিন দুর্ঘটনার পর তিনি ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। ওই সার্জেন্ট এখনো খোঁজ নিচ্ছেন। তিনি এগিয়ে না এলে বিপদ হতে পারত।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে