কমছে পাট রফতানি, লোকসানে চাষি

প্রকাশিত: মার্চ ১৫, ২০২৩; সময়: ২:৫৫ অপরাহ্ণ |
কমছে পাট রফতানি, লোকসানে চাষি

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : প্রধান আমদানিকারক দেশগুলো বাংলাদেশে থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য কেনা কমিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে দেশেও কমেছে পাটের ব্যবহার। এতে চাহিদার পাশাপাশি কমেছে দাম। ফলে প্রতি মণ পাট বিক্রিতে অন্তত ৫০০ টাকা পর্যন্ত লোকসান হচ্ছে বলে দাবি করছেন নাটোরের পাট চাষিরা।

২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় পাট রফতানি বন্ধ রয়েছে। এদিকে সর্বশেষ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তুরস্কে ভূমিকম্পের পর সেই দেশের ক্রেতারাও পণ্যটি কিনছেন না।

এ বিষয়ে পাট ব্যবসায়ী রাসেল শেখ বলেন, ‘বাজার দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে। সবশেষ তুরস্কে ভূমিকম্প হওয়ার পর পণ্যগুলো সেখানে যেতে পারছে না।’

পাট না কেনার বিষয়ে রফতানিকারক অজয় আগরওয়ালা বলেন, ‘যে পাট আছে সেগুলোই বিক্রি করতে পারছি না। ফলে আমাদের নতুন করে পাট কেনার সুযোগ হচ্ছে না। যদি বিভিন্ন দেশ থেকে ক্রয়াদেশ আসে, তাহলে আবার পাট বেচাকেনা শুরু হবে।’

পাটকল মালিকরা বলছেন, ভারতের অতিরিক্ত কর আরোপের কারণে দেশটিতে উৎপাদিত পাটের সুতা ও বস্তার রফতানি কমে গেছে। এ ছাড়া দেশে ১৮টি পণ্য পাটের ব্যাগে বিক্রির নির্দেশনা থাকলেও সেটি বাস্তবায়ন না হওয়ায় অভ্যন্তরীণ বাজারেও বিক্রি কমেছে।

এ বিষয়ে নাটোর জুট মিলের সিইও সহোন কুমার আগরওয়ালা বলেন, ‘আমরা সঠিকভাবে ভারতেও রফতানি করতে পারছি না, আবার দেশেও সঠিকভাবে বিক্রি করতে পারছি না। কাজেই মিল প্রতিষ্ঠান গড়ে আমরা এক মহাবিপদের মধ্যে রয়েছি।’

এদিকে দেশ ও বিদেশে চাহিদা কমায় নাটোরের হাটে গত ৩ সপ্তাহের ব্যবধানে পাটের দাম পড়ে গেছে। কৃষকরা বলছেন, মণপ্রতি উৎপাদন খরচ ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা হলেও বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়। কাজেই তাদের দাবি, লাভ দূরে থাক, এতে মণপ্রতি লোকসান হচ্ছে ৫০০ টাকা।

এক কৃষক বলেন, পাটের ন্যায্য দাম পাচ্ছি না। গত বছর ৩ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে পাট বিক্রি করেছি। কিন্তু এবার ২ হাজার ২০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। আমরা ব্যাপক লোকসানে আছি।

এ অবস্থায় পাটচাষিদের লাভবান করতে দেশে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি রফতানির নতুন গন্তব্য সৃষ্টির বিকল্প নেই বলে মনে করেন নাটোরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ইয়াছিন আলী।

তিনি বলেন, ‘পাটজাত পণ্যের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে পাটের রফতানিও বাড়াতে হবে। এতে বাজারে পাটের দাম বাড়বে বলে আশা করছি।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে জেলার সাড়ে ৩১ হাজার হেক্টর জমিতে ৮৯ হাজার ৫২৮ টন পাট উৎপাদিত হয়েছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে