কচুয়ায় সূর্যমুখী ফুলে ছেয়ে গেছে মাঠ, কৃষকের মুখে হাসি

প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০২৩; সময়: ৬:১৬ অপরাহ্ণ |
খবর > কৃষি
কচুয়ায় সূর্যমুখী ফুলে ছেয়ে গেছে মাঠ, কৃষকের মুখে হাসি

মাসুদ রানা,কচুয়া : চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার বিতারা ইউনিয়নের বুধুন্ডা এলাকায় মনির হোসেন নামে এক কৃষক প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী ফুলের চাষ করছেন। আর এসব মাঠ জুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহে চোখ জুড়াতে আসছেন শতশত দর্শনার্থীরা।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সূর্যমুখী ফুল চাষ করতে কম সময় আর স্বল্প খরচে ভালো লাভ পাওয়ায় সুযোগ রয়েছে। তাতে প্রান্তিক কৃষকদের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। একজন কৃষককে দেখে অন্য কৃষকরাও চাষাবাদে আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও জানা গেছে।

কচুয়া উপজেলার কৃষকেরা ক্রমশ সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদে উৎসাহী হয়ে উঠছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সর্বত্র চাষাবাদ করা হচ্ছে এ ফুলের। মাঠে মাঠে ছড়িয়ে পড়েছে ফুলের সৌন্দর্য। ভ্রমর এসে খেলা করছে ফুলে ফুলে। অনেক দূর থেকে লোকজন এসে দেখতে ভিড় করছে বিকেল বেলায়। এবার ফলন ও ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে আনন্দের হাসি। এ উপজেলায় জমি নিচু হওয়ায় এখানকার জমিতে কেবল ধান,ভুট্টা,আলু ও পাট চাষে আগ্রহ ছিল এখানকার কৃষকদের। সাম্প্রতিকালে উপজেলার কৃষকেরা সুর্যমুখী চাষ শুরু করেছে। এ বছর এ উপজেলায় প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিতারা ইউনিয়নের বুধুন্ডা গ্রামের মৃত নুরু মিয়া হাজীর ছেলে মনির হোসেন নামে এক কৃষক ১ একর ৫ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। ইতোমধ্যেই গাছে ফুল ধরতে শুরু করেছে। এক একটি ফুল যেন হাসিমুখে সূর্যের আলো ছড়াচ্ছে। মনির হোসেনের সফলতা দেখে অন্যান্য চাষীরাও এবার সূর্যমুখী ফুলের চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন বলেও জানা গেছে।

দর্শনার্থীরা জানান, সূর্যমুখী ফুল দেখতে অনেক সুন্দর। রাস্তার পাশে হওয়ায় অনেক সময় গাড়ি থেকে নেমে ফটো উঠানোর জন্য সূর্যমুখী ফুল ক্ষেতে যাই। পরিবার পরিজন নিয়ে বিকালে বেলায় সূর্যমুখীর সাথে সেলফি কিংবা আনন্দ ভাগাভাগি করেন বলেও জানান তারা।

সূর্যমুখী ফুল চাষী মনির হোসেন বলেন, সূর্যমূখী ফুলের চাষে বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা মাত্র। কর্তন করতে কিছু টাকা খরচ হবে। কৃষি অফিস ও উদ্দীপনের সার্বিক সহযোগিতায় নিয়ে আমি সফলতা পেয়েছি। এবছর আমি ১ একর ৫ শতাংশ জমিতে সূর্যমূখী ফুলের আবাদ করেছি। ফুলের তেলের স্বাদ ভালো ও স্বাস্থের জন্য উপকারী হওয়ায় স্থানীয় বাজারে চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। আমি এতে অনেক বেশি খুশী। সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরো ব্যাপক সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদে উৎসাহী হয়ে উঠবেন স্থানীয় কৃষকরা।

কচুয়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সোফায়েল হোসেন বলেন, এ বছর সূর্যমুখী প্রনোদনা কর্মসূচির আওতায় ফসল করতে বীজসহ সার্বিক সহযোগীতা করা হয়েছে। এই সূর্যমুখী ফুলের বাগানে প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা ভীড় করছেন, তারা ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপলোড দিয়ে সুন্দরভাবে প্রচার করছেন। এ বছর উপজেলায় ৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ দিনদিন ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এখানকার সুর্যমুখীর তেল স্থানীয়দের যেমন চাহিদা মেটাচ্ছে তেমনি এখানকার এ তেল বাজারজাত হচ্ছে আশপাশে বিভিন্ন স্থানে। অন্য ফসলের চেয়ে কম খরচ আর অধিক লাভ হওয়ায় স্থানীয কৃষকরা অনেক বেশি খুশী। তাদের চাষাবাদের কারণে অন্যদেরও সূর্যমুখীর চাষ করার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠেছেন অনেক কৃষক। সুর্যমুখী ফুলের চাষাবাদে সার্বক্ষণিক থেকে সহযোগীতা করে চাষীদের পরার্মশ দেয়া হয়েছে।

ছবি: কচুয়ার বাতাপুকুরিয়া এলাকায় বিস্তর্ণ সূর্যমুখী ফুল ক্ষেত, পাশে কৃষক মনির হোসেন।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে