মহাদেবপুরে আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে ইউপির জমিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ

প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২৩; সময়: ২:১৯ অপরাহ্ণ |
মহাদেবপুরে আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে ইউপির জমিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, মহাদেবপুর : নওগাঁর মহাদেবপুরে আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে রাইগাঁ ইউনিয়ন পরিষদের জমি দখল করে জোরপূর্বকভাবে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার রাইগাঁ ইউনিয়নে। এ ঘটনায় ইউপি কার্যালয়ের সচিব শাহ আলম বাদী হয়ে ওই অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মাতাজিহাট এলাকায় রাইগাঁ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় সংলগ্ন ৬ শতাংশ জমি ইউনিয়ন পরিষদের মালিকানাধীন। যা জনগণের যাতায়াতের রাস্তা হিসেবে রেকর্ডভুক্ত। সম্প্রতি সেই জমি দখল করে রাইগাঁ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক ফেরদৌস আলম কাজল দোকান ঘর নির্মাণের উদ্দেশ্যে পাকা স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এতে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ বাধা দিলেও তিনি জোরপূর্বক নির্মাণ কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন।

স্থানীয় ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার দ্বারা প্রাথমিকভাবে পরিমাপ করে দেখা যায় ওই জমি ইউনিয়ন পরিষদের। সেখানে স্থাপনা নির্মাণ করা হলে জনগণের চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। তারপরেও তিনি স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে সেখানে স্থাপনা নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখেন। নির্মাণাধীন স্থাপনের পাশেই ইউনিয়ন পরিষদের নামে থাকা আরও ৬ শতাংশ জমি দখল করে স্থানীয় আতোয়ার রহমান দুইটি ও সামসুজ্জামান (সামু) একটি দোকানঘর নির্মাণ করেন।

সরেজমিনে রাইগাঁ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন পূর্বদিকে পাকা স্থাপনা নির্মাণের জন্য সিসি পিলার তোলার কাজ চলছে এবং বিরোধপূর্ণ জায়গাটি ইটের দেয়াল তুলে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। মাতাজীহাট বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারী ফেরদৌস আলম রাইগাঁ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মনজুর আলম মনজুর চাচাতো ভাই। তাঁর ইন্ধনেই তিনি জায়গা দখল করে স্থাপনা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়া তিনি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তার চাচা আতোয়ার রহমান ও চাচাতো ভাই সামসুজ্জামান পরিষদের জায়গা দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেন।

এ বিষয়ে রাইগাঁ ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান বলেন, চেয়ারম্যান হিসেবে জনগণের স্বার্থরক্ষা করা আমার সর্বোচ্চ দায়িত্ব। দখল করা জায়গা উদ্ধারের জন্য আমার যা যা করণীয় তাই করব। দখলকারীদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে না। ওই জমি উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে ফেরদৌস আলম বলেন, যে জমিটি নিয়ে বিরোধ হচ্ছে সেটি তাদের বাপ-দাদাদের আমলে কেনা। পৈত্রিক সূত্রে জায়গাটি তিনি, তার চাচা ও চাচাতো ভাইয়েরা পেয়ে দীর্ঘদিন থেকে ভোগদখল করে আসছেন। এখন ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ বলছে, সেই জমিটি নাকি তাদের। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে ডেকেছিলেন।

বিরোধপূর্ণ জায়গার সুরাহার জন্য অধিকতর তদন্ত ও মাপজোক করা হবে বলেও জানিয়ে তিনি বলেন, ওই জমিটি ইউনিয়ন পরিষদের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুসরাত জাহান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর বিরোধপূর্ণ জায়গাটি মাপজোক করে দেখা হয়েছে। পরিমাপ করে দখল করা জায়গার মধ্যে যতটুকু ইউনিয়নের পরিষদের জমি পাওয়া গেছে তা দখলমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে