প্রতারণা করে বিয়ে, এসআইয়ের বাসায় প্রবাসী স্ত্রীর অবস্থান

প্রকাশিত: মার্চ ৮, ২০২৩; সময়: ৭:৪৭ অপরাহ্ণ |
প্রতারণা করে বিয়ে, এসআইয়ের বাসায় প্রবাসী স্ত্রীর অবস্থান

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ভোলায় পুলিশের এক সাব-ইন্সপেক্টরের (এসআই) বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, যৌতুক গ্রহণ, ভরণপোষণ না দেয়া, মামলা তদন্তে পুলিশী ক্ষমতার অবৈধ ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ করেছেন তারই স্ত্রী।

বুধবার (৮ মার্চ) সকালে অভিযুক্ত সাব-ইন্সপেক্টর আওলাদ হোসেনের ভাড়াটিয়া বাসায় অবস্থান করে সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেন তাঁর স্ত্রী রিনা বেগম।

রিনা বেগমের অবস্থান টের পাওয়ায় বাসার দরজা-জানালা বন্ধ করে ঘরে তালা মেরে পালিয়ে যায় আওলাদের পরিবার। যাঁর ফলে তাঁর পরিবারের কারো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

অভিযুক্ত আওলাদ হোসেন ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের বালিয়াকান্দি গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে এবং পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর। তাঁর বিপি নম্বর-৯৬২১২৩৮৪৯০। তাঁর বাবা-মা বর্তমানে ভোলা শহরের অফিসার পাড়া এলাকার একটি ভাড়াটিয়া বাসায় থাকেন। সেখানেই তাঁর স্ত্রী অবস্থান নেন। আওলাদের স্ত্রী রিনা বেগম মানিকগঞ্জ জেলার বাইচাইল গ্রামের বাসিন্দা।

আওলাদ রিনা বেগমের দ্বিতীয় স্বামী এবং দুই সন্তানের জননী। প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে আওলাদ রিনা বেগমকে বিয়ে করেন। রিনা বেগমের প্রথম স্বামী সৌদি প্রবাসী।

রিনা বেগম সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী পুলিশের এসআই আওলাদ হোসেন বর্তমানে বরিশাল পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত রয়েছেন। মানিকগঞ্জ আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে করা যৌতুক মামলায় কয়েকদিন আগে আওলাদকে মুলাদি থানা থেকে ক্লোজড করে বরিশাল পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।

গত একবছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে আওলাদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এরপর তাঁরা দু’জন প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বিয়ে করার আগে রাজধানীর একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে গোপনে ভিডিও চিত্র ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করে তাকে আওলাদ বিয়ে করেন৷ তাঁর কাছ থেকে প্রায় ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়।

চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জে ৫ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করেন তাঁরা। কিন্তু বিয়ের কয়েকদিন পর যৌতুকের জন্য তাকে অমানবিক নির্যাতন করতে থাকে। নির্যাতনের ঘটনায় তিনি আওলাদের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জ আদালতে একটি যৌতুক আরেকটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

আওলাদ এ ক্ষোভে তাকে ভরণপোষণ দিচ্ছেন না। তাই বাধ্য হয়ে তিনি তাঁর ভোলার বাসায় অবস্থান নেন। কিন্তু তাঁর অবস্থানের খবর পেয়ে বাসায় তালা মেরে পালিয়ে যায় আওলাদের পরিবার।

রিনা বেগম আরও অভিযোগ করেন, কোথাও তিনি ন্যায় বিচার পাচ্ছেন না। তাই বাধ্য কয়েকদিন আগে তিনি বরিশালের অতিরিক্ত ডিআইজির অফিস কক্ষে তিনি কীটনাশক পান করেন। এরপর পুলিশ তাকে উদ্ধার করে শের ই বাংলা (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করেন।

ধনিয়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন জানান, আওলাদ তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে তাঁর স্ত্রী নিয়ে আর সংসার করতে চাচ্ছে না। তাঁর স্ত্রীর অবস্থানের খবর পেয়ে আওলাদের পরিবার বাসায় তালা মেরে পালিয়ে গেছে। আওলাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়টি দেখা হবে।

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির জানান, সাব-ইন্সপেক্টেরের স্ত্রী তাঁর ভাড়াটিয়া বাসায় এসে অবস্থান করছে এমন ঘটনা পুলিশের জানা নেই। কোনো অভিযোগ পেলে পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে