যে ভাষণ ইতিহাসে অমরকাব্য
হাজারো ছিনিমিনি-ষড়যন্ত্র বিশ্বাস ঘাতকতা
৭০’এর ডিসেম্বর জাতীয় পরিষদ নির্বাচন-
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংখ্যা গরিষ্ঠতা;
১৬৯’র বিজয় ১৬৭ আসন।
গদি ছাড়বে না তারা- প্রহসন আর প্রহসন
ষড়যন্ত্র ইয়াহিয়া-ভুট্টো; সামরিক চক্রের
গণতন্ত্রের লঙ্ঘন
ঘোলাটে পাকিস্তান, দোলাচলে বিশ্ব বিবেক।
দেয়ালে ঠেকেছে পিঠ, বাঙ্গালীর ছুটেছে নিদ
হৃদয়ে রক্ত ক্ষরণ- তীব্র ক্ষোভে
ধ্বর্যের বাধ ভেঙ্গে খান খান।
ধর্মের বোরখার ভাজে
শাসকদের সুচতুর ফাঁদে;
বাঙ্গালীর স্বাধীনতা কাঁদে।
অধিকারের নামে কালক্ষেপন
অকাতরে ছাত্র-জনতার মৃত্যুবরণ
শহীদদের স্মরণসভা।
বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা- রক্ত ঝরছে রক্ত ঝরবে
স্বাধীনতার আন্দোলন চলবে- –
বাঙালী রক্তে ভিজাবে মাটি-
এ মাটি সোনার চেয়েই খাঁটি
স্বাধীন পেতে বাঙালিই লড়বে।
অনেক চড়াই উতরাই অবশেষে ৭ মার্চ
জনসভা-স্বতঃস্ফূর্ত হৃদয়ে উৎসারিত,
স্বতন্ত্র জাতিসত্ত্বা বিনির্মাণে উপস্থিত
১০ লাখ ছাত্র-জনতা
চেতনা বিশ্বাসের বাসনা স্বাধীনতার-
প্রত্যাশা মানচিত্রের; সৃষ্টিতে বাংলাদেশ।
লোকারন্য রেসকোর্স ময়দান
অপেক্ষা জাতির পিতার
বাঙ্গালীর মানসপুত্রের এক অনন্য ভাষণ।
এ যে ভাষণ নয়-অমরকাব্য
অসাধারণ সম্মোহনী বাগ্মীতা-
কি দৃঢ়তা দূরদর্শিতা; জাতির ঐক্যবদ্ধে
সক্ষমতায় এ ভাষণ ছিল ব্যতিক্রম;
এ যে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ।
যে ভাষণ লক্ষ কোটি বার
উচ্চারিত হয়; উচ্চারিত হচ্ছে-হবে
বারবার শুনি, বাঙালির
আবেগ স্বপ্ন আর আকাক্সক্ষায় গাঁথা-
এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
এ ভাষণ সৃষ্টির অমিয় বাণী
এ ভাষণ মুক্তির বজ্র ধ্বনি
এভাষণ পরাধিনতার শিকল ছিঁড়ে
স্বাধীনতার বহিৃশিখা।
এ ভাষণের আঙ্গিক মাত্রিকের মর্মকথা
ইতিহাসের যেন এক অমোঘ ব্যাথা
যে ভাষণে মজেছিল সংগ্রামী জনতা।
যে ভাষণের অগণিত ভক্ত
শতকোটি মানুষের ভালবাসায় সিক্ত;
সাক্ষী ভুটান-ভারত-মস্কোর।
যে ভাষণ ১৩ ভাষায় অনুদৃত
এ ভাষণ বিশ্বে নন্দিত স্বীকৃতি ইউনেস্কোর।
লেখক-
মাহবুব দুলাল
কবি, সাংবাদিক ও কলামিস্ট