সন্ধ্যে হলেই ছিনতাইয়ের টার্গেট হন রাবি শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: মার্চ ৪, ২০২৩; সময়: ১২:৩০ pm |
সন্ধ্যে হলেই ছিনতাইয়ের টার্গেট হন রাবি শিক্ষার্থীরা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, রাবি: গত কয়েকদিনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বেশ কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। সন্ধ্যে হলেই কয়েকটি চক্র শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই করে। এসময় টাকা, মোবাইল ও অন্য মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই হবার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা গুরুতরভাবে আহতও হচ্ছেন।

গত শুক্রবার রাতে ক্যাম্পাস সংলগ্ন দুই পুলিশ ফাঁড়ির মাঝামাঝি স্থানে ছিনতাই ও ছুরিকাঘাতের শিকার হন এক শিক্ষার্থী। এই ঘটনায় নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে মধ্যরাতে প্রশাসন ভবনের সামনে বিক্ষোভ পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, সন্ধ্যে হলেই ছিনতাই চক্রের সদস্যরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচণ্ডি, বুধপাড়া, চারুকলা, কাজলা, বিনোদপুর প্রভৃতি এলাকায় তারা শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে।

এছাড়া ক্যাম্পাসের ভেতরেও আবাসিক হল সংলগ্ন নির্জন স্থানগুলোতে তারা বাইক নিয়েও শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে। এসব ছিনতাই ও বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ রোধে গতবছর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গাড়িতে স্টিকার লাগানোর প্রক্রিয়া জোরদার করে। এছাড়া প্রক্টরিয়াল বডির টহলও বাড়ায়। তাসত্ত্বেও ছিনতাইয়ের ঘটনা কমেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৩ মার্চ রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ এলাকায় আবদুল্লাহ আল জায়ের নামের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীকে পথরোধ করে কয়েকজন যুবক। এসময় তারা তার কাছ থেকে মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় তাকে ছুরিকাঘাত করে ছিনতাইকারীরা। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি সকালে ক্যাম্পাসের ভেতর এক নারীর ফোন ছিনতাইয়ের শিকার হন। এসময় ওই নারীর চিৎকার শুনে ক্যাম্পাস থেকে কয়েক কিলোমিটার গাড়ি চালিয়ে ছিনতাইকারীকে ধাওয়া করেন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক নূর-এ-সাবিহা। পরে তাকে নগরীর ধরমপুর এলাকায় গিয়ে আটক করেন তিনি। এসময় ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে ছিনতাইকারীকে পুলিশে সোপর্দ করেন।

এদিকে চলতি বছর ২২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীর ফোন ছিনতাই করে পালানোর সময় বিশ^বিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলের সামনে শিক্ষার্থীদের হাতে দুই ছিনতাইকারী আটক হয়। শিক্ষার্থীরা তাদের গণধোলাই দিয়ে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পুড়িয়ে দেয়। পরে তাদের পুলিশে সোপর্দ করে শিক্ষার্থীরা।

এছাড়া গতবছর ২২ জুলাই নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় ভর্তিচ্ছুকে আবাসিক হোটেলে রাখতে গিয়ে ছিনতাই ও মারধরের শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের দুলাল চন্দ্র নামের এক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ছিনতাইকারীদের দ্বারা মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ওই শিক্ষার্থী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।

এসব ঘটনায় শঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলছেন, ক্যাম্পাসের প্রতিটি ফটক ও সংলগ্ন এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি আছে, পুলিশের গাড়ি এসব এলাকায় টহল দিয়ে বেড়ায়। তা সত্ত্বেও কিভাবে এত ছিনতাই ঘটে? প্রক্টরিয়াল বডির কাজ কি শুধু সন্ধ্যার পর টর্চ মেরে গাছতলায় প্রেমিকযুগলদের আটক করা? বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই অবিলম্বে ছিনতাই চক্রের সদস্যদের সমূলে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
topউপরে