নিষ্ক্রিয়দের সক্রিয় করতে কঠোর হচ্ছে বিএনপি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩; সময়: ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ |
নিষ্ক্রিয়দের সক্রিয় করতে কঠোর হচ্ছে বিএনপি

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : আন্দোলন সফলে নিষ্ক্রিয়দের সক্রিয় করার উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। এজন্য কয়েকটি ক্ষেত্রে কঠোর হচ্ছে দলটি। আন্দোলনের কর্মসূচিতে কার কী ভূমিকা তা নজরদারি করা হচ্ছে।

অতীতে বিএনপির ব্যানারে নির্বাচন করেছিলেন বা জনপ্রতিনিধি হয়েছিলেন তাদের মধ্যে যারা লাপাত্তা সেসব নেতাদের তালিকা করা হচ্ছে। এছাড়া অভিমানসহ নানা কারণে যারা নিষ্ক্রিয় তাদের তালিকাও করছে দলটি। অনেক নেতাকে পাঠানো হয়েছে কারণ দর্শানোর নোটিশ। আবার অনেককে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে।

বিএনপির সিনিয়র এক নেতা বলেন, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে এবার বিএনপি আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি সতর্ক। সুদিনে থাকবেন আর দুর্দিনে পাওয়া যাবে না- এমন নেতাকর্মীর বিএনপিতে দরকার নেই। চলমান আন্দোলনেও বিএনপির ১৭ জন নেতা নিহত হয়েছেন।

একটি অংশ রাজপথে রক্ত ঝরাবে। আরেকটি অংশ শুধু নির্বাচনের সময় দেখা যাবে- এমন আর হতে দেওয়া যাবে না। শুধু সক্রিয়রাই দল ও অঙ্গ দলের পদ পাবেন এবং পরবর্তীতে নির্বাচনে বিএনপির পক্ষে মাঠে নামার সুযোগ পাবেন।

বিএনপি সূত্র মতে, মূল ও অঙ্গ দলের সর্বস্তরের নেতাদের কর্মসূচিতে রাখতে এরই মধ্যে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- প্রত্যেককে কর্মসূচিতে এসে সংশ্লিষ্ট শাখার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের কাছে হাজিরা দিতে হবে, কর্মসূচিতে না এলে এর সুনির্দিষ্ট কারণ আগে থেকেই জানাতে হবে, কর্মসূচির সময় অন্য কোনো কাজে থাকলে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে, এ ক্ষেত্রে গাফিলতির প্রমাণ সাপেক্ষে শোকজ নোটিশ দেওয়া হবে। ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য না হলে দল থেকে বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্তে নেওয়া হবে।

সূত্র মতে, কর্মসূচিতে গাফিলতির জন্য এরই মধ্যে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে বিএনপি। এসব ঘটনা তদন্তে কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সম্প্রতি কেন্দ্র ঘোষিত পদযাত্রা না করে বনভোজনে আনন্দে মেতে থাকায় কেন্দ্রীয় নেতা চাঁদপুরের ডক্টর মোহাম্মদ জালাল উদ্দিনসহ ৯ জন স্থানীয় নেতাকে শোকজ (কারণ দর্শানো) করা হয়েছে। শোকজ পাওয়া নেতারা হলেন- মতলব উত্তর বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক সরকার হান্নান, সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক জিতু, সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মঞ্জুর আমিন স্বপন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলমগীর সরকার, মতলব দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি এনামুল হক বাদল, সাবেক সভাপতি এমদাদ হোসেন খান, ছেঙ্গারচর পৌর বিএনপির সভাপতি নান্নু মিয়া প্রধান ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান। এই ঘটনায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারাদেশে তৃণমূল পর্যায়ে সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয়দের শনাক্ত এবং আন্দোলন বেগবান করতে দল সমর্থিত সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেছেন দলের হাইকমান্ড। ২০০১ সাল থেকে সারাদেশে বিভিন্ন সময়ে দল সমর্থিত প্রায় তিন হাজার ইউপি চেয়ারম্যান রয়েছেন।

এসব জনপ্রতিনিধিদের ১০ বিভাগ অনুযায়ী মতবিনিময় হবে। এরই মধ্যে রংপুর বিভাগের বর্তমান ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে। আজ (২৭) সোমবার খুলনা বিভাগ, ২৮ ফেব্রম্নয়ারি সিলেট ও খুলনা বিভাগ, ১ মার্চ বরিশাল, ২ মার্চ ঢাকা বিভাগ, ৫ মার্চ কুমিলস্না ও ফরিদপুর, ১৪ মার্চ চট্টগ্রাম এবং ১৬ মার্চ রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

জানা গেছে, এ জনপ্রতিনিধিদের জনপ্রিয়তা আর পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে চলমান আন্দোলনে আরও জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে চায় বিএনপি। পাশাপাশি তাদের মধ্যে কারা এখনো দলীয় কাজে সক্রিয় বা নিষ্ক্রিয় সে তথ্যও নেওয়া হবে। এছাড়া তৃনমূলের এসব নেতাদের মাধ্যমে মাঠ পর্যাযের সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয়দের তথ্য নিয়ে নিষ্ক্রিয়দের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে এসব বৈঠকের পাশাপাশি জেলা, উপজেলা এবং পৌর শাখা কমিটির নেতাকর্মীদের নিয়েও পৃথকভাবে বৈঠক হবে। সেসব মতবিনিময় থেকে নিষ্ক্রিয়দের বিষয়ে তথ্য নিয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিষ্ক্রিয়দের বিষয়ে দলীয় কার্যক্রম প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি সক্রিয় নেতাকর্মীর সংখ্যাই বেশি। এর প্রমাণ পাওয়া যায় বছরের পর বছর ধরে অত্যাচার-নির্যাতনের পরও নেতাকর্মীরা মাটি কামড়ে, ধৈর্য ধরে জাতীয়তাবাদী আদর্শকে ধরে রেখেছেন। আগামীতেও তারা থাকবেন। এত বড় দলে নিষ্ক্রিয় কিছু নেতাকর্মী থাকা অস্বাভাবিক নয়। তাদের বিষয়ে সাংগঠনিক নিয়ম মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্র- যায়যায়দিন

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে