কুষ্টিয়ায় ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে কটুক্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার স্কুল শিক্ষকের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩; সময়: ৮:৫৭ অপরাহ্ণ |
কুষ্টিয়ায় ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে কটুক্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার স্কুল শিক্ষকের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে কথিত কটুক্তির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া স্কুল শিক্ষক আবু সালেহের বাড়িতে এবার হামলা ও ভাংচুর চালানো হয়েছে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা এ হামলায় চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে।

কুমারখালী উপজেলার কয়া চাইল্ড হ্যাভেন বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সালেহের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত ২২ জানুয়ারী থানায় মামলা করেন ইসলামী আন্দোলন কুষ্টিয়া জেলা শাখার সহ সভাপতি এনামুল হক। তবে ওই স্কুলের শিক্ষক ও শির্ক্ষীদের অভিযোগ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা শাখার সদস্য হতে না চাওয়া এবং স্কুলে মাহফিল করতে না দেয়ায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুষ্টিয়া জেলার সহ সভাপতি এনামুল হক ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে। তারা জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষক স্কুল ড্রেসের সঙ্গে ম্যাচিং কওে বোরকা বানাতে বলেছিলেন।

একটি চক্র সেই কথা বিকৃত ভাবে প্রচার কওে মানুষকে ক্ষেপিয়ে তুলছেন। তাদের দাবি শিক্ষক কোন ছাত্রীকে বোরকা পরে স্কুলে আসতে নিষেধ করেননি। ওই বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি এমপিওভুক্ত হয়েছে। ওই বিদ্যালয়ে বেশ কিছু পদে লোক নিয়োগ দেওয়া হবে। কয়েকদিন আগে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বিদ্যালয়ে এসেছিলেন। ওই জনপ্রতিনিধি কর্তৃপক্ষকে তার পছন্দের লোক নিতে চাপাচাপি করে। কিন্তু প্রধান শিক্ষকসহ অন্যরা সে প্রস্তাবে রাজি হননি। এর জের ধরে প্রধান শিক্ষককে ইসলাম অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।

এদিকে ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে শুক্রবার জুমার নামাজের পর কয়া ইউনিয়ন ইসলামী আন্দোলন ও ওলামা মাসায়েক আইম্মা পরিষদের আয়েজনে ঘোড়াই দারুল উলূম হাফেজিয়া ও এতিমখানা চত্বরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে কয়া ওলামা মাসায়েক আইম্মা পরিষদের সভাপতি মুফতি আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে প্রমূখ। তারা শিক্ষকের দ্রুত ফাঁসির দাবি জানান। তা না হলে দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন তারা। পরে সমাবেশ শেষে ওই শিক্ষককের বাড়িতে হামলা চালায় উচৃঙ্খল কর্মীরা।

তবে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিন বলছেন, তাঁর স্বামী ইসলাম অবমানকর কোন কথা বলেননি। তাকে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। শিক্ষকরে ছেলে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন।

কুমারখালী থানার ওসি মো. মোহসীন হোসাইন বলেন, পুলিশকে না জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। পুলিশ সেখানে ছিলো। পরে একটি চক্র আসামীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেন তিনি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে