রাঙামাটিতে নৌকা ডুবিতে নিহত জয়পুরহাটের দুই বোন

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩; সময়: ৮:২৯ অপরাহ্ণ |
রাঙামাটিতে নৌকা ডুবিতে নিহত জয়পুরহাটের দুই বোন

নিজস্ব প্রতিবেদক, জয়পুরহাট : রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে সোমবার সন্ধ্যায় নৌকা ডুবিতে নিহত দুই নারীর বাড়ি জয়পুরহাটে পাঁচবিবি উপজেলার রতনপুর হিন্দুপাড়া গ্রামে নয়। নিহত দুই নারী আপন বোন। বড় বোনকে বাঁচাতে ছোট বোনও হ্রদের পানিতে ডুবে মারা যান।

নিহত পুষ্পা রানী চক্রবতী (৭০) দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলা সদরের গোপাল চক্রবতীর স্ত্রী ও চায়না রানী চক্রবর্তী (৫০) রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বগেরহাট গ্রামের বৈদ্যনাথ স্ত্রী। রতনপুর গ্রামের নিত্যানন্দ মাস্টার তাঁদের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পষ্পা রানী চক্রবতী ও চায়না রানী দুজন আপন বোন। কাপ্তাই হ্রদে তাঁরা নৌকা ডুবিতে মারা গেছেন। রতনপুর গ্রামের নিশিকান্ত বর্মণ তাঁদের দুলাভাই।

মঙ্গলবার দুপুরে রতনপুর হিন্দুপাড়া গ্রামে গিয়ে জানা গেছে, ওই গ্রামের ৫৬ জনসহ নারী-পুরুষ ও শিশুসহ মোট ৬৯ জন শীব চতুদর্শীতে পূর্জা-অর্চনা করতে সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ মন্দিরে যান। গত শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায় রতনপুর বাজার থেকে একটি বাস চড়ে রওনা দেন তাঁরা। রোববার দুপুরে বাসটি সীতাকুণ্ডে পৌঁছায়। এরপর তাঁরা সেখানে পূর্জা-অর্চনা করেন। সোমবার বিকলে ৫৬ জন নারী-পুরুষ রাঙামাটি ঝুলন্ত সেতু দেখে নৌকায় করে ফিরছিলেন। নৌকাটি ডিসি বাংলো এলাকায় এসে গাছের গুড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে নৌকা হ্রদের পানিতে ঢুবে যায়। নৌকার যাত্রী পুষ্পা রানী চক্রবর্তী ও চায়না রানী চক্রবর্তী পানিতে ডুবে মারা যান।

ওই নৌকায় ছিলেন রতনপুর গ্রামের সুজন চন্দ্র বর্মন। তিনি মঙ্গলবার বিকেলে মুঠোফোনে বলেন, আমরা সবাই রাঙামাটি ঝুলন্ত সেতু দেখে নৌকায় ফিরছিলাম। ডিসি বাংলোর কাছাকাছি এসে গাছের গুড়ি ধাক্কায় নৌকার তলার একটি কাঠ খুলে ভেতরে পানি ঢুকতে শুরু করে। তখন নৌকার গতি বাড়ানোর সঙ্গে-সঙ্গে নৌকার তলার আরও কাঠ খুলে যায়। মুহুতে মধ্যে নৌকাটি ডুবে যায়। পুষ্পা রানীকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর ছোট বোন চায়না রানীও পানিতে ডুবে যায়। পরে তাঁদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় আরও তিন জন আহত হন। তাঁরা চিকিৎসা নিয়ে এখন সুস্থ আছেন। রাঙামাটি থেকে রাতেই দুই বোনের লাশ তাঁদের স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

সুজয় চন্দ্র বর্মণ বর্মণ গ্রামের রাস্তায় দাঁড়িয়ে মুঠোফোনে কারও সঙ্গে কথা বলে ওই ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছিলেন। তিনি বলেন, আমার বাবা বিপুল চন্দ্র বর্মণ ও মা শ্রীমতি ষষ্ঠী রানীও নৌকায় ছিলেন। আমার মা-বাবাসহ গ্রামের অন্যরা এখন সুস্থ রয়েছেন। নৌকা ডুবিতে প্রায় সবার মুঠোফোন পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে। একারণে যোগাযােগের একটু কষ্ট হচ্ছিল।

পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, রতনপুর গ্রামের সনাতন ধম্বালম্বী লোকজনেরা রাঙামাটি গিয়েছিলেন। সেখানকার ঝুলন্ত সেতু দেখে ফেরার পথে নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় দুই জন নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি। তাঁরা রতনপুর গ্রামে আত্বীয় বাড়িতে এসে সেখানে গিয়েছিলেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে