বাগমারায় ভুমিহীনদের মধ্যে সরকারী বাড়ি বিতরণে ছালচতুরির অভিযোগ

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩; সময়: ৬:৩৩ অপরাহ্ণ |
বাগমারায় ভুমিহীনদের মধ্যে সরকারী বাড়ি বিতরণে ছালচতুরির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর বাগমারায় ঝিকরা ইউনিয়নে সরকারী ভাবে বরাদ্দকৃত ভুমিহীনদের বাড়ি বিতরনে ছালচতুরির অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রশাসন ও উপসহকারী কমিশনার ভুমির বিরুদ্ধে। তবে উপসহকারী কমিশনার ভুমি মোস্তাফিজুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। যা করার তা উপজেলা থেকেই করা হবে তিনি জানিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নের ঝাড়গ্রাম শহরতলিতে সরকারী ১ নং খাস খতিয়ানের ৯৮৬১ দাগে ৪৫ ডেঃ জমি বাংলাদেশ সরকার বাহাদুরের নামে রের্কড রয়েছে। গত ২০০১ সালে জামায়াত-বিএনপি’র জোট সরকারের আমলে ক্ষমতার দাফটে ও প্রতারোনার মাধ্যমে তৎকালীন বিএনপি’র প্রভাবশালী নেতা ফরহাদ মন্ডল, হায়দার আলী ও হাবিবুর রহমান সরকারী সম্পত্তি গুলো ৯৯ বছরের জন্য বন্দোবস্ত নিয়ে ভুমিহীনদের উচ্ছেদের পায়তারা শুরু করেছিলেন।

সেই সময়ে সেখানে বসবাসরত আট ভুমিহীন পরিবারের পক্ষে প্রতিবন্ধী খাজা ময়েন উদ্দীন বাদী হয়ে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবর তথ্য গোপনের মাধ্যমে সরকারী সম্পত্তি জবর দখলের অভিযোগ আনেন। দীর্ঘ বার বছর পর বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক মহদোয়গন অভিযোগের সত্যতা পেয়ে অভিযুক্তদের নামে সরকারী লীজ বাতিল করেন এবং বসবাসরত ভুমিহীনদের মধ্যে জমি গুলো লীজ দানের জন্য নির্দেশ দেন। সেই মোতাবেক তৎকালীন উপসহকারী কমিশনার ভুমি তদন্তের মাধ্যমে ভুমিহীনদের পক্ষে তদন্ত প্রতিবেদন সহকারী কমিশনারের দপ্তরে পাঠিয়ে দেন। রহস্যজনক কারনে ভুমিহীনদের কাজ গুলো আটকে যায়। তখন থেকেই ভুমিহীন পরিবার গুলো সেখানেই বসবাস করে আসছেন।

বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ব্যাপী অসহায় ও ভুমিহীনদের স্থায়ী বসবাসের জন্য সরকারী জমি গুলোতে বাড়ি নির্মানের মাধ্যমে বিতরন শুরু করেন। তারই ধারা বাহিকতায় উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নের ঝাড়গ্রামের শহরতলিতে অসহায় ভুমিহীনদের জন্য ১৪ পরিবারের বসবাসের জন্য বাড়ি নির্মান শুরু করেন উপজেলা প্রশাসন। বাড়ি নির্মান শুরুর পর পরই উপসহকারী কমিশনার ভুমি মোস্তাফিজুর রহমান এলাকায় কিচু টাউট বাটপারদের সাথে হাত মিলিয়ে অর্থ উপার্জন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার ভুমিকে মিথ্যা তথ্যা দিয়ে অধিকাংশ ভুমিহীনদের উচ্ছেদের চেষ্টা করছেন বলে ভুমিহীনরা অভিযোগ করেছেন।

ঘটনাটির সতত্যতা যাচাই-বাচাই করার জন্য স্থানীয় সংবাদ কর্মী ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহদোয় উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাদের কোন সহযোগীতা পায়নি। উপজেলা প্রশাসন সরকারী বাড়ি গুলোর কাদের মধ্যে বিতরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাও তারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সংবাদ কর্মীদের জানান নি। এমন ঘটনার পর থেকেই ভুমিহীনদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

নাম জানাতে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভুমিহীন অভিযোগ করেন, সরকারী ওই সম্পতি উদ্ধারের জন্য আমাদেরকে বেশ কয়েকবার মিথ্যা মামলায় জেল হাজতে যেতে হয়েছে। অথচ আজ সরকার ভুমিহীনদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করলেও কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার কারনে সেখান থেকে ছিটকে পড়ছে ভুমিহীনরা। তারা অবিলম্বে তদন্তের মাধ্যমে পূর্বের বসবাসরত ভুমিহীনদের মধ্যে সরকারের তৈরী করা বাড়ি গুলো বিতরনের দাবী জানিয়েছেন তারা।

উপজেলা প্রশাসনের এমন কর্মকান্ড দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঝিকরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। তিনি তালিকাটা বার বার প্রকাশের দাবী জানলেও কোন কর্ণপাত করেন নি উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা করা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) সুমন চৌধুরী ভুমিহীনদের বাড়ি বিতরনের নামের তালিকা তৈরীর কথা স্বীকার করলেও তিনি বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
অপর দিকে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রথমে কর্ণপাত না করলেও পরে তিনি প্রকৃত ভুমিহীনদের মধ্যে বাড়ি গুলো বিতরন করা হবে বলে জানিয়েছেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে