ক্যানসার প্রতিরোধে টিকা তৈরির উদ্যোগ জোরদারের আহ্বান

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৩; সময়: ২:০৬ অপরাহ্ণ |
ক্যানসার প্রতিরোধে টিকা তৈরির উদ্যোগ জোরদারের আহ্বান

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : দেশে ক্যানসারে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ওয়ার্ল্ড চাইল্ড ক্যানসারের হিসাব মতে, বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৪ লাখ শিশু ক্যানসারে আক্রান্ত হয়।

দ্রুততম সময়ে শনাক্ত করা গেলে এবং উন্নত চিকিৎসা পেলে শতকরা ৭০ ভাগ রোগী সেরে উঠতে পারে। এই অবস্থায় দেশে ক্যানসার প্রতিরোধে গবেষণা কার্যক্রমকে গতিশীল করার পাশাপাশি টিকা তৈরির উদ্যোগ জোরদার করার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু হেমাটোলজি বিভাগের উদ্যোগে ‌‘বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন ইন চিলড্রেন অ্যান্ড ক্যানসার ভ্যাকসিন ইন চাইল্ডহুড ম্যালিগন্যান্সি’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

চিকিৎসকরা বলেন, শিশুদের সাধারণত ব্লাড ক্যানসার বা লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার হার অন্যান্য ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়া থেকে বেশি। তবে এছাড়াও কিডনির টিউমার, লিভারের টিউমার, চোখের টিউমার, ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত হওয়া শিশুর সংখ্যাও কম নয়।

তবে, উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে উন্নত দেশগুলোতে ক্যানসার থেকে সেরে ওঠা রোগীর হার শতকরা প্রায় ৮০-৮৫ ভাগ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্বখ্যাত স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে ক্যানসার প্রতিরোধে ভ্যাকসিন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে।

একই সঙ্গে যাতে করে ক্যানসার প্রতিরোধ করা যায় সে বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে। বিশেষ করে স্টেমসেল থেরাপি নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু হেমাটোলজি অনকোলজি বিভাগের চিকিৎসকরা ৩১ শয্যার ওয়ার্ড নিয়ে ১০ হাজার শিশু রোগীকে সেবা দিয়েছেন, যা প্রশংসার দাবি রাখে।

সেমিনারে ‘বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন ইন চিলড্রেন’ শিরোনামে প্রবন্ধ পেশ করেন ভারতের নারায়না হেলথ সিটি থেকে আসা সিনিয়র কনসাল্টেন্ট ডা. সুনিল ভাট।

এছাড়াও ‘ক্যানসার ভ্যাক্সিন ইন চাইল্ডহুড ম্যালিগনেন্সি’ শিরোনামে প্রবন্ধ পেশ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু হেমাটোলজি অ্যান্ড অনকোলজি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রেনেসা ইসলাম।

ডা. সুনিল ভাট বলেন, বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশনবা স্টেম সেল প্রতিস্থাপন হলো একটি প্রক্রিয়া যা রোগাগ্রস্ত বোন ম্যারো, রক্ত সৃষ্টিকারী স্বাস্থ্যকর স্টেম সেল দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়। বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন মূলত ২ ধরনের।

একটি অটোলোগাস ট্রান্সপ্ল্যান্ট (নিজস্ব শরীর থেকে স্টেম সেল সংগ্রহ করে) এবং অন্যটি অ্যালোজেনিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট (দাতার থেকে স্টেম সেল সংগ্রহ করা হয়)।

তিনি বলেন, ফিরে আসা লিম্ফোসাইটিক লিউকেমিয়া, গুরুতর লিম্ফোসাইটিক লিউকেমিয়া, রিফ্র্যাক্টরি হেমাটোলজিকাল ম্যালিগনেন্সি, নিউরোব্লাস্টোমাসহ আরও কিছু গুরুতর ক্যানসারের চিকিৎসায় বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন বা স্টেম সেল প্রতিস্থাপন একটি কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি।

উন্নত বিশ্বে এই পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে চিকিৎসা সফলতার হার বেড়ে গেছে। বাংলাদেশেও এই পদ্ধতি ব্যবহার করে চিকিৎসা শুরু হয়েছে । কিন্তু তা এখনো পুরোদমে শুরু করা যায়নি বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল, হল প্রোভোস্ট অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান, শিশু বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মানিক কুমার তালুকদার প্রমুখসহ ওই বিভাগের শিক্ষক, চিকিৎসক, রেসিডেন্ট, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিশু হেমাটোলি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এটিএম আতিকুর রহমান।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে