চাঁদাবাজি ও অপহরণ মামলায় রাজশাহীতে ছাত্রলীগ নেতা কারাগারে

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩; সময়: ৯:৫৫ অপরাহ্ণ |
চাঁদাবাজি ও অপহরণ মামলায় রাজশাহীতে ছাত্রলীগ নেতা কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে চাঁদাবাজি ও অপহরণের মামলায় পারভেজ আলী হৃদয় নামে ছাত্রলীগের আরেক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার বিকেলে রাজশাহী নগর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর বিকেলেই তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পারভেজ আলী হৃদয় রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের উপবিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক। ৮ ফেব্রুয়ারি একই মামলায় রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক শাহ আলম ওরফে রাতুল (২৪), নূর মোহাম্মদ ওরফে নাবিল (২৩) ও কামরান সিদ্দিক ওরফে রাশেদকে (২৩) গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা তিনজনই রুয়েটের কেমিক্যাল অ্যান্ড ফুড প্রসেসিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী। ইতিমধ্যে শাহ আলমকে রুয়েট ছাত্রলীগের কমিটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাঁকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।

পারভেজ আলীর বিষয়ে জানতে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুম মুবিন সবুজকে কল দিলে তিনি কল কেটে দেন। এ ব্যাপারে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, তিনি ঘটনাটি শোনেননি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না।

নগরের মতিহার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, রাজশাহীর ইনস্টিটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বাদী হয়ে মামলা করেছিলেন। সেখানে তিনজনের নামসহ মোট পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছিল। এর মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি একজনকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তার পারভেজকে গতকাল শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার এজাহারে নাজমুল উল্লেখ করেছেন, ৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার দিকে তিনি তাঁর বান্ধবীকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইবলিশ চত্বরসংলগ্ন আমতলার পুকুরপাড়ে বসে ছিলেন। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে শাহ আলম, নূর মোহাম্মদ ও কামরান নামে তিন তরুণ পুকুরপাড়ে এসে নাজমুলের কাছে পরিচয় জানতে চান। নাজমুল ক্যাম্পাসে ঘুরতে এসেছেন জানালে ওই তিন তরুণ নাজমুলের বান্ধবীকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে নাজমুলের বান্ধবীকে তাঁরা ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে বলেন। পরে ওই তিন তরুণ নাজমুলকে জোর করে মোটরসাইকেলে তুলে রুয়েটে নিয়ে যান। সেখানে নাজমুলের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। নাজমুল চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিন তরুণ মতিহার থানাসংলগ্ন সুইটের মোড়ে একটি গ্যারেজে নিয়ে যান। সেখানে অজ্ঞাতনামা আরও দুই তরুণ তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হন। তাঁরা বিভিন্নভাবে নাজমুলকে হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। একপর্যায়ে নাজমুল বাধ্য হয়ে তাঁর কয়েকজন বন্ধুকে টাকার জন্য ফোন করেন।

কিন্তু অনেক সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও টাকা না পাঠানোয় নাজমুলকে পাইপ দিয়ে মারধর করা হয়। পরে নাজমুল বাধ্য হয়ে তাঁর বাবাকে ফোন করেন। এ সময় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁর বাবার সঙ্গে কথা বলে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এর মধ্যে নাজমুলের বন্ধুরা অপহরণের বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নাজমুলকে উদ্ধার করে এবং রাতুল, নাবিল ও রাশেদকে আটক করে। পরে নাজমুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে গতকাল বিকেলে মামলা করেন নাজমুল।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে