শুধু তথ্যপ্রযুক্তি নয়, গোয়েন্দা জালকেও সচল রাখতে বললেন আইজিপি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩; সময়: ৭:৫৪ অপরাহ্ণ |
শুধু তথ্যপ্রযুক্তি নয়, গোয়েন্দা জালকেও সচল রাখতে বললেন আইজিপি

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : সিআইডি সদর দপ্তরে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ও ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন প্রশিক্ষণ কোর্স সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। সুফল থাকলেও তদন্তে পুলিশের ইউনিটগুলোর বেশি তথ্যপ্রযুক্তির দিকে ঝুঁকে যাওয়ার সমালোচনা করলেন পুলিশ প্রধান আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

তিনি বলেন, একটা মামলা পেলেই সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল কোথায় আছে, তথ্যপ্রযুক্তির মধ্যে সে আছে কি না তা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ি।এ সময় পুলিশ কর্মকর্তাদের গোয়েন্দা জাল, ম্যানুয়াল সোর্সও সচল রাখতে বলেছেন তিনি। সিআইডি সদর দপ্তরে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ও ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন প্রশিক্ষণ কোর্স সমাপনীর সনদ বিতরণ আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মামুন বলেন, একটা মামলা পেলেই সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল কোথায় আছে, তথ্যপ্রযুক্তির মধ্যে সে আছে কি না, ডিজিটাল ডিভাইস আছে কি না, শুধু এই সব জিনিসগুলো নিয়ে আমরা ঝাঁপিয়ে পড়ি। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের যে গোয়েন্দা জাল, ম্যানুয়াল সোর্স, ইন্টেলিজেন্স এটাও অ্যাকটিভ (সচল) রাখতে হবে। দুই দিক থেকে কাজ না করলে। এখন দেখা যায়, একজন মোবাইল নিয়ে অপরাধ করে সেটা ফেলে দেয়, নম্বরও ফেলে দেয়। আরেকটা মোবাইল কেনে, নতুন অপরাধে জড়ায়। সে অবস্থায় আমরা এসেছি। আমরা যেভাবে অপরাধ মোকাবিলা পরিকল্পনা করি, অপরাধীদেরও নিজস্ব পরিকল্পনা আছে। আমাদের কাজই নতুন পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের পরাভূত করা।

সাইবার অপরাধ ও প্রযুক্তির মাধ্যমে সফলতা আসার বিষয়ে আইজিপি বলেন, তথ্য প্রযুক্তি দিয়ে ক্লুলেস মামলাগুলোর তদন্তে সফলতা আসছে। আগে ৯০ ভাগ মামলা ডিটেক্ট করতে পারিনি। এখন ৯৫ ভাগ মামলা তদন্তে সফল হচ্ছি। ৫ ভাগ বিভিন্ন সমস্যার কারণে হয় না। রহস্য উদ্ঘাটনের হার বেড়েছে। এটা অবশ্যই ইতিবাচক দিক।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাইবার অপরাধ নিয়ে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত অভিযোগ আসছে। সামাজিক অপরাধ বেড়েছে, অর্থনৈতিক অপরাধও বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সেই রিজার্ভ চুরির ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমরা হয়ত সজাগ ছিলাম না। কোনো ঘাটতি ছিল। সে জন্যই আমাদের এত বড় ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। সেসব বিষয় মাথায় রেখে আমরা দক্ষ জনবল তৈরি করছি। অর্থপাচার এখন আমাদের কাছে বড় অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সিআইডিসহ পুলিশের সব ইউনিটকেই আরও উন্নত করে আমরা গড়ে তুলছি। যাতে আমাদের যে অগ্রগতি তা বিনষ্ট না হয়। টেকসই উন্নয়নের জন্য, টেকসই নিরাপত্তা দরকার। সে লক্ষ্যেই আমরা পুলিশকে তৈরি করতে চাচ্ছি।

সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান, স্পেশাল ব্রাঞ্চে (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলাম অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

সিআইডির তদন্ত কার্যক্রমকে গতিশীল করতে ডিএনএ ফরেনসিক ল্যাবের আধুনিকায়ন, ক্রাইম সিন ইউনিটের কার্যক্রম বৃদ্ধি, অর্গানোগ্রাম অনুমোদন এবং হাজতখানা নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সিআইডি প্রধান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

সিআইডি জানায়, গত বছরের অক্টোবর থেকে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ও ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন কোর্সের কার্যক্রম শুরু করা হয়। চার মাসব্যাপী এই কোর্সে সাতটি ব্যাচের মাধ্যমে সাড়ে ৪০০ পুলিশ কর্মকর্তাকে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ও ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

সমাপনী অনুষ্ঠানে মেধাতালিকার ভিত্তিতে ২১ জন এবং চারজন প্রশিক্ষককে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। এই অনুষ্ঠানে সিআইডির কর্মকর্তাদের উপস্থাপিত গবেষণা সমূহের সারসংক্ষেপ সংবলিত স্মার্ট অনুসন্ধানের ‘রিসার্চ অ্যাবস্ট্রাক্টের’ মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে