পুঠিয়ায় গাছে গাছে আসতে গুরু করেছে আমের মুকুল

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩; সময়: ৭:৩১ অপরাহ্ণ |
খবর > কৃষি
পুঠিয়ায় গাছে গাছে আসতে গুরু করেছে আমের মুকুল

মোহাম্মদ আলী, পুঠিয়া : মাঘ মাস শুরুর পর থেকেই রাজশাহীর পুঠিয়ায় আম বাগান মালিকরা গাছে ভাল মুকুল আসার আশায় শুরু করেছে পরিচর্যা। তাতেই ব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন রাজশাহীর আম চাষীরা।

মুকুল আসার আগ মুহূর্তে গাছের প্রয়োজন পড়ে বাড়তি যত্নের। তাতেই গাছে টিকে থাকে মুকুল। তাই ছোট-বড় আম বাগান পরিচর্যায় চাষিরা বর্তমানে বেশ ব্যস্ত সময়ই পার করছেন। বাগানের আগাছা পরিষ্কারসহ পোকা দমনে করছেন কীটনাশক স্প্রে। এই পরিচর্যায় দূর হবে পোকা, তেমনি গাছে মিলবে স্বাস্থ্যকর মুকুল। ফলনও আসবে ভাল। এবং ইতিমধ্যেই আগের পরিচর্ষার গাছ গুলোতে এসেছে স্বাস্থ্যকর মুকুল।

এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পুঠিয়ায় প্রায় ১ হাজার ৫৪৭ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ৫৫০টি ছোট বড় আম বাগান রয়েছে। ফজলি, লখনা, গোপালভোগ, আশ্বিনা, হিমসাগর, দুধসরসহ প্রায় ১৫ এর অধিক জাতের আম চাষ করা হয়ে থাকে এ অঞ্চলে। কিন্তু গতবছর গুলোতে চাষীরা আমের দাম কম পাওয়ায় গাছ কেটে পুকুর বা অন্য ফসল করার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ফলে পূর্বের তুলনায় কমেছে বেশ কিছু বাগান।

আগাম বাগান পরিচর্যার বিষয়ে বানেশ্বর এলাকার আম চাষী শফিকুল ইসলাম জানান, মাঘের শুরুতেই আম গাছের পরিচর্যা শুরু করেছি কারণ মাঘের শেষেই গাছে মুকুল আশার সম্ভাবনা রয়েছে। অধিক মুনাফার আশায় মৌসুমের আগেই বাগানের যত্ন নেয়া শুরু করেছি। তাই বানেশ্বর মসজিদ মার্কেটের মেসার্স হামীম এন্টারপ্রাইজ থেকে কিনে ইতোমধ্যে ২.৫ ইসি ফিডল্যাম, সালফার শাহেন ও ইমিডাক্লোপ্রিড ইমিডর ওষুধ স্প্রে করছি। এতে গাছে অধিক মুকুল আসার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এবং আগের পরিচর্যা করা গাছ গুলোতে খুব ভাল মুকুল আসতে গুরু করেছে। আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভাল ফলন হবে।

পুঠিয়ার ধলাট গ্রামের আম চাষী আব্দুল মমিন বলেন, দিনে সূর্যের তেজ আর রাতে পড়ছে শীত। এমন আবহাওয়াতে গাছের পরিচর্যা প্রয়োজন। তাই গাছে মুকুল ভালো আসতে ও টিকিয়ে রাখতে এবং ভাল ফলন পাবার আশায় বাগান পরিচর্যা করছি।

শীতে আমের মুকুলের পরিচর্যার ও অন্যান্য সমস্যা কাটিয়ে ওঠার বিষয়ে ডিপ্লোমা কৃষিবিদ মোহাম্মদ আলী জানান, ‘মুকুল যখন বের হয়েছে কিন্তু ফোটে নাই তখন ইমিডাক্লোপ্রিড অথবা মেনকোজেব গ্রুপের ডাইরেল এম-৪৫ নামের ওষধ প্রতি ১ লিটার পানিতে ২ গ্রাম মিশিয়ে গাছের মুকুলে স্প্রে করতে হয়। এতে গাছে হপার পোকা বা এ্যানথ্রাকনোজ নামের রোগ থেকে মুক্তি মেলে। এটি দ্বিতীয়বার দিতে হবে যখন গাছের মুকুল মার্বেল সাইজের সেপ নিবে তখন।’

তিনি আরও বলেন, ‘কুয়াশা খুব বেশী হলে বা দীর্ঘদিন থাকলে ‘পাউডারি মিলডিউ’ নামে রোগ হতে পারে। এ রোগের কারণে পুষ্প মঞ্জুরীতে সাদা পাউডারের মত গুঁড়ো দেখা যায়। এবং পড়ে কালো বর্ণধারণ করে ফুল ও ফল ঝরে পড়ে। এ থেকে রোধ পেতে ছত্রাকনাশক ওষুধ প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম মিশিয়ে ব্যবহার করলে তা থেকে রক্ষা মিলবে।’

এবিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার হুসনা ইয়াসমিন জানান, এখনও সব গাছে মুকুল আসতে শুরু করেনি কিছু গাছে মুকুল আসছে। এবার আবহাওয়া ভালো আছে । সামনের দিনগুলোতে আবহাওয়া ভাল থাকলে এবারও আমের বাম্পার ফলন হবে আশা করা যায়। চাষী ভাইয়েরা গাছে পরিচর্যা করছে আমাদের উপসহকারীরাসহ আমিও সবসময় মাঠে তদারকি করছি।

এ বিষয়ে চাষিদের বাগান পরিচর্যায় আগে থেকেই ঔষুধ স্প্রে করার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। আর চাষিরাও অধিক ফলনের আশায় সে অনুযায়ী কাজও শুরু করেছেন।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে