হিরো আলমকে নিয়ে কাদের-ফখরুলের ‘বাহাস’

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩; সময়: ১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ |
হিরো আলমকে নিয়ে কাদের-ফখরুলের ‘বাহাস’

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : নানা কারণে আলোচিত-সমালোচিত হিরো আলম নতুন করে আলোচনায় এসেছেন উপনির্বাচনে একযোগে দুটি সংসদীয় আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এর আগে দেশের ইতিহাসে কেউ একসঙ্গে দুটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হননি। দুটি আসনের মধ্যে একটিতে মাত্র হাজারখানেক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়ে তিনি সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি করেছেন।

এবার সেই হিরো আলমকে নিয়ে পরস্পরে বাকযুদ্ধে মেতে উঠলেন দেশের প্রধান দুটি দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বিএনপির মহাসচিব।

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীতে নিজ নিজ দলের কর্মসূচিতে দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কথা বলেছেন হিরো আলমকে নিয়ে। ওবায়দুল কাদের বলেছেন হিরো আলম হেরে যাওয়ায় ফখরুলের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। আর ফখরুল বললেন, এক হিরো আলমের কাছেই ক্ষমতাসীন দল অসহায় হয়ে পড়েছে।

বিকেলে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের সরকারি হাসপাতাল মাঠে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হিরো আলম প্রসঙ্গে ফখরুলের দেওয়া বক্তব্যের জবাব দেন কাদের। তিনি বলেন, ‘ফখরুল সাহেব বললেন, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে হিরো আলমকে হারানো হয়েছে। হায়রে মায়া। হিরো আলমের জন্য এত দরদ উঠলো তার। তিনি ভেবেছিলেন, হিরো আলম জিতে যাবে। কিন্তু হিরো আলম এখন জিরো হয়ে গেছে।’

‘হিরো আলম বিএনপির প্রার্থী ছিলেন’ এমন দাবি করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘হিরো আলমকে বিএনপি নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছে। তারা সংসদকে ছোট করার জন্য হিরো আলমকে প্রার্থী করেছে। অবশেষে ফখরুলের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে।’

এর আগে বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার হিরো আলমের কাছেও অসহায় হয়ে পড়েছে। আজকে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে হিরো আলমকে পরাজিত করা হয়েছে।’

এ সময় তিনি বিএনপির হয়ে সংসদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ সমর্থন নিয়ে বিজয়ী উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার প্রসঙ্গেও কথা বলেন। ফখরুল বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন ব্যক্তিকে জেতাতে নিজেদের প্রার্থীকে গুম করা হয়েছে। এই হচ্ছে আওয়ামী লীগের বর্তমান পরিস্থিতি।’

গত ১ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন হিরো আলম। একতারা প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন তিনি। নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসনে হিরো আলম পান ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট। সেখানে জাসদের একেএম রেজাউল করিম তানসেন ২০ হাজার ৪০৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। বগুড়া-৬ আসনে হিরো আলম পান পাঁচ হাজার ২৭৪ ভোট। এই আসনে ৪৯ হাজার ৩৩৬ ভোট পেয়ে নৌকার প্রার্থী রাগেবুল হাসান বিপু বিজয়ী হন।

নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর হিরো আলম দাবি করেন, তাকে ‘স্যার’ ডাকতে হবে বলে প্রশাসন জোর করে হারিয়ে দিয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে তিনি আগামী নির্বাচনে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার ঘোষণা দেন।

তবে শনিবার রাত ৯টায় নিজের ফেসবুক পেইজে লাইভে আসেন হিরো আলম। তিনি জানান, পুনরায় ভোট গণনার আপিল করবেন তিনি।

ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে হিরো আলম বলেন, ‘আজকে দেখলাম, আওয়ামী লীগের আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদের স্যার, হিরো আলমকে নিয়ে কিছু বক্তব্য দিয়েছেন। আমাকে নাকি বিএনপি দাঁড় করিয়েছে। আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করেছি।’

হিরো আলম বলেন, ‘ফখরুল ইসলাম স্যার বলেছেন, এই সরকার অসহায় হয়েছে। এই সরকার অসহায় হয়েছে কি না আমি জানি না। আমি তো অসহায় হয়ে গিয়েছি। আমি কার কাছে বিচার দিব?’

এর আগে মনোনয়ন বাছাই প্রক্রিয়ায় দুই আসনেই প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায় হিরো আলমের। নির্বাচন কমিশনে আপিল করলে সেখানেও প্রার্থিতা বাতিল বহাল থাকে। পরে তিনি হাইকোর্টে গিয়ে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে প্রার্থিতা টিকিয়ে রাখেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে