চারঘাট মুক্তারপুর ও ইউসুবপুরে বেপরোয়া শীর্ষ মাদক সম্রাটরা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩; সময়: ১১:০৪ অপরাহ্ণ |
চারঘাট মুক্তারপুর ও ইউসুবপুরে বেপরোয়া শীর্ষ মাদক সম্রাটরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : চারঘাটের মুক্তারপুর এলাকায় ফের বেপরোয়া শীর্ষ মাদক সম্রাটরা। বর্তমানে এলকায় সক্রিয় এ সিন্ডিকেট প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মাদক কারবার করছে । সক্রিয় এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে হামলা, মামলাসহ বিভিন্ন ভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়।

চারঘাটের শীর্ষ মাদক সম্রাট মাদক সিন্ডিকেট র্দীঘদিন যাবত নিয়ন্ত্রন করছে চকমুক্তারপুর, মুক্তারপুর, অন্ধারিপাড়া, ইউসুবপুর এলাকায়। দীর্ঘদিন প্রশাসনের হাতে এলাকার মাদক কারবারিরা গ্রেপ্তার না হওয়ার কারনে বর্তমানে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এ মাদক কারবার সিন্ডিকেট। তবে বর্তমানে ভারত থেকে ফেনসিডিল পারচার করে আনার সময় এক মাদক ব্যবসায়ীর আরেক মাদক ব্যবসায়ী ছিনতাই করে নেয়াকে কেন্দ্র করে মাদক সম্রাটদের মধ্যে চলছে চড়ম উত্তেজনা বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন ভয়ংঙ্কর তথ্য।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চারঘাটের শীর্ষ মাদক সম্রাটরা চকমুক্তারপুর ও ইউসুবপুর এলাকায় গড়ে তুলেছে শক্তিশালি সিন্ডিকেট। এসব সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করে থাকে বড় মাপের কিছু ক্ষমতাধর নেতারা। এর মধ্যে লালন, বাবুসহ বর্তমানে মাদক সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য হিসাবে অন্যতম মুক্তারপুর এলাকার সালামের ছেলে জরিপ, মুক্তারপুর আন্ধারিপাড়ার হাবিবের ছেলে সোহান, লাবানের ছেলে লালন (৩৯) , চকমুক্তারপুর এলাকার সরকার পাড়ার শ্রী হিরেন মন্ডলের ছেলে শ্রী রনজয় কুমার মন্ডল, ইউসুবপুর এলাকার জামান উদ্দিনের ছেলে মোঃ আশিকুজ্জামান, চকমুক্তারপুর এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে শাকিল, চকমুক্তারপুর রাজ্জাকের ছেলে সোহাগ, নেয়ামুতের ছেলে ডাকু, সাবাসের ছেলে আশিক, রশিদ, নয়ন।

এছাড়া ইউসুবপুরের শরিফ মেম্বারের ছেলে আরিফ গড়ে তুলেছে আরেক মাদক সিন্ডিকেট। এছাড়াও আরো পুলিশের তালিকা ভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে চারঘাট মুক্তারপুর ও ইউসুবপুর এলাকায়। বর্তমানে মাদক ব্যবসা নিয়ে মুক্তারপুর ও ইউসুবপুর এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে চলছে বর্তমানে চড়ম দন্ড।

স্থানিয় সূত্রে জানা গেছে, চকমুক্তারপুর ও ইউসুবপুরের মাদক সিন্ডিকেটের মধ্যে চলছে চড়ম উত্তেজনা। এক পক্ষ আরেক পক্ষের মাদক ছিনতাই করছে পদ্মা নদীর মাঝে। আর এসব নিয়ে চলছে এক পক্ষ আরেক পক্ষ কে ফাঁসানোর চেস্টা। এসব মাদক সিন্ডকেটের সদস্যরা নিজেদের পদ্মা নদীতে মাছ ধরার নাম করে ভারতে গিয়ে ফেনসিডিলের বড় বড় চালান আনে । পরে সেই মাদক মুক্তারপুর, চকপাড়া, ইউসুবপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় আরো ১০ থেকে ১৫ জন সিন্ডিকেটের সদস্যদের দিয়ে বিতরণ ও বিক্রি করায়। বর্তমানে ভারত থেকে মাদক ফেনসিডিল পাচার করার সময় একজন আরেক জনের ফেনসিডিল ছিনতাই করে নেয়া কে কেন্দ্র করে চড়ম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় বড় ধরনের দন্ড বাধার সংঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

আরো জানা গেছে, সাম্প্রতিক গত ২৯ তারিখ ভারত থেকে রঞ্জয় ও আশিক ২৫০ পিচ ফেনসিডিল এনে আশিকের বাড়িতে রাখে। পরে সেই ফেনসিডিল হারিয়ে যায়। এনিয়েও এলাকার মানুষকে বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার শুরু করে মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এ ঘটনায় সন্ধেহ করে এলাকার সোহাগ ও জনিকে মারপিট করে নির্যাতন করে। এ ঘটনায় চারঘাট থানায় ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে পারেনি সোহাগ ও জনি। কিছু দিন আগে ভারতে যায় আশিক, রঞ্জয়, শাকিল। ভারতের লোক টাকা পাওয়ার কারনে তাদের মারপিট করে আটকে রাখে তাদের। সে খান থেকে কৌশলে পালিয়ে আসে আশিক, রঞ্জয় ও শাকিল। ওই ঘটনার ভারতের এক জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে আনে তারা। বিষয়টি জানাজানি হলে ইউসুবপুর বিওপি ক্যাম্প অভিযান চালিয়ে ভারতের ওই জেলেকে উদ্ধার করে বিএসএফ এর কাছে হস্তান্তর করে। ওই ঘটনা কে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ইউসুবপুরের পাঞ্জাতনকে ফাঁসানোর চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয় তারা।

এদিকে, গত বৃহস্পতিবার ২৬ জানুয়ারী ২০২৩ ইং তারিক উত্তর বাংলা ২৪ নামের এক কথিত নিউজ পোর্টালে রঞ্জয়, আশিক ও সাকিল নিজেদের জেলে হিসাবে দাবি করে ইউসুবপুর এলাকার আফজাল উদ্দিনের ছেলে কাপড় ব্যবসায়ী পাঞ্জাতনকে ফাঁসাতে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মারপিটের অভিযোগ তুলে সংবাদ প্রচার করে। মাদক ব্যবসা আড়াল করতে রঞ্জয়, আশিক ও শাকিল নিজেদের জেলে হিসাবে উপস্থাপন করে ইউসুবপুরের কাপড় ব্যবসায়ী পাঞ্জাতনকে ফাঁসাতে মিথ্যা অভিযোগ তুলে সংবাদ প্রকাশ করে। যে কোন মূল্যে কাপড় ব্যবসায়ী পাঞ্জাতনকে ফাঁসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তরা।

ইউসুবপুরের কাপড় ব্যবসায়ী পাঞ্জাতন বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমাকে ফাঁসাতে একের পর এক চক্রান্ত করছে বাবু, লালনসহ তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দফায় দফায় মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করছে। আমার ক্ষতি করতে ময়িয়া হয়ে উঠেছে তারা।

তিনি আরো বলেন, গত বছর খানিক আগেই কোন মাদক ব্যবসার সাথে আমার সম্পৃক্ততা নেই মর্মে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত দিয়েছি। বর্তমানে আমি ইউসুবপুর বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করে আমার পরিবার চালায়। আমার কাপড় ব্যবসার বিষয় প্রশাসনও জানে। কোন প্রকার অস্ত্র ও মাদক ব্যবসার সাথে আমি জড়িত নেই এই মর্মে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিতো দিয়েছি। এলাকার মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে বর্তমানে আমি। ভারত থেকে ফেনসিডিল পারচারের সময় কে কার ফেনসিডিল ছিনতাই করে নিচ্ছে জানি না। আর ওই সব ঘটনায় আমাকে জড়িয়ে চক্রান্ত করছে। আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ লালন ও বাবুর চক্রান্তে রঞ্জয়, আশিক ও শাকিল তুলেছে তা মিথ্যা ও প্রতিহিংসা মূলক। তাদের কোন ঘটনার সাথে আমার কোন ভাবেই সম্পৃক্ততা নেই।

এ বিষয় রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম এন্ড অপস্ সনাতন চক্রবর্তী বলেন, প্রতিদিন জেলা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযান অব্যহত রয়েছে। দ্রুত ওই এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানান তিনি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে