দুর্গাপুরে দুধ বিক্রেতা বৃদ্ধকে চড় মেরে হাসপাতালে পাঠালো পুলিশের এএসআই

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২৩; সময়: ১২:১০ অপরাহ্ণ |
দুর্গাপুরে দুধ বিক্রেতা বৃদ্ধকে চড় মেরে হাসপাতালে পাঠালো পুলিশের এএসআই

নিজস্ব প্রতিবেদক, দুর্গাপুর : দুধ বিক্রেতা বৃদ্ধকে চড়-থাপ্পড় মেরে হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে পুলিশের ওই এএসআইয়ের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধ।

ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌর সদরের পুর্ব সিংগা তেঁতুলতলা এলাকায়।

চিকিৎসাধীন ওই বৃদ্ধের নাম ফজলু শেখ (৬৫) তিনি পৌর এলাকার বহরমপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় দুধ বিক্রেতা। ফেরি করে বাড়ি বাড়ি দুধ বিক্রি করে সংসার চালান তিনি।

অপরদিকে, অভিযুক্ত পুলিশের এএসআইয়ের বাড়ি পৌর সদরের পুর্ব সিংগা মহল্লায়। তার পৈতৃক নিবাস নওগাঁ জেলা হলেও বর্তমানে নানার বাড়ি দুর্গাপুরে বসবাস করেন তিনি। তার বাবা মৃত জসিম উদ্দিন পুলিশে কর্মরত ছিলেন। বিয়ে করে দুর্গাপুরে বসতি গড়েছিলেন তার বাবা। সেই থেকে নানার বাড়ির পাশেই মায়ের জমিতে বাড়ি করে দুর্গাপুরে বসবাস করেন এএসআই আশরাফুল। বর্তমানে তিনি আমর্ড ব্যাটালিয়ন পুলিশের (এপিবিএন) সদরদপ্তরে সংযুক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে দুধ বিক্রির উদ্দেশ্যে বাড়ি থেক বের হন বৃদ্ধ ফজলু শেখ। পুর্ব সিংগা তেঁতুলতলা এলাকার ইনসান আলীর বাড়িতে দুধ দিতে গেলে পাশের বাড়ি থেকে এএসআই আশরাফুল দ্রুত বের হয়েই ওই বৃদ্ধকে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকে। ছুটি নিয়ে গত ক’দিন থেকে বাড়িতেই অবস্থান করছিলো এএসআই আশরাফুল। এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পড়ের একপর্যায়ে ওই বৃদ্ধ জ্ঞাণ হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজন সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে রাতেই এএসআই আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্গাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে বৃদ্ধ ফজলু শেখ।

ফজলুর শেখের ছেলে রুবেল হোসেন জানান, তার বৃদ্ধ বাবা দুধ বিক্রি করে কোন রকমের সংসার চালান। বাড়িতে পোষা গাভীর দুধ অন্যের বাড়িতে বাড়িতে বিক্রি করে বেড়ায় তার বাবা। পুলিশের এএসআই আশরাফুলের সাথে তাদের কোন শত্রুতা নাই বলেও জানান। অহেতুক তার বৃদ্ধ বাবাকে কেন মারা হল পুলিশ বাহিনীর কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি জানান রুবেল।

এর আগেও এএসআই আশরাফুল ইসলাম দুর্গাপুরের অসংখ্য মানুষকে নির্যাতন করেছেন। জোরপূর্বক অন্যের জমি দখল, আম বাগানের গাছ কাটা, বিষ দিয়ে পুকুরের মাছ নিধন, বাড়িঘর ভাংচুর ও এক ব্যবসায়ীকে প্রাণ নাশের হুমকী দেয়ার অভিযোগ রয়েছে এএসআই আশরাফুলের বিরুদ্ধে। এসব ঘটনায় রাজশাহীর আদালতে একাধিক মামলাও চলমান রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

পুলিশের এএসআই আশরাফুল ইসলামের সাথে কথা বলতে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হক বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে