আগুন নেভাচ্ছে, আবর্জনা পরিষ্কার করছে রোবট

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২৩; সময়: ৪:১৭ অপরাহ্ণ |
আগুন নেভাচ্ছে, আবর্জনা পরিষ্কার করছে রোবট

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইসিই ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোর কোলাহলপূর্ণ, কৌতূহল উদ্দীপক আয়োজনে জমজমাট।

এক পাশে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে আগুন নেভাচ্ছে রোবট, অন্য পাশে রোবট নির্দিষ্ট স্থানে রাখা আবর্জনা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তুলে নিচ্ছে। এটি বুয়েট রোবোটিপ সোসাইটির আয়োজনে দুই দিনব্যাপী রোবো কার্নিভালের উদ্বোধনী দিনের দৃশ্য।

একই সময়ে ভবনের ষষ্ঠ তলায় চলছিল প্রজেক্ট শোকেসিং সেগমেন্ট। নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে এতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা শিক্ষার্থীরা।

আগুন নেভানোর রোবট প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ৩২টি দলের মধ্যে প্রথম হন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের দল ‘ব্ল্যাক সেভার’।

দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে আহ্‌ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দল ‘ওয়াটার ব্যান্ডার্স’। তৃতীয় স্থান অধিকার করে ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটির দল ‘আইএসইউ ফাইটার ফ্যালকন’।

আবর্জনা সংগ্রহকারী প্রতিযোগিতা অংশে ১৭ দলের মধ্যে গাজীপুরের ঢাকা ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির (ডুয়েট) দল ‘ডুয়েট সাইবারনাট’ প্রথম স্থান অধিকার করে।

দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে এম এ হাশেম কলেজের দল ‘ডায়নামিক স্পার্ক’। তৃতীয় নির্বাচিত হয় আহ্‌ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দল ‘আর্টেমিস’।

প্রজেক্ট শোকেসিং অংশে ‘ভূমিকম্প ডিজিটাল সেফটি সিস্টেম’ উপস্থাপন করেন গোপালগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী তারিকুল ইসলাম তানভীর।

তিনি দেখান, যখনই কোথাও ভূমিকম্প হবে, তখন সেন্সরের মাধ্যমে ওই অঞ্চলের বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যাবে, অ্যালার্ম বাজতে শুরু করবে এবং সেই স্থানে বসবাসকারী ব্যক্তির ফোনে অটোমেটিক কল আসবে। ভূমিকম্প বুঝতে তিনি নিজেই একটি রিখটার স্কেল বানিয়েছেন।

‘এপোকোয়েটিয়ানস’ নামে আধুনিক নৌযান প্রদর্শন করেন মিরপুর বাংলাদেশ নেভি কলেজের শিক্ষার্থী ইসমাঈল হোসেন, ডেমরার মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের মারিয়া হোসেন, তেজগাঁও সরকারি বিজ্ঞান কলেজের আফনান মাহবুব, বিএফ শাহীন কলেজের সারোয়ার জাহান, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাফিউল আলম।

তাঁরা সবাই ইন্টারমিডিয়েট দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁরা দেখান, প্রচলিত নৌযান অনেক বেশি পানিতে ডুবে থাকে। ফলে এটি ধীরে চলে এবং নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়ে।

তাঁরা দেখান, নৌযানের বেশির ভাগ অংশ পানির উপরে ভাসিয়ে রেখে এবং কিছু কাঠামোর মাধ্যমে এটিকে দ্রুত এবং সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এটি এমনভাবে তৈরি, যা উল্টে গেলেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।

এছাড়া নৌযানের নিচের অংশের অভ্যন্তরে ১৬৪টি দেয়াল দেওয়া হয়েছে। ফলে বাইরের কোনো অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পানি ঢুকলে শুধু ছোট একটি অংশেই ঢুকবে। বাকি অংশ অক্ষুণ্ণ থাকবে।

আরেকটি প্রজেক্ট প্রদর্শন করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেন আরিয়ান, আল হাদি ইলাফ, সামিয়া জাহান ও চৌধুরী ইতমিনান। তাঁদের প্রজেক্টের নাম ‘আইওটি পেট ফিডার’।

এ প্রজেক্ট পোষা প্রাণী প্রতিপালনকারীদের কাজে আসবে। জগ সদৃশ পেট ফিডারে পোষা প্রাণীর খাবার থাকবে। এতে একটি মোশন সেন্সর রয়েছে।

এ সেন্সরের আওতায় পোষা প্রাণী চলে এলে ‘ব্লিংক’ নামে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ব্যক্তির কাছে একটি নোটিফিকেশন যাবে।

ব্যক্তি তখন অ্যাপে নির্দেশনা দিলে ফিডারে রাখা খাবার নির্ধারিত পথে বের হবে। ফলে ব্যক্তি বাড়ি থেকে দূরে থাকলেও অ্যাপের মাধ্যমে সময় মতো প্রাণীকে খাবার দিতে পারবেন।

কার্নিভালের সমাপনী উৎসব আজ শুক্রবার বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ায় সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে