মহাদেবপুরে অবৈধভাবে পুড়ছে হাজার হাজার মণ কাঠখড়ি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩; সময়: ৪:১৪ অপরাহ্ণ |
মহাদেবপুরে অবৈধভাবে পুড়ছে হাজার হাজার মণ কাঠখড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক, মহাদেবপুর : নওগাঁর মহাদেবপুরে অবৈধ ইটভাটার পেটে যাচ্ছে হাজার হাজার মণ কাঠখড়ি। উজাড় হচ্ছে বনভূমি, পরিবেশ বিপর্যয়ের আশংকায় সচেতন মহল।

এ উপজেলায় ১৭টি ইটভাটায় ইট পোড়ানো হলেও কোনটিরই বৈধতা নেই। কয়লার দাম ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় কমবেশি সব ভাটাতেই কাঠখড়ি পোড়ানো হলেও উপজেলার চাঁন্দাশ ইউনিয়নের বাগডোবে অবস্থিত এসএমএস ব্রিকস ভাটায় চলছে কাঠখড়ি পোড়ানোর মহোৎসব।

এ ভাটায় পোড়ানোর জন্য জড় করে রাখা হয়েছে হাজার হাজার মণ কাঠখড়ি। তাদের ইট শুকানোর খলার পাশেই প্রকাশ্য দিবালোকে এসব কাঠখড়ি জমা করে রাখা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই ভাটা মালিকের বিরুদ্ধে কোনই ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

সরেজমিনে চাঁন্দাশ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মহাদেবপুর-ছাতড়া পাকা সড়ক সংলগ্ন বিশাল এলাকাজুড়ে তিন ফসলি জমি নষ্ট করে ইটের বেড তৈরি করা হয়েছে। সারি সারি কাঁচা ইট তৈরি করে তা রোদে শুকাতে দেয়া হয়েছে এই বিশাল বেডে। বেডের চারিদিকে উঁচু স্তুপ করে রাখা হয়েছে হাজার হাজার মণ কাঠখড়ি।

স্থানীয়রা জানান, ইটভাটা মালিকের নিয়োগ করা কর্মচারীরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে ফলজ ও বনজ গাছ কিনে সেগুলো কেটে এখানে এনে জমা করছেন। এখানকার একজন শ্রমিক জানালেন বাগডোব এলাকায় এই মালিকের ইটের ভাটা রয়েছে।

রোদে শুকানোর পর সেখানে এই কাঁচা ইটগুলো নিয়ে গিয়ে এসব কাঠখড়ি দিয়ে তা পোড়ানো হবে। চাঁন্দাশ ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের অদূরেই পাওয়া গেল এসএমএস ব্রিকস নামের এই ইটভাটা।

ভাটার ম্যানেজার বেলাল হোসেন জানান, এই ইটভাটার মালিক মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর এলাকার মামুনুর রশিদ। ভাটায় গিয়ে সেখানেও দেখা যায় কাঠখড়ির স্তুপ। সেখান থেকে কাঠখড়িগুলো তুলে নিয়ে পোড়ানো হচ্ছে।

ম্যানেজার বেলাল হোসেন জানান, চাঁন্দাশ এলাকায় তাদেরই কাঁচা ইট তৈরি করে শুকানো হচ্ছে এবং সেখানে জমা করে রাখা কাঠখড়িগুলো তাদেরই।

তবে সেখানে কয়েক হাজার মণ নয়, এক হাজার মণের মত কাঠখড়ি রয়েছে বলে তিনি জানান। কয়লার দাম বেশি হওয়ায় কয়লা না কিনে এসব কাঠখড়ি ইট পোড়ানোর কাজে তারা ব্যবহার করছেন বলেও তিনি জানান।

গত কয়েকবছর ধরে এভাবেই চলছে এই ভাটা। বিষয়টি জানতে ভাটা মালিক মামুনুর রশিদের মোবাইলফোনে বার বার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিফ করেননি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসান জানান, ভাটায় কাঠখড়ি পোড়ানো দন্ডনীয় অপরাধ। এছাড়া এই উপজেলার সবকটি ইটভাটায় অবৈধ। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নওগাঁ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মলিন মিয়া জানান, মহাদেবপুরের কোন ইটভাটারই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে