কেশরহাটে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে ‘কানামাছি’ খেলা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২৩; সময়: ৭:২৪ অপরাহ্ণ |
কেশরহাটে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে ‘কানামাছি’ খেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : মোহনপুরে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের উপর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। স্থানীয় ব্যবসায়িদের দাবীর মুখে সড়কের দুই পাশের ৬ ফিট রাস্তার ছেড়ে দেয়ার পরিবর্তে ৩ফিট করে নিজেদের স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে এধরণের প্রতিজ্ঞা রাখেনি অবৈধ স্থাপনা মালিকরা।

নির্দিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়ক নির্মাণের পর দুই পাশের ফাঁকা জায়গায় কিছু প্রভাবশালী মহল দখল করে বিভিন্ন ধরণের ব্যবসায়িক দোকানপাট ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা আয় করে থাকে। এতে মহাসড়কে বাড়তে থাকে তিব্র যানজট । প্রতিনিয়ত লেগেইে থাকে ছোট বড় সড়ক দুর্ঘটনা। একারণে সড়ক ও জনপথ বিভাগ যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ কে সঙ্গে নিয়ে সপ্তাব্যাপি মাইংকিংয়ের মাধ্যমে সুিবধাভোগি দখলবাজদের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি জানান দেয়। সে অনুযায়ী ১৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার ছিল উচ্ছেদ অভিযানের ঘোষিত দিন।

ব্যবসায়িক নেতাদের অনুরোধে রাজনৈতিক নেতারা জেলা প্রশাসকের কাছে ১৭ জানুয়ারির অভিযান স্থগিতের সুপারিশ করেন। তবে কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের শোভা নষ্ট করা জামাত নেতা মুনারুলের দখলকৃত দোকান ঘর সরিয়ে নেয়াসহ রাস্তার দুধারের তিন ফিটের মধ্যকার স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার সর্ত ছিল। তবে দুই পাশের অধিকাংশ দোকানিরা তাদের স্থাপনার অংশবিশেষে সরিয়ে নিলেও কট্টর জামাত নেতার সেই ঘর রাজনৈতিক নেতাদের তবিয়তে এখনো বহাল রয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে তিব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ইতোপুর্বে কাউন্সিলর সাবের আলীর মহাসড়কের উপর অবৈধ দখলবাজির প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করে রেখেছেন কেশরহাট এফ.জে এন্টারপ্রাইজের মালিক জামাল হোসেন। এ স্থাপনাও এখনেও দাড়িয়ে রয়েছে।

পৌরবাসিদের অনেকে বলছেন, কাউন্সিলর সাবের বাজারের প্রধান সড়কের ধারে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের জায়গা দখল করে মার্কেট ও দোকানপাট করে রেখেছে। এই দখলবাজি নিয়ে একাধিক ব্যাক্তির সাথে মামলা হামলা করে নিজেও আহত হয়েছেন একাধিকবার। সম্পতি জামাল হোসেন তার ক্রয়কৃত জায়গায় স্থাপনা করতে পারছেননা। এই নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে যদি টাকা থাকে তাহলে নিজের জমিতে যা খুশি তা করুক, সিএবির জায়গায় কেন মার্কেট করে লাখ লাখ টাকার সুবিধা নিবে। এদের স্থাপনা উচ্ছেদের দাবিও জানান তারা।

বিদ্যালয় সংলগ্ন দখলকারি জামাত নেতা মুনারল ইসলাম বলেন, আমার দোকান কেউ সরাতে পারবেনা। তার ব্যবস্থা আমি করে রেখেছি।

জানতে চাইলে কেশরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয় মাঠের পাশের ঘরটি মাঠের শোভা নস্ট হলেও দখলকারি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উপর উপর আদালতে মামলা দায়ের করেছে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর কারণের আমরা ব্যবস্থা নিতে পারছিনা। তবে মাঠের শোভা রক্ষায় এটা অপসারণ জরুরী।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রুস্তম আলী প্রামাণিক বলেন, ব্যবসায়িদের অনুরোধে সড়কের দুই ধারের ৬ ফিট ভেঙ্গে নেয়ার পরিবর্তে ৩ফিট চালা নিজেরাই সরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতিতে এমপি মহোদয় জেলাপ্রশাসকের কাছে সুপারিশ করেন। এজন্য আপাতত উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত হয়েছে। তবে স্কুল মাঠে জামাত নেতার ঘরটি এখনো সরিয়ে নেয়া হয়নি। বরং সে শক্তি প্রয়োগ করে ঘর রক্ষা করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এঘরটি সরানো না হলে মাননীয় এমপি মহোদয়ের মিনি স্টেডিয়াম তৈরির স্বপ্ন নিষ্ফল হবে। এজন্য আমি উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার দাবি জানাচ্ছি।

এবিষয়ে রাজশাহী সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম সাংবাদিকদের বলেন, আমি মন্ত্রাণলায়ের মিটিংয়ে আছি, মন্ত্রাণলায় হতে অনুমতি নেয়ার ব্যবস্থা করছি। আগামীতে সুবিধামত উচ্ছেদ অভিযানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রাজনৈতিক সুপারিশে অভিযান বন্ধ হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, হতেও পারে তার পরও কিভাবে ব্যবস্থা নেয়া যায় তার ব্যবস্থা করা হবে।

এবিষয়ে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা ফাতেমাতুজ্ জোহরা বলেন, আপাতত উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। সড়ক ও জনপথ বিভাগ আগামিতে অভিযানের সিদ্ধান্ত নিলে সার্বিক সহযোগিতা দেয়া হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে