নন্দীগ্রামে টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে ফেঁসে গেল ২ বন্ধু

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২৩; সময়: ৬:৩৩ অপরাহ্ণ |
নন্দীগ্রামে টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে ফেঁসে গেল ২ বন্ধু

নিজস্ব প্রতিবেদক, নন্দীগ্রাম : বগুড়ার নন্দীগ্রামে ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে ফেঁসে গেলেন দুই বন্ধু। পরে পুলিশের কৌশলী তদন্ত ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দুই বন্ধুকে আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন, উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের বিলশা গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে জিয়াউল হক জিয়া (৩৩) ও বেলঘড়িয়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল রানা (৩০)। পুলিশ বৃহস্পতিবার তাদেরকে আটক করে ।

শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন এসব তথ্য জানান।

তাদের বিরুদ্ধে শুক্রবার থানায় মামলা দায়ের করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার ষাঁড়বুরুজ গ্রামের ধান ব্যবসায়ী মিনার আলী। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে এইসব চাঞ্চল্যকর তথ্য।

প্রেস ব্রিফিংয়ে ওসি বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ধান ব্যবসায়ী মিনার আলীর সঙ্গে নন্দীগ্রামের জিয়াউল হক ও তার বন্ধু সোহেল রানার দীর্ঘদিনের ধান ক্রয়-বিক্রয় ব্যবসা সংক্রান্তে সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ উপজেলা থেকে ধান ক্রয় করে তারা বিভিন্ন কোম্পানীতে সরবরাহ করতো।

ব্যবসার লেনদেনের টাকা সোহেল রানার ইসলামী ব্যাংক নন্দীগ্রাম শাখার একাউন্টে পাঠানো হতো। এ নিয়ে দুই বন্ধু জিয়াউল হক ও সোহেল রানা মিনার আলীর টাকা আত্মসাৎ করার বুদ্ধি পাকায়। একপর্যায়ে গত বুধবার ধান ব্যবসায়ার মিনার আলীর কথামতো এরোমেটিক এগ্রো এন্ড ফুড লিমিটেডের মালিক ২১ লাখ টাকা পাঠিয়ে দেন সোহেলের একাউন্টে।

এদিকে মিনারের কথামতো ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা দুটি একাউন্টে পাঠায় সোহেল। ধান ক্রয়ের জন্য বাঁকি ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নিয়ে যায় জিয়াউল হক ও তার বন্ধু সোহেল রানা।

ওইদিন সন্ধ্যায় মিনারকে ফোন করে সোহেল জানায়, ব্যাংক থেকে ফেরার পথে টাকাগুলো ছিনতাই হয়ে গেছে।

ভাটরা ইউনিয়নের মকবুল মেম্বার থানায় ফোন করে জানায়, উপজেলার সিমলা বাজার থেকে এক কিলোমিটার পশ্চিমে ঢাকারগাড়ী ব্রীজ এলাকায় তার ছেলের ব্যবসায়ী পার্টনার জিয়াউল হক ডাকাতির কবলে পড়েছে এবং টাকাগুলো নিয়ে গেছে।

ওসি আরও বলেন, সংবাদ পেয়ে পুলিশের চৌকস টিম তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে গিয়ে আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি সাজানো নাটক হিসেবে সন্দেহ করে পুলিশ।

টাকা ছিনতাই অভিযোগ নিয়ে বুধবার রাতেই থানায় আসে বেলঘড়িয়া গ্রামের জিয়াউল হক ও সোহেল। অভিযোগে লিখেছিলো, ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে জিয়াউল হক জিয়া মোটরসাইকেল যোগে ফেরার পথে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তার পথরোধ করে টাকার ব্যাগ ছিনতাই হয়।

তবে জিয়া ও সোহেল ভেবেছিলো, থানায় অভিযোগ করলেই পুলিশ তাদেরকে সন্দেহ করবে না। পৌরসভার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে টাকা ছিনতাই নাটকের রহস্য উন্মোচন হয়।

অবশেষে নিজেদের সাজানো নাটকে নিজেরাই ফেঁসে গেল। তাদের দুইজনের তথ্যের ভিত্তিতে পৌরসভার ওমরপুর এলাকার জনৈক ব্যক্তির বাড়ি থেকে ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে