দুর্ঘটনা দুঃসময়ে মানুষের পাশে সবার আগে অগ্নি সেনারা   

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২৩; সময়: ৫:০৪ অপরাহ্ণ |
দুর্ঘটনা দুঃসময়ে মানুষের পাশে সবার আগে অগ্নি সেনারা   

নিজস্ব প্রতিবেদক, পত্নীতলা : গতি, সেবা, ত্যাগ এই মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে দেশের ক্রান্তিকালে, দূর্যোগে, দুর্ঘটনায়, বিপদে আপদে সবার আগে যারা মানুষের পাশে দাঁড়ান, যান মাল সম্পদ রক্ষায় এগিয়ে আসেন তারাই হলো এই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

আমা‌দের ফায়ার সা‌র্ভিস নানা সঙ্কটে থাকা স্বত্বেও দিন হোক, গভীর রাত হোক, একটা ইমার্জেন্সি কলেই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সাইরেন বা‌জি‌য়ে সবার আগে হাজির হন ঘটনাস্থলে।

ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এমনভা‌বে কাজ করেন যেন ম‌নে হয়, তা‌দেরই সন্তান বা স্বজন বিপ‌দে প‌ড়ে‌ছে। এমন মমত্ববোধ স‌ত্যিই বিরল।

অগ্নি নির্বাপণ, অগ্নি প্রতিরোধ, উদ্ধার, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান, মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতালে প্রেরণ ও দেশী-বিদেশী ভিআইপিদের অগ্নি নিরাপত্তা বিধান করে থাকে। প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্ট যেকোনো দূর্যোগে এ বিভাগের অগ্নি সেনারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানবসেবায় সদা নিয়োজিত।

এরই ধরাবাহিকতায় নওগাঁর পত্নীতলায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সদা জাগ্রত থেকে রাত বিরাতে দ্রুতগতিতে ছুটে চলেছেন বিপদে বিপন্ন অবস্থা থেকে মানুষের যান মাল রক্ষা করতে।

কনকনে হাড়কাঁপানো শীতে মানুষ যখন গায়ে গরম কাপড় জড়িয়ে আরাম আয়েশে শান্তিতে ঘুমে থাকেন তীব্র ঠান্ডার কারণে ঘরের বাহিরে বের হতে ভয় পায় তখনও কন্ট্রোল রুমে একটি ফোন আসা মাত্রই শীত উপেক্ষা করে দ্রুত ছুঁটে যান ঘটনাস্থলে এবং অগ্নিনির্বাপণ করে ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে ফিরেন স্টেশনে আবার অপর কোন দুর্ঘটনার জন্য প্রস্তুত থাকেন।

পত্নীতলা ফায়ার স্টেশন সূত্রে জানা যায়, গত ডিসেম্বর-২২ থেকে চালিত জানুয়ারি মাসে এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ টির মতো দুর্ঘটনা থেকে মানুষর যান মাল রক্ষায় কাজ করেছে পত্নীতলা ফায়ার সার্ভিসের সাহসী সদস্যরা।

সর্বশেষ সোমবার একই দিনে ৩ টি দুর্ঘটনা ঘটে দুপুরে ফোন আসে উপজেলার আকবরপুর ইউনিয়নের উষ্টি কাজীপাড়া গ্রামে রফিজ উদ্দীনের বসত বাড়ীতে আগুন লেগেছে খবর পাওয়ার সাথে সাথে ছুটে যান ফায়ার সার্ভিস টিম পত্নীতলা দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে নির্বাপণ করেন এতে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার সম্পদ রক্ষা হয়।

এরপর একইদিনে সন্ধ্যায় আবার কল আসে নজিপুর ইউনিয়নের পদ্ম পুকুর গ্রামের শাহীন ও জমির উদ্দীনের খড়ের গাদায় আগুন লাগে মুহুর্তে ছুটে গিয়ে অগ্নি নির্বাপণ করে ।

এরকম প্রতিদিনই দু-তিনটা দুর্ঘটনা ঘটে চলছে। আরও জানা যায় সম্প্রতি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আবার কিছু ক্ষেত্রে দ্বন্দ্বের জেড়ে ও আগুন লাগায়।

সপ্তাহ খানেক আগে উপজেলা সদরের একটি বাড়ীতে পারিবারিক কলহে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা চেষ্টা করতে গেলে খবর পাওয়ার সাথেই দ্রুত গিয়ে ঘরের দরজা কেটে সেই গৃহ বধুকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে মেডিকেল ভর্তি করিয়ে দেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

পত্নীতলা ফায়ার স্টেশন ইনচার্জ ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর রায়হান ইসলাম বলেন, সম্প্রতি প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট আবার চুলার আগুন থেকেও সূত্রপাত হচ্ছে।

আমরা বিভিন্ন এলাকায় অগ্নি নির্বাপণ প্রদর্শনি মহড়া কর্মশালার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করে যাচ্ছি। বাসাবাড়িতে বৈদ্যুতিক লুস কানেকশন রিপিয়ারিং করতে হবে, রান্না করার পর চুলার আগুন ভাল করে নিভিয়ে দিতে হবে, মাঝে মাঝে গ্যাসের চুলার ফিটিং চেক করতে হবে, গ্রাম অঞ্চলে খড়ের গদা পাহাড়া দিতে হবে।

যেখানেই দুর্ঘটনা হোক ফায়ার সার্ভিসকে দ্রুত অবগত করতে হবে মানুষের যান মাল রক্ষায় আমরা সদা জাগ্রত ও প্রস্তুত আছি।

বাংলাদেশে আনসাং হিরো শব্দটা তা‌দের জন্যই। দু‌র্যো‌গের এই দেশে তারাই আসল নায়ক। তাই এই বা‌হিনীর প্রতিটা সদস্যকে স্যালুট। আপনারাই বাংলা‌দেশ। স্যালুট তাই আপনা‌দের।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে