হত্যাকাণ্ডের ৫ দিনেও গুলি করা আসামি ধরা ছোয়ার বাইরে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২৩; সময়: ৩:২০ অপরাহ্ণ |
হত্যাকাণ্ডের ৫ দিনেও গুলি করা আসামি ধরা ছোয়ার বাইরে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঈশ্বরদী : পাবনার ঈশ্বরদীতে রিকশাচালক মামুন হোসেনকে (২০) গুলি করে হত্যার ঘটনার পর পাঁচ দিন পেরিয়ে গেছে। তবে এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবলীগ নেতার ভাই আনোয়ার হোসেনকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। মামুন নিহত হওয়ার ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে করা মামলায় বলা হয়েছে, আনোয়ার হোসেনের গুলিতে মামুন নিহত হন।

মামলার চার আসামির মধ্যে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও কাউন্সিলর কামাল উদ্দিনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মামলার ২ নম্বর আসামি কামাল উদ্দিনের ভাই আনোয়ার হোসেন। এ মামলায় র‍্যাব অভিযান চালিয়ে গত শুক্রবার দুপুরে কামাল উদ্দিনসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে আনোয়ার হোসেন এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় নিহত ব্যক্তির পরিবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া কামাল উদ্দিন গ্রেপ্তার হলেও তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ না করায় নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা হতাশ।

গত বুধবার রাতে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পশ্চিম টেংরি কড়ইতলা এলাকায় নছিমনচালকের সঙ্গে এক লেগুনাচালকের বিরোধ দেখা দেয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে কয়েকজন যুবক সেখানে এসে বিরোধে জড়ান। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ধস্তাধস্তি চলাকালে যুবলীগ নেতা কামাল উদ্দিনের ভাই আনোয়ার হোসেন তাঁর সঙ্গে থাকা পিস্তল বের করে গুলি চালান। এতে রিকশাচালক মামুন হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে নিহত মামুনের মা লিপি খাতুন বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ঈশ্বরদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুব্রত কুমার ঘোষ বলেন, ঘটনার পর থেকে আসামি আনোয়ার হোসেন পালতক। তাঁকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। এ ছাড়া গ্রেপ্তার আসামিদের এখনো রিমান্ডের প্রয়োজনীয়তা হয়নি। প্রয়োজন হলে অবশ্যই রিমান্ড আবেদন করা হবে।

মামুনের স্বজনদের দাবি, যুবলীগ নেতা কামাল উদ্দিন ও তাঁর ভাই এলাকায় বেশ প্রভাবশালী। রাজনৈতিক পরিচয়ে তাঁরা এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে বেড়ান। ঘটনার পর শনিবার সকালে কিছু লোকজন তাঁদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেছেন। আসামিপক্ষের লোকজন মামলাটি ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

মামুনের মামা মুন্না হোসেন বলেন, তাঁরা দরিদ্র। তাঁদের পক্ষে কথা বলার কেউ নেই। বিভিন্ন লোক বিভিন্ন কথা বলছেন। এতে তাঁরা খুব অসহায় হয়ে পড়েছেন। তাই তিনি দ্রুত এ মামলার সব আসামিকে গ্রেপ্তার ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছেন।

মামুনের মা লিপি খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার বুকের মানিক হারা গেছে। আমার আর কিছুই নাই। কিছু চাওয়ারও নাই। আমার বেটাক যারা গুলি করছে, আমি তাগের শাস্তি চাই।’

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার বলেন, ঘটনার পর থেকেই আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তবে তাঁরা গা ঢাকা দিয়ে আছেন। দ্রুতই তাঁদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে