সুজানগরে নতুন পেঁয়াজের চারা রোপনে দিনমজুর শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২৩; সময়: ৫:১১ অপরাহ্ণ |
সুজানগরে নতুন পেঁয়াজের চারা রোপনে দিনমজুর শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুজানগর : বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম বিল হিসাবে পরিচিত সুজানগর উপজেলার গাজনার বিল সহ এই উপজেলার বেশিরভাগ ফসলি জমিতে নতুন চারা পেঁয়াজ রোপন শুরু করেছেন কৃষকেরা ।

সুজানগর উপজেলার কৃষকদের কাছে এই পেঁয়াজই অন্যতম প্রধান অর্থকারী ফসল এবং এটি তারা জমিতে রোপন করবে পুরো জানুয়ারী মাস জুড়ে ।

সুজানগর উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানাযায় এবারে এই উপজেলায় ১৬হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে নতুন এ পেঁয়াজের চারা রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে । তবে এবারে কৃষকেরা বেশি পরিমাণ জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপন করায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

এদিকে গাজনার বিলে গিয়ে দেখাযায় এই চারা পেঁয়াজ রোপন করতে দিন মজুর হিসেবে কাজ করছে এই উপজেলার গ্রাম পর্যায়ের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের ছাত্ররা।দিনমুজুর হিসাবে পেঁয়াজের চারা রোপন করতে আসা উপজেলার বোনকোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র রাসেল হোসেন বলেন ডিসেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা দেবার পর থেকে বিদ্যালয় বন্ধ থাকে ও জানুয়ারী মাসে ক্লাস কম হয় তাই বাড়তি কিছু টাকা রোজগার করে সংসারে সচ্ছলতার আনার জন্য তিনি এ কাজ করছেন। উপজেলার হাটখালী ইউনিয়নের কামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র লতিফ হোসেন বলেন তাদের মত আরো অনেক ছাত্রই দিনপ্রতি ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০টাকা করে এবং দিনে দুইবেলা খাবার খাওয়ার মাধ্যমে দিনমজুর হিসাবে এই পেঁয়াজের চারা রোপন করে থাকেন।

নাজিরগঞ্জ কলেজের মতিন নামে অন্য এক কলেজ ছাত্র বলেন, গতবার তিনি পেঁয়াজ রোপনের মৌসুমে ১২হাজার ৫শত টাকা রোজগার করেছিলেন আর এবারের মৌসুমেও ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা রোজগার করতে পারবেন বলে জানান । আর এই রোজগারকৃত টাকা দিয়ে এবারে একটি ভাল মোবাইল ফোন,বই ও জামা কাপড় কিনবেন বলে জানান।উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের কৃষক আজিজুর রহমান বলেন তিনি এবারে ২২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপন করবেন আর ইতিমধ্যে ৪ বিঘা জমিতে রোপন করেছেন । তিনি আরো জানান প্রতি বিঘা জমিতে এই পেঁয়াজের চারা রোপন করতে ১৬ থেকে ২০ জন দিনমজুর হিসাবে কাজ করে থাকেন আর এদের মধ্যে বর্তমানে বেশিরভাগই স্কুল কলেজের ছাত্ররা কাজ করছেন । মজিদ নামে অন্য আরেকজন কৃষক বলেন গ্রাম এলাকার ছাত্ররা এ কাজটি ভাল পারেন এবং মুজুরীও কম তাই তারা এ কাজে ছাত্রদের দিনমুজুর হিসাবে নিয়ে থাকেন এছাড়া এই পেঁয়াজ রোপনের মৌসুমে রংপুর,বগুড়া,লালমনিরহাট সহ বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত মানুষ দিনমজুর হিসাবে এই পেঁয়াজের চারা রোপন কাজের জন্য এসে থাকেন ।

নাজিরগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাদের হোসেন বলেন, এই পেঁয়াজ লাগানোর মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় ও কলেজের অসংখ্য ছাত্ররা দিনমজুর হিসাবে কাজ করে থাকে আর এ জন্য এ সময় গ্রাম এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রদের উপস্থিতির হার অন্যান্য সময়ের তুলনায় কম থাকে।

সুজানগর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহজাহান আলী বলেন, এই সময়ে সুজানগর উপজেলার বিভিন্ন বয়সের মানুষেরা মাঠে পেঁয়াজের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করে থাকেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাফিউল ইসলাম জানান, সঠিক ভাবে রোপন, পরিচর্যা ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে গত বছরের মত এবারেও এই উপজেলায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হবে ।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে