৫০ বছর পূর্ণ করলো ঈশ্বরদীর নর্থ বেঙ্গল পেপার মিলস স্কুল

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৪, ২০২২; সময়: ৯:১৯ পূর্বাহ্ণ |
৫০ বছর পূর্ণ করলো ঈশ্বরদীর নর্থ বেঙ্গল পেপার মিলস স্কুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঈশ্বরদী : বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে বিদ্যালয়টি। পরিপাটি ক্যাম্পাস। শুক্রবার সকাল থেকেই প্রধান ফটক দিয়ে মাঠের ভেতর আসতে থাকেন প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীরা। শুরু হয় বহু বছর আগের সহপাঠীদের নাম ধরে ডাকা। তুমুল আড্ডায় মেতে ওঠা। হাসি আর গানে মাতোয়ারা হওয়া।

ঘড়ির কাঁটা সাড়ে দশটা ছুঁতেই আকাশে ওড়ানো হয় বেলুন। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী নর্থ বেঙ্গল পেপার মিলস হাই স্কুল প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর উদ্যাপন। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বসে নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীদের দুই দিনের মিলনমেলা।

নবীন-প্রবীণ এক প্রাণ-স্লোগানে এনবিপিএম হাই স্কুল অ্যালমনাই অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার সকালে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এর উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী বক্তব্য তিনি বলেন, এই স্কুলে পড়াশুনা করা অনেকেই ভালো অবস্থানে আছেন। পাশিপাশি তারা দেশ ও জাতি গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছেন। আগামীতেও সেই ধারা অব্যাহত রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে বিদ্যালয়টি ভূমিকা পালন করে যাবে।

এর আগে সকাল সোয়া ৯টায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে উৎসবের শুরু হয়। তাঁর আগে বিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে স্মৃতিফলকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়েছে। এছাড়াও অভিনয়, নৃত্য ও কসরতের মাধ্যেমে মুক্তিযুদ্ধকালীন দৃশ্য তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা। সবশেষ অ্যালমনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজনে বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি ও পুরষ্কার বিতরণ এবং অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

পাকশী পেপার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মাদ রশিদুল্লাহ, ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সভাপতি মোস্তাক আহমেদ কিরণ, পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিন্টু, পূর্ব টেংরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ উদ্দিন বিশ্বাস, সরকারি সাঁড়া মাড়োয়ারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আয়নুল ইসলাম।

আগামীকাল শনিবার উৎসবের দ্বিতীয় দিনে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্মৃতিচারণ এবং অতিথি শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

উৎসবে সাবেক ও বর্তমান প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছেন। এদেরই একজন লাবণ্য লতিফা। তিনি বলেন, ‘স্কুল ক্যাম্পাসে এসে প্রাণের স্পর্শ খুঁজে পাচ্ছি। আজকের অনুষ্ঠানে এসে সেই বাল্যকালে ফিরে যেতে মন চাইছে। বহু বছর আমি এত বেশি আনন্দ পাইনি। আমি ভীষণ খুশি।’

পাকিস্তান আমলে স্থাপিত উত্তরাঞ্চলের অন্যতম ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান ছিল পাকশী নর্থ বেঙ্গল পেপার মিলস। ১৩৩ একর জমির ওপর ১৯৬৬ সালে জার্মান প্রতিষ্ঠান মিলটি তৈরী করলেও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে মিলটি পুরোদমে উৎপাদনে গিয়েছিল। আখের ছোবড়া দিয়ে সুন্দর উন্নতমানের সাদা কাগজ তৈরী হতো পাকশীর নর্থ বেঙ্গল পেপার মিলে।

তখন মিলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার জন্য কলোনিও গড়ে ওঠে। তাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য নির্মিত হয় পাকশী পেপার মিলস হাই স্কুল। ১৯৭৬ সালে দশম শ্রেণি খোলা হয় এবং ১৯৭৭ সালে এই স্কুলের শিক্ষর্থীরা প্রথম এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে