কচুয়ায় ক্ষিরাই নদীর পুনঃ খননকৃত মাটি বিক্রি করে দিচ্ছে দুর্বৃত্তরা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৯, ২০২২; সময়: ১২:৪৭ pm |
কচুয়ায় ক্ষিরাই নদীর পুনঃ খননকৃত মাটি বিক্রি করে দিচ্ছে দুর্বৃত্তরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, কচুয়া : চাঁদপুরের কচুয়ায় ক্ষিরাই নদীর পুন: খননকৃত মাটি বিক্রি করে দিচ্ছে মাটি খেকোরা। দিন ও রাতে প্রায় ৬ মাস ধরে এমন কর্মযজ্ঞ চললেও দেখার যেন কেউ নেই।

অপরিকল্পিত ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে এসব মাটি বিক্রি হচ্ছে আশে পাশের কয়েকটি গ্রামে। আবার এই মাটির মাধ্যমেই ভরাট হয়ে যাচ্ছে কৃষিজ জমি, এতে করে খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পরার শঙ্কা রয়েছে।

জানা গেছে, কৃষকের চাষাবাদের সুবিধার লক্ষে বছরের শুকনো মৌসুমে ক্ষিরাই নদীর পানি ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ এর আওতায় মতলব দক্ষিন উপজেলার নায়েরগাঁও থেকে কচুয়া উপজেলার সাচার বাজারের উত্তর প্রান্তের ব্রিজ পযর্ন্ত প্রায় ৯.২ কিলোমিটার নদী ৪৮বছর পর ৬ কোটি টাকার ব্যয়ে পুনঃখনন করা হয়।

খননকৃত মাটি রাখা হয় নদীর দুই পাশের পাড়ে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নদীর দুই পাড়ে স্তুপ করে রাখা পুনঃখনন কৃত মাটি নদীর পাড়ের স্ব-স্ব জমির মালিক নিজেদের দাবী করে বিক্রি করে দেয়। যার ফলসূতিতে এখন পযর্ন্ত কয়েক লক্ষ ঘন মিটার মাটি কেটে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। যার বাজার মূল্য প্রায় কয়েক কোটি টাকা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাচার বাজারের উত্তর প্রান্তের ব্রিজ থেকে শুরু করে কচুয়ার সীমানা মধুপুর পযর্ন্ত প্রায় ৫-৮টি অপরিকল্পিত ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে শুয়ারুল, আটেমোর, উজান ছিনাইয়া, ভাটিছিনাইয়া, উত্তর বেরকোটা যা (ইলিবিডা নামে পরিচিত), আতিশ^র, মধুপুর গ্রামে মাটি কাটা হচ্ছে যা এখনো চলমান রয়েছে। ওই ভাবে অপরিকল্পিত ড্রেজিংয়ে মাত্র আর কয়েক দিন চলমান থাকলে পুনঃখনন কৃত নদীর দুই পাড়ের মাটি আর অবশিষ্ট থাকার সম্ভাবনা নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, রাজনৈতিক নাম ভাঙ্গিয়ে প্রভাবশালী লোকজন দিনের পর দিন এমনিভাবে নদীর পুনঃ খননকৃত মাটি বিক্রি করে দিচ্ছে। তারা আরো বলেন, সরকার যদি এসব মাটি নিলামের মাধ্যমেও বিক্রির ব্যবস্থা করতেন, তাহলে এখান থেকে সরকার অনেক রাজস্ব আদায় করতে পারতেন। কিন্তু উল্টু প্রশাসন নিশ্চুপ। মাটি খেকোরা এতটাই প্রভাবশালী যে তাদের নামও প্রকাশ করতে ভয় পায় এলাকাবাসী।

এলাকাবাসীর মধ্যে এক ধরনের চাপা অতঙ্ক বিরাজ করছে। জোয়ার ও ভাটার সাথে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নদীর তলায় জমা হওয়া পলি মাটি, নদীর পাড়ের কোন জমির মালিকের হতে পারেনা। এটি সরকারী সম্পত্তি। এই পুনঃ খননকৃত মাটির মালিক সরকার। অপরিকল্পিত ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে মাটি কাটায় ও জলাশয় ভরাট করায় জীব ও পবিবেশের উপর মারাত্বক প্রভাব পড়বে বলে জানান তারা।

সচেতন মহলের দাবী, অচিরেই যাতে এসব অনিয়ম বন্ধে প্রশাসনের অভিযান পরিচালনা করে, এই ধরনের রাঘব বোয়ালদের আইনে আওতায় নিয়ে আসে। তাহলে মাটি খেকোদের দৌরাত্ব কমবে।

ইউএনও নাজমুল হাসান বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য ও জীব বৈচিত্র রক্ষার জন্য উপজেলা প্রশাসন সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান তিনি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
topউপরে