রাবিতে ছাত্রমৈত্রীর ৪২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২২; সময়: ৮:৩৩ অপরাহ্ণ |
রাবিতে ছাত্রমৈত্রীর ৪২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঐক্য, সংগ্রাম, গৌরব ও ঐতিহ্যের ৪২ বছর অতিক্রম করেছে দেশের ঐতিহাসিক বামপন্থী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রাঙ্গনে আনন্দ র‌্যালি ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় ও মহানগর শাখা যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

রাবির টুকিটুাকি চত্বর হতে বের হওয়া ছাত্রমৈত্রীর র‌্যালিটি ক্যাম্পাসের প্রশাসনিকসহ বিভিন্ন ভবন, হল ও রাস্তা প্রদক্ষিণ করে ছাত্র সমাবেশে মিলিত হয়। ছাত্রদের অধিকার আদায় ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে দেওয়া বিভিন্ন শ্লোগানে এসময় মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। র‌্যালি থেকে তারা খাতা-কলমসহ বিভিন্ন শিক্ষাসামগ্রীর মূল্য কমিয়ে আনার দাবি তোলেন। হুশিয়ারি দেন সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধেও।

বেলুন উড়িয়ে র‌্যালি উদ্বোধন করেন রাবি শাখা ছাত্রমৈত্রীর সাবেক সভাপতি দেবাশিষ প্রামানিক দেবু। এসময় রাবি শাখা ছাত্রমৈত্রীর যুগ্ন আহ্বায়ক মাসুম রেজা তানভীর, আসোয়াদ হোসেন, মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক বিজয় সরকার, সহ-সভাপতি সাকিব আল হাসান, অমিত সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষাণ সরকার, নিউ গভ: ডিগ্রী কলেজের সভাপতি জানে আলম আরিয়ান, ঋতু সরকারসহ রাবি ও মহানগর ছাত্রমৈত্রীর নেতারা র‌্যালিতে নেতৃত্ব দেন।

স্বাধীনতা পরবর্তীকালে সত্তরের দশকের মধ্য ভাগে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্র আন্দলনের যাত্রা শুরু হয় বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে। এরই পথ ধরে ১৯৮০ সালের ৬ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় ঐক্য সম্মেলনের মধ্য দিয়ে জাতীয় ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় ছাত্রদলের দুইটি অংশ এবং বাংলা ছাত্র ইউনিয়ন মিলিত যাত্রা শুরু করে।

তখন জাতীয় ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ছিলেন ফজলে হোসেন বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আজিজুর রহমান খান আসাদ। ঐক্যবদ্ধ সংগঠনের নামকরন করা হয় বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী। ঐক্যবদ্ধ সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হন ফজলে হোসেন বাদশা (তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এবং রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য)।
পরবর্তীতে এই ঐক্যের ধারাবহিকতায় ১৯৮১ সালে জাতীয় ছাত্র ইউনিয়নের সাথে ঐক্য হয় এবং সংগঠনের নাম “বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী“ অপরিবর্তিত থাকে। ১৯৮৪ সনে ২২ সেপ্টেম্বর বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের একটি অংশের সাথে ঐক্য হলে সংগঠনের নাম পরিবর্তন হয়ে “বাংলাদেশ বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী” নামটি ধারণ করে।

১৯৮৮ সালের ৭ এপ্রিল বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের আরেকটি অংশের সঙ্গে ঐক্যের মধ্যদিয়ে “বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী” নাম ধারণ করে সংগঠনটি। এরপর আরো দুই দফায়; ১৯৮৮ সনে ২১ নভেম্বর জাতীয় ছাত্র সংসদের সঙ্গে এবং ১৯৯২ সালের ২৩-২৪ অক্টোবর গণতান্ত্রিক ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে ঐক্য হয় বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর।

১৯৮০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে (রাকসু) ছাত্রলীগ ও জাসদের বিরুদ্ধে প্যানেল ঘোষণা করে সংগঠনটি। নির্বাচনে ছাত্রমৈত্রীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বর্তমান রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা ভিপি পদে বিপুল ভোটে জয়ী হন। এই পর্যন্ত ছাত্রমৈত্রীর ২১টি কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে অতুলন দাস আলো সভাপতি এবং অদিতি আদৃতা সৃষ্টি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি ৬৫ সদস্যবিশিষ্ট এবং ৩১ সদস্যবিশিষ্ট সাংগঠনিক জেলা কাঠামোর সংখ্যা ৫৪।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে