রাজশাহী বিএনপির সমাবেশে প্রবেশপথে পুলিশের কড়াকড়ি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২২; সময়: ১২:০২ অপরাহ্ণ |
রাজশাহী বিএনপির সমাবেশে প্রবেশপথে পুলিশের কড়াকড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক :  কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে শহরের মাদ্রাসা মাঠে কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়।

এর আগে সকাল থেকে গণসমাবেশে আসা নেতাকর্মীকে উজ্জীবিত করতে গান পরিবেশন করা হয়। জাসাসের কেন্দ্রীয় নেতা ইথুন বাবুসহ জেলা ও কেন্দ্রীয় জাসাসের নেতৃবৃন্দ নানা ধরনের সংগীত পরিবেশন করেন। এদিকে বিএনপির গণসমাবেশে যাতায়াতের পথে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি ও প্রস্তুতি লক্ষ করা গেছে।

সমাবেশস্থলের আশপাশের সব রাস্তায় কেবল বিএনপি নেতাকর্মীর মিছিল। বিভিন্ন রঙের টি-শার্ট ও ক্যাপ পরে দলে দলে সমাবেশস্থলে হাজির হচ্ছেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের হাতে রয়েছে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবিসংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন এবং ধানের শীর্ষ। তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সরকারের পদত্যাগ দাবিতে মুহুর্মুহু স্লোগান দিচ্ছেন। এরই মধ্যে সাত-আট লক্ষাধিক লোকসমাগম হয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন মনে করছেন।

গণসমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও এখনো বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা মাদ্রাসা মাঠে জড়ো হচ্ছেন। রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশার সভাপতিত্বে গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গণসমাবেশে যোগ দিতে গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজশাহী পৌঁছেছেন তিনি।

এদিকে প্রবেশপথগুলোতে সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। প্রতিটি প্রবেশপথ ও মোড়ে মোড়ে পুলিশ নেতাকর্মীকে তল্লাশি করছে। কারও হাতে লাঠি দেখলে সেগুলো নিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

আরএমপি সূত্র জানায়, মাদ্রাসা মাঠে বিএনপিকে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু রাজশাহীর বাইরে থেকে অসংখ্য নেতাকর্মী আসায় সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যেই সমাবেশ শুরু করেছে বিএনপি। অন্যান্য সমাবেশের মতোই বিশালাকৃতির মঞ্চে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের জন্য চেয়ার ফাঁকা রাখা হয়েছে।

আজ শনিবার সরেজমিন দেখা গেছে, গণসমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য তিন দিন আগে থেকে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করলেও মহানগর পুলিশের বেঁধে দেওয়া শর্তের কারণে মাদ্রাসা মাঠে ঢুকতে পারেননি। মাদ্রাসা মাঠের পাশে ঈদগাহ মাঠে তাঁবু টাঙিয়ে তারা অবস্থান করেন। এরপর শনিবার ভোর থেকে দলে দলে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করেন। এখনো বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা আসছেন।

জানা গেছে, চাল, ডাল, জ্বালানি তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য বৃদ্ধি, চলমান আন্দোলনে ভোলায় নূরে আলম ও আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে শাওন, মুন্সিগঞ্জে শহিদুল ইসলাম শাওন ও যশোরে আব্দুল আলিম মোট ৫ জন হত্যার প্রতিবাদে, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে সারাদেশে বিভাগীয় গণসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা দেয় বিএনপি।

গত ১২ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী পলোগ্রাউন্ড মাঠ থেকে এসব গণসমাবেশ শুরু করে দলটি। ইতোমধ্যে নানা বাধা ও প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর, সিলেট, কুমিল্লা বিভাগীয় গণসমাবেশ করেছে বিএনপি। আজ শনিবার রাজশাহীতে বিভাগীয় গণসমাবেশ চলছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় হবে গণসমাবেশ।

আরএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মো. রফিকুল আলম কালবেলাকে বলেন, বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে আমাদের পুলিশের অনেক রকমের প্রস্তুতি রয়েছে। সার্বিকভাবে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যাতে করে কেউ যেন সহিংস ঘটনা না ঘটাতে পারে। যদি কেউ আইন-শৃঙ্খলার অবনতি কিংবা কেউ আইন ভঙ্গ করে তাহলে ব্যক্তি ও অবস্থা বিবেচনায় তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে