জার্সিতে দেড়কোটি টাকা বিনিয়োগ

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২২; সময়: ১:২৮ অপরাহ্ণ |
জার্সিতে দেড়কোটি টাকা বিনিয়োগ

তানজিলা চৌধুরী : দেড়বছর বয়সী তনয়। পছন্দ-অপছন্দ, বাছাই করা কোনো কিছুর বয়সই হয়নি তার। নিজে ভালো মন্দ না বুঝলেও বাবা মায়ের সাথে তার জন্যও খোঁজা হচ্ছে ছোট্ট জার্সি। ছোট্ট তনয় বোঝেনা খেলা, জানেনা ভেদাভেদ। বাবা-মায়ের পছন্দের দল ব্রাজিলের জার্সিই নেওয়া হচ্ছে তার জন্যও।

৮ বছরের শিশু অলি দাদুভাইয়ের হাত ধরে এসেছে আর্জেন্টিনার জার্সি কিনতে। এই দল সমর্থনের কারণ তার পুরো পরিবার আর্জেন্টিনার সমর্থক। খেলা ভালোভাবে না বুঝলেও পরিবারের সবার দেখাদেখি তারও উন্মাদনা আর্জেন্টিনার প্রতি।

খেলাধূলা বিনোদনের অন্যতম অংশ। ফুটবল, ক্রিকেট খেলাকে ঘিরে উত্তেজনা যেন একটু বেশিই। চলমান ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২ কে ঘিরে ঘরে ঘরে যেন জমে উঠেছে আমেজ। পছন্দের দলের জার্সি, পতাকা নিয়ে সবাই যেন সমর্থন জানাচ্ছে নিজের ভালো লাগা দলের প্রতি। নিজের দেশের এই খেলায় অংশ গ্রহণের সুযোগ না হলেও কোনোভাবেই আমেজে ঘাটতি পড়ে না। সব জায়গায় যেন এক উৎসবমুখোর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে ফুটবল বিশ্বকাপকে ঘিরে।

বিভিন্ন শপিং সেন্টার থেকে শুরু করে রাস্তার ধারে ফুটপাতেও ধুম জমেছে জার্সি কেনা-বেচার। রাজশাহী মহানগরীর নিউ মার্কেট, গণকপাড়া, বাটারমোড়, রাণীবাজারসহ বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা গেছে এমনই এক আলোড়িত পরিবেশ। শিশু থেকে বৃদ্ধ কেউ ই বাদ নেই এমন বিশ্বকাপের আমেজ থেকে।

বন্ধুদের সাথে দল বেঁধে জার্সি কিনতে এসেছেন শফিক। তিনি জানান, ‘ফুটবল বিশ্বকাপে আমাদের এশিয়ার কোনো দেশ না খেললেও খেলার আমেজে কমতি নেই। খেলা তো খেলাই। বিনোদনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম খেলাধুলা। আমরা ৫ জন এসেছি আর্জেন্টিনার জার্সি কিনতে। জার্সি পরলে আলাদা অনুভূতি কাজ করে। সবাই জার্সি পরে একসাথে খেলা দেখবো, আনন্দ করবো।’

নিউমার্কেটের এক দোকানে জার্সি কিনতে এসেছেন আহম্মেদ ও অনিলা দম্পতি। আহম্মেদ জানান, আমি পর্তুগালের সমর্থক আর আমার স্ত্রী ব্রাজিলের। একই বাসায় আমরা ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, পর্তুগাল তিন দলের সমর্থকই আছি। সবার জন্য জার্সি কিনতে এসেছি। চার বছর পর পর বিশ্বকাপ পরিবারের সব সদস্যদের টিভির সামনে একত্রিত করে। যা ব্যস্ততার ভিড়ে সবসময় হয় না। ভালোই লাগে জার্সি পরে খেলা দেখতে, আলাদা উন্মাদনা কাজ করে। তাই কিনতে আসলাম।

এবারের জার্সি ক্রয়-বিক্রয় সম্পর্কে গণকপাড়া চৌধুরী মার্কেটের মালিক সমিতির সদস্য মোহাম্মদ সুমন জানান, ‘আমরা এই বিশ্বকাপকে মাথায় রেখে জার্সির পেছনে প্রায় দেড় কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। পোশাক বিক্রির তো মৌসুম থাকে। যেমন: শীতকাল, ঈদ, পূজা, বিশেষ কিছু দিবস এরকম যখন বেশি বিক্রি হয়। সেরকম একটা মৌসুম এখন বিশ্বকাপের সময়। আমরা তাই দেড় কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি যার মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকার জার্সি বিক্রি হয়েছে। সব জার্সি বিক্রি হবে বলেই আশা দেখতে পাচ্ছি।’

তিনি আরো জানান, জার্সিগুলো বঙ্গবাজার সহ ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারি মূল্যে এনে বিক্রি হচ্ছে। ২৫০- ১৮০০ টাকা পর্যন্ত মূল্যের জার্সি রয়েছে বাজারে। কাপড় ভিত্তিতে মূল্যের পার্থক্য বিদ্যমান।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে