খাদ্যগুদামে ২২৫ টন চালের ঘাটতি, কর্মকর্তা লাপাত্তা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২২; সময়: ১:৪৭ অপরাহ্ণ |
খাদ্যগুদামে ২২৫ টন চালের ঘাটতি, কর্মকর্তা লাপাত্তা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা খাদ্যগুদামে প্রায় ২২৫ টন চালের ঘাটতির অভিযোগে গুদামটি সিলগালা করেছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিভাগীয় আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মাহবুবুর রহমান, ফরিদপুর সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক) মো. তারিকুজ্জামান, মাদারীপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ইসমাইল হোসেন ও দায়িত্বপ্রাপ্ত চরভদ্রাসন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেজাউল আলম গুদামের নথিপত্র যাচাই করে গুদামটি সিলগালা করেন।

এ ঘটনার পর থেকেই উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন লাপাত্তা হয়েছেন। গুদামের চাল আত্মসাতের ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন প্রায় ২২৫ টন চাল আত্মসাৎ করার পর গত চার মাস ধরে ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিডি কার্ডের চাল ও ডিলারদের ১৫ টাকা কার্ডের চাল সরবরাহ বন্ধ করে দেন। এতে উপজেলার হতদরিদ্ররা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খাদ্যসহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গুদামের নথিপত্র যাচাই করতে গিয়ে সরকারি চাল আত্মসাতের ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়।

এদিকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক প্রশিক্ষণে দেশের বাইরে থাকায় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করছেন ফরিদপুর সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. তারিকুজ্জামান। তিনি বলেন, বিষয়টি আসলে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে আসার মতো ঘটনা। গুদামের নথিপত্র যাচাই করতে গিয়ে আমরা অনেক গরমিল পাই। যাচাইয়ের একপর্যায়ে বড় অঙ্কের চাল আত্মসাতের ঘটনা বেরিয়ে আসে।

খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. তারিকুজ্জামান আরও বলেন, গুদামের চাল আত্মসাতের ঘটনায় মাদারীপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ইসমাইল হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অপর দুজন সদস্য হলেন চরভদ্রাসন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেজাউল আলম ও ঢাকা বিভাগীয় অফিসের অপর এক কর্মকর্তা। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে না পাওয়া পর্যন্ত স্পষ্ট করে কিছু বলা যাবে না।

দায়িত্বপ্রাপ্ত চরভদ্রাসন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) রেজাউল আলম বলেন, আপাতত গুদামটি সিলগালা করে রাখা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে এ ঘটনার পর থেকে উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন গা ঢাকা দিয়েছেন। গত কয়েক দিন ধরে কয়েক দফায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় এবং গুদামে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

মোবাইল ফোনে গত কয়েক দিন ধরে সানোয়ার হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি। বৃহস্পতিবার বিকেলে একবার ফোনটি রিসিভ না করে ফোনের লাইনটি কেটে দেন।

চরভদ্রাসন উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ খান জানান, ওই ওসিএলএসডি গত চার মাস ধরে আমার ইউনিয়নের প্রায় ৮০ টন চাল সরবরাহ করেন নাই। একইভাবে উপজেলার চার ইউনিয়নের ২২৫ টন ভিজিডি কার্ডের চাল সে আত্মসাৎ করেছেন। আমি গত বুধবার রাতে ওসি এলএসডির নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডিলার জানান, উপজেলার সাতজন ডিলারের মধ্যে নির্দিষ্ট এক ডিলারের সঙ্গে আঁতাত করে ওসি এলএসডি প্রায় কোটি টাকার চাল আত্মসাৎ করে লুকিয়ে রয়েছেন।

চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিলা কবির ত্রপা জানান, খাদ্যগুদাম সিলগালার ব্যাপারে এখনো আমার কাছে কোনো চিঠি আসেনি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে