ফরিদপুরে ধরপাকড় সত্ত্বেও বড় জমায়েতের আশা বিএনপির

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২২; সময়: ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ |
ফরিদপুরে ধরপাকড় সত্ত্বেও বড় জমায়েতের আশা বিএনপির

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ফরিদপুরে বিভাগীয় গণসমাবেশ সামনে রেখে নেতাকর্মীদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা। তবে সব বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে সমাবেশ সফল করার জন্য তারা দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গণসমাবেশে লক্ষাধিক লোক যোগ দেবেন বলে তাদের আশা।

এদিকে, বিএনপির গণসমাবেশের আগের দিন শুক্রবার শহরে মিছিল ও সমাবেশের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে শহরে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এছাড়া গণসমাবেশের একদিন আগে শুক্রবার (১১ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে সমাবেশের দিন শনিবার (১২ নভেম্বর) রাত ৮টা পর্যন্ত পরিবহণ ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছেন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।

বুধবার ফরিদপুর প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা বলেন, গণসমাবেশ লক্ষ্য করে পুলিশ তাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার শুরু করেছে এবং শহরে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা মোটরসাইকেল মহড়া দেওয়ায় ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলেন, পরিবহণ ধর্মঘট ডাকা হলে বৃহস্পতিবারই সভাস্থলে ব্যাপক জনসমাগম হবে। সমাবেশে লক্ষাধিক লোকের জমায়েত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন সভাপতিত্ব করেন। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন গণসমাবেশের সমন্বয়কারী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ রিংকু। তারা বলেন, সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছে; মামলা দেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার ফরিদপুরে বিএনপির ৯ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা আরও বলেন, গণসমাবেশে লক্ষাধিক লোক যোগ দেবেন। সমাবেশস্থলে যেতে নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পরিবহণ ধর্মঘট ডেকে গণসমাবেশ রোধ করা যাবে না। সব বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে সমাবেশ সফল করার জন্য তারা দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব একেএম কিবরিয়া বলেন, মঙ্গলবার আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ ভয়ভীতি দেখিয়েছে। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। এছাড়া যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেল নিয়ে মহল্লায় মহল্লায় মহড়া দিয়ে ভীতির সৃষ্টি করছে। আমরা এসব কার্যকলাপের নিন্দা জানাই।

সংবাদ সম্মেলনে ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, সরকার অন্য সব গণসমাবেশ বানচাল করতে যেসব অপকৌশল নিয়েছিল ফরিদপুরেও সেই কৌশল নিয়েছে। পুলিশ বাহিনী ব্যবহার করে সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানি করার চেষ্টা করছে। এরই অংশ হিসাবে ফরিদপুর শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। এ পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

নেতাকর্মীদের বাড়িতে না পেয়ে তাদের বাবা-মা ও স্বজনদের সঙ্গে পুলিশ অসৌজন্যমূলক আচরণ করছে। অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, আমরা গণসমাবেশ করার জন্য শহরের চারটি স্থানের জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু প্রশাসন সেগুলোর কোনোটির অনুমোদন না দিয়ে শহর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে কোমরপুর আবদুল আজিজ ইনস্টিটিউশন মাঠে সমাবেশ করার জন্য অনুমতি দিয়েছে। এরপর সমাবেশ বানচাল করার জন্য নানা অপকৌশল করছে প্রশাসন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহিরুল হক, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ, সাবেক এমপি ইয়াসমিন আরা হক, জেলা বিএনপি আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা ও সদস্য সচিব একে এম কিবরিয়া স্বপন, যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুল হাসান পিংকু প্রমুখ। শহরতলীর আবদুল আজিজ ইনস্টিটিউশন মাঠে অনুষ্ঠেয় গণসমাবেশের মঞ্চ তৈরিসহ আনুষঙ্গিক কাজ পুরোদমে চলছে।

এদিকে, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ ইসতিয়াক আরিফ বলেন, শুক্রবার শহরে আমরা (আওয়ামী লীগ) মিছিল-সমাবেশ করব। বিএনপির সন্ত্রাস, ভাঙচুর, নৈরাজ্য ও দেশকে অস্থিতিশীল করার পরিবেশ সৃষ্টির প্রতিবাদে সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে।

শহরের শেখ রাসেল স্কয়ার থেকে শুক্রবার বেলা ৩টায় মিছিল শুরু হয়ে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ প্রাঙ্গণে গিয়ে মিছিল শেষ হবে। সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতারা বক্তব্য দেবেন। তিনি আরও বলেন, আমরা শুক্রবার সমাবেশ করব। আর বিএনপির সমাবেশ তো একদিন পর। আমাদের মিছিল মূলত শান্তির বার্তা দেওয়ার জন্য। বিএনপির নৈরাজ্যের কারণে জনমনে যাতে ভীতি না হয় সেজন্যই মিছিল করা হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে