রাজশাহীর সেই ইউপি চেয়ারম্যানের দুই স্ত্রীই পরাজিত

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২২; সময়: ৯:৪৭ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীর সেই ইউপি চেয়ারম্যানের দুই স্ত্রীই পরাজিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে বাগমারার মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের দুই স্ত্রী প্রার্থী হয়েছিলেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান। তবে ভোটযুদ্ধে তাঁরা দুজনই পরাজিত হয়েছেন।

ওই ইউপি চেয়ারম্যানের নাম রেজাউল হক। তিনি আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য এনামুল হকের ছোট ভাই। রেজাউলের দুই স্ত্রী- নাছিমা বেগম ও ফিরোজা খাতুন। তালাক দেওয়ার পর প্রথম স্ত্রী নাছিমা মাড়িয়া ইউনিয়নের শিকদারী এলাকায় রেজাউলের নিজস্ব বাড়িতে এবং দ্বিতীয় স্ত্রী ফিরোজা বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জের একটি ভাড়া বাড়িতে থেকে নির্বাচনী প্রচারণা চালান।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, সোমবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ২ নম্বর ওয়ার্ডে (বাগমারা, মোহনপুর ও দুর্গাপুর) মোট প্রার্থী ছিলেন সাতজন। নাছিমা ও ফিরোজা ছাড়াও অন্য পাঁচ প্রার্থী হলেন- পারুল বিবি, সুলতানা পারভীন, রাবেয়া খাতুন, লাল বানু ও নারগিস বিবি।

নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফলে দেখা গেছে, নাছিমা বেগম বই প্রতীকে ৩৭ ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে ফিরোজা পেয়েছেন ৩৩ ভোট। তবে তাঁদের কেউই নির্বাচনে জিততে পারেননি।

২ নম্বর ওয়ার্ডে (বাগমারা, মোহনপুর ও দুর্গাপুর) জয়ী হয়েছেন পাশের দুর্গাপুর উপজেলার সুলতানা পারভীন রিনা। তিনি লাটিম প্রতীকে ১৩৫ ভোট পেয়েছেন।

প্রচারণার সময় ফিরোজার চেয়ে বেশি ভোট পেয়ে নিজের যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা প্রমাণ করার কথা বলেছিলেন নাছিমা বেগম।

তিনি মঙ্গলবার বলেন, তিনি একাই প্রচারণা চালিয়েছেন। তাঁকে ভোট দেওয়ায় তিনি ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এটাই তাঁর প্রথম নির্বাচন। নির্বাচন থেকে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন তিনি। কারও প্রতি তাঁর কোনো অভিযোগ নেই। তিনি তাঁর বাড়িতেই অবস্থান করছেন বলে জানান।

এ বিষয়ে ফিরোজা খাতুনের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর স্বামী ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল হক বলেন, কিছু জনপ্রতিনিধি কথা রাখেননি। এরপরও কোনো অভিযোগ নেই। অনেকে ফোন করে কথা না রাখার বিষয়ে অনুতপ্ত হয়েছেন। প্রথম স্ত্রী তাঁর কিছু ভোটের ক্ষতি করেছেন।

প্রথম স্ত্রীকে আবারও ফিরিয়ে নেবেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁকে নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। তবে সন্তানেরা সম্পত্তি ভোগ করবে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে প্রথম থেকে প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন নাছিমা। পরে রেজাউল তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ফিরোজার পক্ষে প্রচারণা শুরু করেন। ১৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নাছিমা ও ফিরোজা দুজনেই সক্রিয় প্রচারণা শুরু করেন।

এর মধ্যে রেজাউল নাছিমাকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য বলেন। কিন্তু নাছিমা সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর তাঁকে তালাক দেন রেজাউল। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগে দুজনের কাউকেই সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়নি বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে