দানের গরু গোপনে বিক্রির অভিযোগ এতিমখানার প্রধানের বিরুদ্ধে

প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২২; সময়: ৮:৪৩ অপরাহ্ণ |
দানের গরু গোপনে বিক্রির অভিযোগ এতিমখানার প্রধানের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক, জয়পুরহাট : ৭ বছর পূর্বে কঠিন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায় আল্লাহর রাস্তায় একটি গরু দান করতে নিয়ত করেন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার রামভদ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা কসিম উদ্দিন নামে এক ব্যাক্তি। নিয়ত অনুযায়ী তিনি একই গ্রামে অবস্থিত রামভদ্রপুর এতিমখানা মাদ্রাসার ছাত্রদের জবাই করে খাওয়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানের হাতে একটি গরু দিয়ে আসেন।

দীর্ঘদিন সেই গরুটি মাদ্রাসার ছাত্ররা লালণ-পালনের পর জবাই করে খাওয়া তো দুরের কথা, সেই গরুটি বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের বিরুদ্ধে। অথচ প্রতিষ্ঠান প্রধান বলছেন ওই গরু সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। তাই তো কথায় বলে, চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী।

দাতা ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, পাঁচবিবি উপজেলার সীমান্তবর্তী রামভদ্রপুর দারুসসুন্নাহ এবতেদ্বায়ী হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা এলাকার জনসাধারনওে সাহায্যের অর্থে দীর্ঘদিন ধওে পরিচালনা হয়ে আসছে। এলাকার অনেক দানবীর ওই প্রতিষ্ঠানে অর্থ দিয়ে সহযোগীতা করেন। প্রতিষ্ঠানটিতে বিভিন্ন বয়সের শতাধীকেরও বেশী ছাত্র রয়েছে। এরই মধ্যে কসিম উদ্দিন নামে এক ব্যাক্তি কঠিন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায় এতিমখানার ছাত্রদের জবাই করে খাওয়ার জন্য একটি ছোট গরু দান করেন। সে সময় গরুটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান আব্দুল খালেক বুঝে নেন। এখন বলছেন ওই গরুর বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। দাতা ও এলাকাবাসীর দাবী, তাহলে গরুটি গেল কোথায়। হয় গরুটি বিক্রি করতে হয়েছে, তা না হলে গরুটি চুরি হয়ে গেছে। অথচ এতিমখানার ছাত্ররা বলছেন ওই গরুটি আব্দুল খালেক হুজুর বিক্রি করেছেন।

গরু দানকারী কসিম উদ্দীন বলেন, কঠিন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমি একটি গরু মানত করি। অনেক চিন্তা ভাবনা করে সেই গরুটি ছাত্রদের জবাই কওে খাওয়ার জন্য আমাদের গ্রামের এতিমখানায় দিয়ে আসি। এখন শুনছি ওই গরু কাউকে না বলে আব্দুল খালেক হুজুর বিক্রি করে সেই টাকা নিজেই গায়েব করেছে। আসলে আমি গরুটি ছাত্রদের জবাই কওে খাওয়ার জন্য দিয়েছি, কাউকে বিক্রি করতে দেইনি।

এতিমখানার শিক্ষক আবু হোসেন বলেন, আমি এবং শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক ওই গরু দেওয়ার দিনে প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম। গরুটি ছোট হওয়ায় তখন এতিমখানার রান্নার কাজে নিয়োজিত জরিনা বেগমকে লালণ-পালন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এখন আর আমি ওই প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করিনা। শুনতে পাচ্ছি ওই গরুটি নাকি আব্দুল খালেক হুজুর গোপনে বিক্রি করেছে।

শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গরুটি জরিনাকে দেওয়ার বিষয়ে আমিও জানি। এরপর কি হয়েছে তা আর জানিনা। এ ব্যাপাওে আব্দুল খালেক হুজুর এবং জরিনাই ভালো বলতে পারবেন।

রান্নার কাজে নিয়োজিত জরিনা বেগম বলেন, গরুটি লালণ-পালনের জন্য আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এটাস ত্য। তবে ওই গরুটি বাড়ি নিয়ে আসার পর আমার ছেলে ফেরত দিয়ে আসতে বলে। তখনআমি সাথে সাথে গরুটি খালেক হুজুরকে দিয়ে আসি।

অভিযুক্ত এতিমখানার প্রধান আব্দুল খালেক বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সব বলা হচ্ছে তা মিথ্যা। ওই গরু দুটি বাচ্চা দিয়েছে। এর মধ্যে জরিনা একটি কুরবানী দিয়েছে। মুল গরুর সাথে আরও একটি বাচ্চা জরিনার বাড়ীতেই আছে।
এতিমখানা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউনুস আলী বলেন, যখন গরুটি কসিম উদ্দিন এতিমখানায় দিয়েছিল তখন আমি সভাপতি ছিলাম না। এখন শুনতে পাচ্ছি দানের গরু গোপনে বিক্রি করা হয়েছে। এ বিষয়ে মাদ্রাসায় তিন সদস্যেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা রির্পোট দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে