রাণীনগরের যুগ্নীতলা মন্দির ও শ্মশান ঘাট নানান সমস্যায় জর্জরিত

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২২; সময়: ৩:০৭ অপরাহ্ণ |
রাণীনগরের যুগ্নীতলা মন্দির ও শ্মশান ঘাট নানান সমস্যায় জর্জরিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাণীনগর : সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে প্রাচীনতম নওগাঁর রাণীনগরের ঘাটাগন যুগ্নীতলা মন্দির ও মহাশ্মশান ঘাট নানান সম্যসায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ বছর ধরে সংস্কার কাজ না হওয়ায় একদিকে যেমন যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক হয়ে পরেছে,অন্য দিকে পূজা,ধর্মীয় রিতি-নীতি পালন এবং মৃত দেহ দাহ করতে গিয়ে নানান সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে এই সম্প্রদায়কে।

জানা গেছে,উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৪ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তর কণে নাগর নদীর পাড়ে উপজেলার শেষ সিমানা বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার সীমান্ত ঘেষা ঘাটাগন গ্রামের যুগ্নীতলা মহাশ্বশ্মান মন্দির অবস্থিত। হঠাৎ করেই ৯০ দশকের শেষ দিকে জমির কাগজপত্র নিয়ে কিছু বিরোধ তৈরি হলে ওই সময় ধর্মীয় কর্মকান্ড স্বাভাবিক রাখতে একই গ্রামের অনিল চৌধুরী, শষ্ঠা চন্দ্র, বরেন্দ্রনাথ, গোপাল চন্দ্র বেশকিছু জমি মন্দিরের নামে দান করে দেন। সেই থেকেই নির্বিঘ্নে মৃতদেহ দাহ করা এবং পূজা অর্চনা করে আসছেন। তবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারিভাবে তেমন সহযোগীতা না পাওয়ায় দিনদিন মন্দিরটি তার সৌন্দর্য হারাতে বসেছে।

বছরের প্রতিটি পূজা-পর্বন অনুষ্ঠানে ব্যাপক লোকের সমাগম হলেও সার্বিক ব্যবস্থাপনা ভুঙ্গুর হওয়ার কারণে পূর্ণার্থীরা এসে নানা ভোগান্তির কবলে পড়েন। মহাদেবের পূজা ও বিশেষ করে এই মন্দিরে সুন্যাস ঠাকুরের পূজা প্রতি বছরের পৌষ মাসের ৪ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়।

এই পূজায় ওই এলাকার লোকজনসহ পার্শ্ববতি নন্দীগ্রাম এবং আদমদীঘি উপজেলার সনাতন ধর্মের নারী-পুরুষদের ঢল নামে।সবার সাথে পূজার আনন্দ ভাগাভাগি করার লক্ষ্যে নানান উৎসবে মেতে উঠেন তারা। কিন্তু পিছু ছাড়ে না তাদের ভোগান্তি। ঘাটাগন গ্রামের মোড় থেকে মন্দির পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার মেঠো পথে বর্ষা মৌসুমে কাঁদা-পানিতে একাকার হয়ে যায়। ফলে অনেক দর্শনার্থীরাই ধীরে ধীরে এখান থেকে দিনদিন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এ ছাড়া স্যানিটেশন ব্যবস্থা এবং বসার মত ভাল পরিবেশ না থাকায় এবং মন্দিরের টিনের চালা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চরম দূর্ভোগে পরেছেন তারা।

এলাকাবাসীর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় উৎসব গুলো পরিচালিত হলেও আর্থিক সংকটের কারণে তা থমকে যেতে বসেছে। জরুরি ভিত্তিতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি,মন্দির সংরক্ষণ এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নের একান্ত প্রয়োজন বলে দাবি করেছেন মন্দির কমিটির লোকজন।

কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রবীন্দ্রনাথ রায় জানান,প্রাচীনতম এই যুগ্নীতলা মন্দির ও মহাশ্মশন দীর্ঘ দিন ধরে অবহেলিত। দীর্ঘ ১৫ বছর পর গত ২০১৯সালে ধর্মমন্ত্রনায়লয়ের অধীনে ২৫হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছিলাম। এর পর আর কোন বরাদ্দ পাইনি। বর্তমানে মন্দিরের টিনের চালা নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ধর্মীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করতে নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। বিশেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা,স্যানিটেশন ও মন্দির সংরক্ষণের কাজ দীর্ঘ দিন ধরে করতে না পারায় আগত পূর্ণার্থীদের অনেক অসুবিধা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মন্দিরটির উন্নয়নে ব্যবস্থা করলে আমরা সনাতন ধর্মের লোকজনরা অনেক উপকৃত হবো।

এ ব্যাপারে মন্দিরটির উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন হেলাল এর প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

একডালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ইঞ্জি: মো: শাহজাহান আলী বলেন,মন্দির ও মহাশ্মশান উন্নয়নে আগামী বরাদ্দ থেকে সহযোগিতা করতে চেষ্টা করা হবে।

স্থানীয় এমপি আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, যুগ্নীতলা মন্দির ও মহাশ্মশানঘাট উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে